মাংস উৎপাদনকারী গরুর জাত এবং উন্নত জাতের গরু চেনার উপায়

মাংস উৎপাদনকারী গরুর জাত সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখা মোটাতাজাকরণ খামার ব্যবস্থাপনার অন্যতম শর্ত। আধুনিক যুগে বিজ্ঞানের বদৌলতে অনেক জাতের গরু পাওয়া যায় এবং এক একটি জাত এক এক রকম বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। লাভজনক খামার ব্যবস্থাপনায় মাংস উৎপাদনের জন্য উন্নত জাতের গরু চেনার উপায় এবং কোন জাতের গরু সবচেয়ে উত্তম এ বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা দিতে এই আর্টিকেলটি রচিত।
মাংস-উৎপাদনকারী-গরুর-জাত
একটি লাভজনক ডেইরী ফার্মের মূল ভিত্তি হচ্ছে গাভী ও ষাঁড়। তাই বাণিজ্যিক খামারের জন্য গাভী ও ষাঁড়ের সঠিক মূল্যায়ন অতি প্রয়োজন। বৈজ্ঞানিক উপায়ে পশুর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য পরীক্ষা নিরিক্ষা করে পশু নির্বাচন ও মূল্যায়ণ করতে গরুর প্রতিটি অঙ্গ সম্পর্কেও জ্ঞান রাখা আবশ্যক।

ভূমিকা

গরুর জাত বলতে কোন একটি প্রজাতির ভিন্ন ভিন্ন কতিপয় সুপ্রতিষ্ঠিত ও সতন্ত্র বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন গরুর দলকে বুঝায়। গরুর এই বৈশিষ্ট্যগুলো বংশানুক্রমে একইরূপে সন্তান-সন্ততির মধ্যেও প্রকাশ পায়। গরু নির্বাচনের জন্য বংশ পরিচয় জানা গুরুত্বপূর্ণ। তাই বংশ পরিচয় জানার লক্ষ্যে কোন ফার্মে বাচ্চা জন্মানোর পরপরই গরুর বংশ পরিচয় রেকর্ড করা হয়। খামার ব্যবস্থাপনায় সফল হতে খামারীকে অবশ্যই গরু ক্রয়ের সময় উক্ত রেকর্ড বই দেখে ক্রয় করা উচিত।
বিশ্বে এ যাবৎ ২৫০টিরও অধিক মাংস উৎপাদনকারী জাতের গরুর সন্ধান মিলেছে। তবে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত অধিক মাংস উৎপাদনশীল গরুর কোন নিজস্ব খাঁটি জাত নেই। তবুও ১৯৯৮ সালের FAO এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে ১১তম অবস্থানে আছে এবং এশিয়ার মধ্যে আছে ৪র্থ স্থানে।

সংকর জাত গরু কাকে বলে

গরুর সংকর জাত হলো বিজ্ঞানের গবেষণালব্ধ ফল। জীববিজ্ঞানের ভাষায়, অধিক ফলনশীল বিদেশী কোন জাতের গরুর সাথে দেশী জাতের গরুর আন্তঃপ্রজননের ফলে সৃষ্ট নতুন জাতকে বলা হয় সংকর জাত। আর কৃত্রিম উপায়ে গরুর এই প্রজনন প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় সংকরায়ন। দুটি ভিন্ন প্রজাতি থেকে তাদের উৎপত্তি হলেও সংকরায়নের ফলে সৃষ্ট নতুন জাতটি কিছু সতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হয়। কখনও কখনও তারা নিজ উৎসের চেয়েও বেশি উৎপাদনশীল এবং মানসম্পন্ন হয়ে থাকে।
যেহেতু বাংলাদেশে অধিক উৎপাদনশীল দেশী কোন জাত নেই তাই পশু পালন ও খামার ব্যবস্থাপনায় সংকর জাতের গরু এক প্রকার আশীর্বাদস্বরূপ। সংকর জাতের গরুর আবিস্কার না হলে বাংলাদেশে দুধ ও মাংসের চাহিদার বিশাল একটা অংশ ঘাটতি থেকে যেত এবং সাধারণ মানুষের নিকট তা ক্রয়সীমার বাহিরে থাকতো।

গরুর জাত কত প্রকার?

কিছু সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে খামারীরা পশু পালন ও খামার ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে বিনিয়োগ করেন। তাদের এই উদ্দেশ্যের উপর ভিত্তি করে গরুর জাতকে চারটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে, যথা-
২। মাংস উৎপাদনকারী জাত (Beef Breed)
৩। দুধ ও মাংসের দ্বৈত জাত (Dual Purpose Breed)
৪। ভারবাহী জাত (Draught Breed)
এই আর্টিকেলটি রচিত হয়েছে ২নং এ উল্লেখিত মাংস উৎপাদনকারী গরুর জাত সম্পর্কে।

কয়েকটি উন্নত জাতের গরুর নাম / উন্নত জাতের গরুর বীজের নাম

নিচে কয়েকটি উন্নত জাতের গরুর নাম উল্লেখ করা হলো:
  • দুধ উৎপাদনকারী জাত (Dairy Breed): আয়ারসায়ার (Ayrshire), ব্রাউন সুইস (Brown Swiss), গুয়ারনসি (Guernsey), হলস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান (Holestein-Friesian), জার্সি (Jersey), শাহিওয়াল (Shahiwal), সিন্ধি (Sindhi), ডাচ বেল্টেড (Dutch Belted), ফ্রেঞ্চ কানাডিয়ান (French-Canadian), কেরি (Kerry), মিল্কিং শর্টহর্ন (Milking Shorthorn)
  • মাংস উৎপাদনকারী জাত (Beef Breed): অ্যাঙ্গাস (Angus), ব্রাহমান (Brahman), চারোলায়াস (Charolais), ডেভন (Devon), ডেক্সটার (Dexter), হেরিফোর্ড (Hereford)
  • দুধ ও মাংসের দ্বৈত জাত (Dual Purpose Breed): গির (Gir), হারিয়ানা (Hariana), কানকৃজ (Kankrej), অনগোল (Ongole), থারপারকার (Tharparkar), ডিওনি (Deoni)
  • ভারবাহী জাত (Draught Breed): হাল্লিকার (Hallikar), অমৃতমহল (Amritmahal), কানগাইয়াম (Kangayam), মালভি (Malvi), সিরি (Siri), খিলাড়ী (Khillari), বঙ্গদেশীয় গরু (Bengal Cattle)
  • কিছু নতুন জাত: কারান সুইস্‌ (karan Swiss), সোনাদিনি (Sunadini), কারান ফ্রাইজ (Karan Fries)

মাংস উৎপাদনকারী গরুর জাত

মাংস উৎপাদনকারী গরুর জাত কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য বহন করে, যেমন-
  • তাড়াতাড়ি পূর্ণবয়স্কতা লাভ করে।
  • তাড়াতাড়ি মোটা হবে।
  • মাংস উৎপাদনকারী গরুর শরীর দেখতে অনেকটা গোলাকার।
  • এদের মাংসের গুণগত মান হবে খুবই ভালো।
  • এ জাতের গরুর মাংসের তন্তু হবে চিকন ও কোমল।
  • জবাই করার পর এদের সম্পূর্ণ শরীরের প্রায় ৭০% মাংস পাওয়া যাবে।
নিচে মাংস উৎপাদনকারী গরুর জাত এবং তাদের উৎপত্তি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
  • অ্যাঙ্গাস (Angus): স্কটল্যান্ডে (Scotland), আবারদিন (Aberdeen) এর উত্তর পূর্ব শহরে, অ্যাঙ্গাস (Angus), কিনকারদিন (Kincardine) এবং ফোরফার (Forfar) এ এর উৎপত্তি।
  • ব্রাহমান (Brahman): দক্ষিণ পশ্চিম আমেরিকার (South Western USA) উপসাগরীয় অঞ্চলে ১৮৫৪ থেকে ১৯২৬ সালের মধ্যে এদের উৎপত্তি। এদের উৎপত্তি হয়েছে কানকৃজ (Kankrej), অনগোল (Ongole), গির (Gir), রিশনা ভ্যালি (Rishna Valley), হারিয়ানা (Haryana), এবং ভাগনারি (Bjhagnari) জাত থেকে। ব্রাহমান ষাঁড় জাতীয় গরু রপ্তানি করা হয় ক্যারিবিয়ান (Caribbean) দেশের মধ্যে, মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকায় এবং অষ্ট্রেলিয়া প্যাসিফিক (Pacific Island), ফিলিপাইন (Philippienes)-এ। এ জাতের গরু অনেকের নিকট আমেরিকার ব্রাহমান নামেও পরিচিত।
  • চারোলায়াস (Charolais): ফ্রান্স (France), চারোলেস (Charolees) প্রদেশে, মধ্য ফ্রান্সে এর উৎপত্তি। পরে নিভারনিয়াস (Nivernias) প্রদেশেও এদের পাওয়া যায়।
  • ডেভন (Devon): এরা অতি পুরনো জাতের গরু এবং এদের উৎপত্তিস্থল ডেভনসায়ার (Devonshire) এবং ইংল্যান্ড। এদের প্রথম আমেরিকা নিয়ে আসা হয় ১৮১৭ সালে।
  • ডেক্সটার (Dexter): ডেক্সটার এর উৎপত্তি দক্ষিণ আয়ারল্যান্ডে (Southern Ireland). এদের আমেরিকায় প্রথম নিয়ে আসা হয় ১৯০৫ সালে।
  • হেরিফোর্ড (Hereford): ইংল্যান্ডের হেরিফোর্ড শহরে এর উৎপত্তি।

উন্নত জাতের গরু চেনার উপায় / গরুর জাত চেনার উপায়

উপরে উল্লেখিত প্রতিটি গরুর কিছু সতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা উন্নত জাতের গরু চেনার উপায় হিসেবে বিবেচ্য হতে পারে। গরুর দৈহিক কাঠামো, বর্ণ এবং বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করেই গরুর জাত চেনা যায়। তাই উন্নত জাতের গরুর জাত সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা নিতে গরুর প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান রাখা আবশ্যক। নিচে উন্নত জাতের গরু চেনার উপায় সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো:

অ্যাঙ্গাস (Angus) জাতের গরু চেনার উপায়

শারীরিক বৈশিষ্ট্য:
  • কালো ও লাল এই দুইটি বর্ণের অ্যাঙ্গাস গরুর জাত রয়েছে।
  • এদের মাথার উপরিভাগের মাঝখানটা উঁচু
  • তুলনামূলকভাবে এদের চামড়া এবং লোম কোমল।
  • এদের দেহ নলাকৃতির হয়ে থাকে।
মাংস উৎপাদন ক্ষমতা:
  • প্রতিদিন এ গরুর মাংস বৃদ্ধির হার গড়ে ১.২৬ কেজি
  • ড্রেসিং কারকাসের ওজন গড়ে প্রায় ২৬৭ কেজি।
  • তবে সঠিক পরিচর্যা করলে এদের ওজন সর্বোচ্চ ৮৫০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।

ব্রাহমান (Brahman) জাতের গরু চেনার উপায়

শারীরিক বৈশিষ্ট্য:
  • গায়ের বর্ণ সাধারণত উজ্জ্বল ধূসর হয়। ক্ষেত্রবিশেষে লাল এবং কালোও হতে পারে।
  • পূর্ণবয়স্ক ষাঁড়ের গায়ের বর্ণ গাঢ় হয়, বিশেষ করে গলায়, কাঁধে, উরুর নিচে এবং পেটের গর্ততে।
  • এদের দেহ দীর্ঘ এবং লম্বা ও মধ্যম হওয়া, লম্বা থেকে মধ্যম চওড়ার পা এবং পেছনের অংশ সোজা।
  • বাছুর জন্মের সময় লাল বর্ণের মনে হয় যা কিছুদিনের মধ্যে ধূসর বর্ণ ধারণ করে।
  • এদের চামড়া ঢিলেঢালা, কোমল এবং মধ্যম পুরুত্বের।
  • মাথা লম্বা, কান দোদুল্যমান এবং গাভীর শিং ষাঁড়ের থেকে চিকন।
  • ব্রাহমান ষাঁড়ের কুঁজ বড় হয় কিন্তু গাভীতে তুলনামূলক ছোট হয়।
  • গলকম্বল বড়, কিন্তু নাভীর চামড়া এবং তলপেটের চামড়া খুব দোদুল্যমান হয়।
মাংস উৎপাদন ক্ষমতা:
  • এরা অধিক মাংস উৎপাদনকারী জাত, যা অল্প এবং শুকনো ঘাসে অথবা কম খাবারে অধিক মাংস উৎপাদন করে। এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশী।
  • এ জাতীয় ষাড় গরুর ওজন ৮০০ থেকে ১০০০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। গাভীর ওজন হতে পারে ৫০০ থেকে ১০০০ কেজি।

চারোলায়াস (Charolais) জাতের গরু চেনার উপায়

শারীরিক বৈশিষ্ট্য:
  • এদের চামড়া জন্মের সময় উজ্জ্বল তামাটে বর্ণের দেখায় এবং ১০ সপ্তাহের মধ্যে পরিবর্তিত হয়ে দুধের সরের মত সাদা হয়ে যায়।
  • এদের মাথায় শিং নেই এবং পাটল বর্ণ (পীত ও লোহিত বর্ণের মিশ্রিত রূপ) বিশিষ্ট চামড়া।
  • এদের দেহ অনেক বড়।
  • এদের মাংস লাল বর্ণের হয়ে থাকে।
মাংস উৎপাদন ক্ষমতা:
  • দৈনিক মাংস বৃদ্ধির হার গড়ে ১.২৫ কেজি।
  • ড্রেসিং কারকাসের ওজন প্রায় ৩৬০ কেজি।
  • ফ্যাটের পুরুত্ব ০.৩৭ ইঞ্চি।
  • এ জাতের গাভীর গর্ভধারণের হার ৮১%।

ডেভন (Devon) জাতের গরু চেনার উপায়

শারীরিক বৈশিষ্ট্য:
  • এদের দেহ মধ্যম আকৃতির।
  • এরা অতি কষ্টসহিষ্ণু এবং দীর্ঘজীবি।
  • এরা সাধারণত হালকা লাল বর্ণ থেকে গাঢ় বাদামী বর্ণের হয়ে থাকে। কখনও কখনও গাঢ় লাল বর্ণের মধ্যে নানা বর্ণের চিত্র বিচিত্র দাগ থাকে।
  • এদের ওলানে এবং লেজের প্রান্তে সাদা দাগ থাকে।
  • এদের রয়েছে বিশেষ ধরনের উজ্জ্বল বর্ণের শিং।
  • শিংগুলো কিছুটা উপরে উঠে দুই শিং এর মধবর্তী স্থানে বেঁকে গেছে এবং শেষ প্রান্তটা গাঢ় বর্ণের।
  • এরা দেখতে অনেকটা হেরিফোর্ড এবং সাসেক্স জাতের মত।
মাংস উৎপাদন ক্ষমতা:
  • এ জাতের গরু দুধ এবং মাংস উৎপাদন উভয় প্রকল্পে খামারজাত করা যেতে পারে।
  • ভারবহনের কাজেও এদের ব্যবহার করা যেতে পারে।

ডেক্সটার (Dexter) জাতের গরু চেনার উপায়

শারীরিক বৈশিষ্ট্য:
  • এরা প্রধানত কালো বর্ণের হয়ে থাকে, কিন্তু ওলানের দিকে সাদা বর্ণ দেখা যায়।
  • এরা কখনও কখনও লাল অথবা পিঙ্গল বর্ণেরও হয়ে থাকে।
  • এদের পাগুলো খুবই ছোট।
মাংস উৎপাদন ক্ষমতা:
  • এদেরকেও দুধ ও মাংস উৎপাদনের উদ্দেশ্যে খামার জাত করা হয়।
  • ভারবহনের কাজেও এরা ব্যবহৃত হতে পারে।
  • পূর্ণবয়স্কে এদের উচ্চতা ৪২ ইঞ্চি।
  • একটি পূর্ণবয়স্ক ডেক্সটার জাতের গরুর ওজন ৩৫০ থেকে ৪০০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।

হেরিফোর্ড (Hereford) জাতের গরু চেনার উপায়

শারীরিক বৈশিষ্ট্য:
  • এদের শরীর লাল বর্ণের যার মধ্যে সাদা দাগ থাকে।
  • মুখমন্ডল সাদা এবং পেটের গর্তের নিচে, মাথার উপরে, লেজের লোমগুচ্ছ, বুকে এবং হাঁটুর হক জয়েন্টের নিচে সাদা দাগ থাকে।
  • এদের মাথায় শিং নেই।
  • এদের সাদা মুখমন্ডলকে ট্রেড চিহ্ন দেওয়া হয়েছে।
মাংস উৎপাদন ক্ষমতা:
  • এদের দৈনিক মাংস বৃদ্ধির হার গড়ে ১.২৫ কেজি।
  • ড্রেসিং কারকাসের ওজন প্রায় ৩২৬ কেজি।
  • এদের ফ্যাটের পুরুত্ব ০.৬২ ইঞ্চি।
  • এ জাতের গাভীর গর্ভধারণের হার ৮৭.৯%।

কোন জাতের গরু মাংসের জন্য ভালো?

উপরে উল্লেখিত প্রতিটি জাতই কমবেশি মাংস উৎপাদনের জন্য ভালো। এদের মধ্যে অ্যাঙ্গাস জাতের গরু মাংস গুণেমানে অনন্য। অ্যাঙ্গাস জাতের গরু মোট ওজনের ৫০ শতাংস সলিড মাংস সরবরাহে সক্ষম। এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি এবং শারীরিকভাবে শক্তিশালী হওয়ায় এ জাতের গরুকে চারণভূমিতে পালন করা যায়। ফলে গো-খাদ্য অনেকটা কম লাগে এবং মাংসও সুস্বাদু হয়ে থাকে। এছাড়াও বাংলাদেশে ব্রাহমান জাতের গরুও মাংস উৎপাদনের জন্য খামারীদের নিকট খুবই জনপ্রিয় একটি জাত।

লেখকের মন্তব্য

মাংস উৎপাদনকারী গরুর জাত নিয়ে গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প শুরু করে সুষম খাদ্য সরবরাহ এবং সময়মতো সঠিক মাত্রায় ভিটামিন জাতীয় ঔষধ সরবরাহ করতে পারলে প্রকল্প সফলতার সাথে বাস্তবায়ন সম্ভব। গরু ক্রয়, সুষম খাদ্য সরবরাহ ও সময়মতো প্রয়োজনীয় ঔষধ নিশ্চিত করতে খামারীকে অবশ্যই খামার ব্যবস্থাপনার প্রাথমিক ধারণার পাশাপাশি একজন বিশেষজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ানের সাথে যোগাযোগ রাখা উচিত।

আশা করি একজন খামারীকে মাংস উৎপাদনকারী গরুর জাত সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দিতে এই আর্টিকেলটি সহায়ক হবে। তবুও এতে কোন প্রকার তথ্য সংযোজন কিংবা বিয়োজনের প্রয়োজন হলে আপনার সুচিন্তিত মতামত কমেন্টবক্সে প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ রইলো।


তথ্যসূত্র: ড. মো. জালাল উদ্দিন সরদার, অধ্যাপক, এনিমেল হাজবেন্ড্রী এণ্ড ভেটেরিনারি সায়েন্স বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী কর্তৃক রচিত এবং নূর পাবলিকেশন্স, বাংলাবাজার, ঢাকা কর্তৃক প্রকাশিত “লাভজনক পশু পালন ও খামার ব্যবস্থাপনা” বই থেকে নেওয়া। খামার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান অর্জন করতে বইটি আপনার সংরক্ষণে রাখতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করেনি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনার সুচিন্তিত মতামত দিয়ে MrDorpon কে আরও সমৃদ্ধ করতে সহযোগিতা করুন। আপনার মতামতটি রিভিউর পর Published করা হবে।

comment url