তিন মাসে গরু মোটাতাজাকরণ ও গরুর সুষম খাদ্য ব্যবস্থাপনা

তিন মাসে গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প শুরু করে আপনিও নিজেকে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে পারেন, হতে পারেন একজন সফল উদ্যোক্তা। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প খুবই লাভজনক একটি পেশা। অল্প সময়ে ফিডব্যাক পাওয়া যায় বিধায় প্রতিনিয়ত ব্যাপকভাবে উদ্যোক্তারা এই প্রকল্পে ধাবিত হচ্ছে। কিন্তু গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্পের সফলতা নির্ভর করে গরুর সুষম খাদ্য ব্যবস্থাপনার উপর যা অনেকেরই অজানা।
তিন-মাসে-গরু-মোটাতাজাকরণ
বাংলাদেশে মাংসের মোট চাহিদার ১০ ভাগ পূরণ হয় পশুসম্পদ থেকে। তাই বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ খামার ব্যবস্থাপনা অপার সম্ভাবনাময় কর্মসংস্থান। তিন মাসে গরু মোটাতাজাকরণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ পূর্বক বাণিজ্যিকভাবে বৃহৎ আকারে কিংবা বসত বাড়িতেও দুই একটি গরু দিয়ে ছোট্ট পরিসরে যে কেউ শুরু করতে পারে এই প্রকল্প।

ভূমিকা

বাড়ন্ত এঁড়ে বাছুর বা এঁড়ে গরুকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিশেষ করে ০৩-০৬ মাসের মধ্যে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উন্নত ব্যবস্থাপনা এবং বিশেষ ধরনের খাবার খাওয়ানোর মাধ্যমে ঐ গরুর শরীরে অধিক পরিমাণ মাংস বৃদ্ধি করে অধিক লাভে বাজারে বিক্রয় করার পক্রিয়াকেই Beef Fattening বা গরু মোটাতাজাকরণ বলে।

গরু মোটাতাজাকরণ আমাদের দেশে বর্তমানে একটি আধুনিক লাভজনক প্রকল্প। কৃষি প্রধান বাংলাদেশে অতি প্রাচীনকাল থেকেই গ্রামের ঘরে ঘরে গরু পালনের প্রচলন থাকলেও বর্তমানে শহরের উচ্চ শিক্ষিত যুবকেরাও গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্পের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

তিন মাসে গরু মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি

তিন মাসে গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্পকে লাভজনক করতে নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করা আবশ্যক:
প্রকল্প চালুর উপযুক্ত সময়: বাংলাদেশের আবহাওয়ায় যে কোন সময় তিন মাসে গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প শুরু করা যেতে পারে। তবে চাহিদার কথা বিবেচনা করে অধিকাংশ খামারীরা পবিত্র ঈদ-উল-আযহার সময় এই প্রকল্পটি গ্রহণ করেন। সেক্ষেত্রে উৎসবের কমপক্ষে ০৩-০৪ মাস পূর্বে প্রকল্প চালু করা যেতে পারে। 
এছাড়া যে সময় পশুর দাম কম থাকে এবং পশুখাদ্য তুলনামূলক কম মূল্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায় সেই সময়ও প্রকল্প শুরু করা যেতে পারে। বারমাসি খামারীরা নভেম্বর/ডিসেম্বর এবং জুন/জুলাই মাসে আরম্ভ করলে ভালো হয়। কারণ এ সময় একটু ঠান্ডা থাকে ফলে পশুকে এক স্থান হতে ক্রয় করে অন্য স্থানে সহজেই পরিবহন করা যায় এবং পশু নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারে।

ক্রয়ের সময় পশুর বয়স নির্বাচন: তিন মাসে গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্পের জন্য ২.৫-৪ বৎসরের এঁড়ে/ষাঁড় গরু ক্রয় করা উচিত। যদিও কেউ কেউ এই প্রকল্পের জন্য এঁড়ে বাছুরের বয়স ১.৫-২ বছর হওয়া উচিত বলে মনে করেন। ১.৫-২ বছরের পশুর খাওয়া দাওয়া অনীহা থাকে এবং খেলেও হজম করতে পারে না। যার ফলে গরু আশানুরুপ বৃদ্ধি পেতে ৫/৬ মাস কখনও কখনও আরও বেশি সময় লেগে যায়। এজন্য স্বল্প সময়ের প্রকল্পে গরুর বয়স কমপক্ষে আড়াই বছর হওয়া উত্তম।

মোটাতাজাকরণের জন্য জাত বাছাই: গরু মোটাতাজাকরণের জন্য গরুর জাত বাছাই একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। উন্নত দেশে গরু মোটাতাজাকরণের জন্য বিশেষ মাংসল জাতের গরু নির্বাচন করা হয়। সেসব দেশে মাংস উৎপাদনকারী জাতের মধ্যে ব্রাহমান, স্টহর্ন, এবারডিন, এ্যানগাস, বীফমাস্টার ও হেরিফোর্ড, ডেভন, ডেস্ট্রার ইত্যাদি। তবে এসব জাতের গরু বাংলাদেশে নেই। 

যেহেতু আমাদের দেশে মাংসের জন্য পৃথক কোনো জাত নেই তাই দেশে প্রাপ্ত গরু-বাছুর বা সংকর জাতের গরুর নিজ গুণাবলী বিশেষভাবে মূল্যায়ণ শেষে প্রকল্পের জন্য বাছাই করা উচিত। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তিন মাসে গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প কিংবা অন্য যে কোন মোটাতাজাকরণ প্রকল্পের জন্য দেশী জাতের এঁড়ে, শাহীওয়াল সংকর ও ফ্রিজিয়ান সংকর জাতের এঁড়ে গরু ক্রয় করে প্রকল্পের কাজ শুরু করতে হবে। 

বাছাইকৃত গরুর বৈশিষ্ট্য: গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্পের জন্য বাছাইকৃত গরুর আবশ্যিক বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ:
  • পশুটির পূর্ব বংশ ভাল কিনা তা জেনে নিতে হবে।
  • মাথা ও গলা খাটো এবং চওড়া হতে হবে। 
  • কপাল প্রশস্ত হওয়া আবশ্যক।
  • গায়ের চামড়া ঢিলে ঢালা হওয়া উচিত।
  • কাঁধ খুব পুরু এবং মসৃন হতে হবে। 
  • পিঠ চ্যাপ্টা এবং অনেকটা সমতল।
  • কোমরের দুই পার্শ্ব প্রশস্ত ও পুরু।
  • বুক প্রশস্ত ও বিস্তৃত হতে হবে। 
  • শরীরে হাড়ের আকার মোটা হতে হবে।
  • সামনের পা দুটো খাটো ও শক্ত সামর্থ হতে হবে।
  • শিং খাটো ও মোটা হওয়া উচিত।
  • মোটাতাজাকরণের জন্য গরু এঁড়ে/বলদ হওয়া বাঞ্চনীয়।
  • লেজ খাটো হতে হবে। 
  • স্বাভাবিকভাবে পশুটির শারীরিক রোগ ত্রুটিমুক্ত হতে হবে। 
  • স্বাভাবিকভাবে দাঁড়ানো অবস্থায় পশুটিকে একটি আয়তক্ষেত্রের মত হতে হবে।
  • বদমেজাজী গরু ক্রয় করা থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ এসব গরু পরিচর্যায় ব্যাঘাত ঘটায় এবং খামারের অন্যান্য গরুর সমস্যা সৃষ্টি করে।
গরু ক্রয়ের উৎস এবং খামারে আনার পদ্ধতি: গরু ক্রয়ের পূর্বে কয়েকটি খামার কিংবা বাজার পরিদর্শন শেষে ক্রয় করা উচিত। গরু ক্রয়ের পর ২/৩ কিলোমিটার পর্যন্ত গরুকে হাটিয়ে খামারে আনা যেতে পারে। কিন্তু দূরুত্ব যদি এর চেয়ে বেশি হয় তাহলে অবশ্যই নিরাপধ পরিবহনের মাধ্যমে গরুকে খামারে আনতে হবে। গরুকে বেশি হাঁটিয়ে আনলে যে পরিশ্রম হবে তা কাটিয়ে উঠতে সময় নিবে এবং খরচও বেশি হবে।

গরুর সুষম খাদ্য ব্যবস্থাপনা

গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প কিংবা যেকোনো পশু পালনে সফলতার পূর্ব শর্ত হচ্ছে সঠিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা। নিচে গরুর খাদ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
সুষম খাদ্য সরবরাহ: পশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং উৎপাদন বৃদ্ধিতে গরুর জন্য সরবরাহকৃত খাদ্যে সকল প্রকার পুষ্টিগুণ বিদ্যমান থাকতে হবে। 

সহজপাচ্য খাবার সরবরাহ: দুষ্পাচ্য খাদ্য দেহে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তাই পশুকে যে সকল খাদ্য সহজে হজম হয় সেসকল খাদ্য উপকরণ সবরাহ করা উচিত। পশুকে কোন অবস্থাতেই মিশ্রিত খাবার পঁচা, বাসি করে সরবরাহ করা উচিত নয়। কারণ এসব খাবারে ছত্রাক বা মেন্ডে আক্রমণ করতে পারে এবং ঐ খাদ্য খেয়ে পশু নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারে। 

গরুর পছন্দনীয় খাবার সরবরাহ: যে সকল খাবার গরু আগ্রহ সহকারে গ্রহণ সে সকল খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। 
তুলনামূলক কম খরচে খাদ্য সরবরাহ: খাদ্য প্রস্তুতে খরচ বেড়ে গেলে গরু উৎপাদন খরচও বেড়ে যাবে। তাই খাদ্য প্রস্তুতে খরচ কমাতে মৌসুম ভিত্তিক খাদ্য ক্রয় ও মজুতকরণের মাধ্যমে খাদ্যমূল্য কমাতে পারে।

গো-খাদ্য ভেজাল ও ধুলাবালিমুক্ত হতে হবে: ভেজাল খাদ্য উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস করে ও রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এমনকি কখনও কখনও পশুর মৃত্যুও ঘটতে পারে। তাই গরুকে পঁচা, বাসি, ছত্রাক ও ভেজালমুক্ত সতেজ খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। 

গরুর খাদ্য মজুদ প্রণালী: কিছু খাদ্য আছে যা সারা বছর পাওয়া যায় না, সেগুলো মৌসুমে মজুদ করলে অনেক কম দামে পাওয়া যায়। বিশেষ করে তিন মাসে গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্পে সফল হতে অবশ্যই খাদ্য মজুদ করতে হবে অন্যথায় গরুর খাবারের খরচ অনেক বেড়ে যাবে। যেমন- ঘাস, খড়, খৈল, ডালের ভুষি ইত্যাদি। নিচে গো-খাদ্য মজুদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লিপিবদ্ধ করা হলো:
  • খাদ্য মজুদের ঘর অবশ্যই মাঁচাযুক্ত হতে হবে। 
  • কুড়া ২ মাসের বেশি মজুদ করলে ছত্রাক পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই প্রতি ০২ মাস পর পর কুড়া মজুদ করা যেতে পারে।
  • ডাল/কালাইয়ের ভুষি ০৪ মাস পর্যন্ত মজুদ করা যায়।
  • খৈল মজুদের ক্ষেত্রে খৈলকে ভাংগিয়ে না রেখে আস্ত রাখতে হবে। আস্ত খৈল এক বৎসর পর্যন্ত সংরক্ষণে রাখা যায়।
  • ঝিনুকের গুড়া বৎসরকাল সংরক্ষণ করা যায়।
  • ইউরিয়া প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোনো সময় নেওয়া যেতে পারে।
  • মোলাসেস এর ক্ষেত্রে চিনিকল থেকে সারা বছরের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ মজুদ করা যেতে পারে।
  • মজুতকৃত খাদ্য যেন বৃষ্টির পানিতে না ভিজে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 
  • গুড়া জাতীয় খাদ্য মজুদের সময় বস্তার ভিতর শুকনা নিমের পাতা দিয়ে রাখলে পোকা ধরবে না। 

গরু মোটাতাজাকরণ দানাদার খাদ্য তালিকা

চালের কুড়া, গমের ভুষি, চালের খুদি, খৈল, কালাই, মটর, খেসারী ইত্যাদি গরুর দানাদার খাদ্য। পশু মোটাতাজাকণ বিশেষ করে তিন মাসে গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্পে গরুকে দানাদার খাদ্য সরবরাহের প্রয়োজনীয়তা অনেক। নিচে গো-খাদ্যের বিভিন্ন উপাদানের শতকরা হার নির্দেশ করে গরু মোটাতাজাকরণ দানাদার খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করা হলো:
খাদ্য উপাদানশতকরা হার
গমের ভুষি৫০%
চালের কুড়া (তুষ ছাড়া)২৪%
খৈল১৫%
কালাই বা ছোলা ভাংগা (খেসারী/মাটি/কাউপি)১০%
চালের খুদি১০%
ডিসিপি০.৫%
লবন০.৫%
সর্বমোট =১০০%

গরুর দানাদার খাবার তৈরির নিয়ম

গো-খাদ্যের সকল পুষ্টিগুণ নিশ্চিত করতে এবং খাবারের অপচয় রোধ করতে কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে গরুর দানাদার খাবার তৈরি করা উচিত। নিচে ১ কেজি সুষম দানাদার খাদ্য তৈরীর পদ্ধতি উপস্থাপন করা হলো:
খাদ্য উপাদানশতকরা হার
গমের ভুষি২৫০ গ্রাম
চালের কুড়া (তুষ ছাড়া)১৫০ গ্রাম
তিল/সয়াবিন/নারিকেল/সরিষার খৈল২০০ গ্রাম
চালের খুদি (জাউ রান্না)১৫০ গ্রাম
কালাই বা ছোলা, মশুর, মুগ ভাঙ্গা (খেসারী/মাটি/কাউপি)২০০ গ্রাম
হাড়ের গুড়া/ডিসিপি২৫ গ্রাম
লবন২০ গ্রাম
ভিটামিন (ডিবিভিট/মিনোভিট/বায়োমিক্স ডিবি/ভিটামিক্স ডিবি) যেকোনো একটি০৫ গ্রাম
সর্বমোট =০১ কেজি

১০০ কেজি দানাদার খাদ্য তালিকা

তুলনামূলক একটু বড় খামারের প্রয়োজনীয়তাকে বিবেচনায় রেখে ১০০ কেজি দানাদার খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করে নিচে উপস্থাপন করা হলো:
খাদ্য উপাদানশতকরা হার
গমের ভুষি২০ কেজি
চালের কুড়া (তুষ ছাড়া)১০ কেজি
তিল/সয়াবিন/নারিকেল/সরিষার খৈল২০ কেজি
চালের খুদি (জাউ রান্না)১ কেজি ১৫০ গ্রাম
কালাই বা ছোলা, মশুর, মুগ ভাঙ্গা (খেসারী/মাটি/কাউপি)২০ কেজি
হাড়ের গুড়া/ডিসিপি১ কেজি ৫০০ গ্রাম
লবন১ কেজি ৫০০ গ্রাম
ভিটামিন (ডিবিভিট/মিনোভিট/বায়োমিক্স ডিবি/ভিটামিক্স ডিবি) যেকোনো একটি২৫০ গ্রাম
সর্বমোট =১০০ কেজি

ওজন অনুযায়ী গরুর খাদ্য তালিকা

Beef  Fattening বা গরু মোটাতাজাকরণের জন্য গবাদী পশুকে প্রতিদিন নিম্নবর্ণিত হারে খাদ্য সরবরাহ করা প্রয়োজন:
পশুর বিবরণখাদ্যের নাম
ইউএমএস বা প্রক্রিয়াজাত খড় বা শুধু খড়দানাদার সুষম খাদ্যসবুজ ঘাস
১০০ কেজির কম ওজনের পশুর জন্য২ কেজি২.৫-৩ কেজি৪-৫ কেজি
১০০-১৫০ কেজি ওজনের পশুর জন্য৩ কেজি৩.০-৩.৫ কেজি৭-৮ কেজি
১৫০+ ওজনের পশুর জন্য৪ কেজি৪.০-৪.৫ কেজি৮-১২ কেজি
উল্লেখ থাকে যে, শুধু খড় খাওয়ালে ঐ পশুকে ইউএমবি (ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক) দেওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ১০০ কেজি দৈহিক ওজনের পশুকে দৈনিক ২০০ গ্রাম, ১০০-১৫০ কেজির পশুর জন্য ২৫০ গ্রাম, ১৫০+ কেজির ওজনের পশুর জন্য ৩০০-৪০০ গ্রাম ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক খাওয়াতে হবে।

উপরোল্লিখিত খাদ্য তালিকাকে ২ ভাগে ভাগ করে সকালে অর্ধেক এবং বিকালে অর্ধেক খাওয়াতে হবে। অবসর সময়ে গরুকে কাঁচা ঘাস এবং ইউএমএস (ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র) প্রক্রিয়াজাত খড় দিতে হবে।

লেখকের মন্তব্য

গরু মোটাতাজাকরণ খামার ব্যবস্থানায় সফল হতে সুনির্দিষ্ট কর্ম পরিকল্পনা প্রস্তুত করে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া উচিত। অন্যথায় কার্যক্ষেত্রে অনেক জটিলতার সম্মুখীন হতে হয় যা প্রকল্পকে লোকসানের দিকে ধাবিত করে। গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প গ্রহণের পূর্বে প্রশিক্ষণ নিয়ে শুরু করলে সফলতার পথ অনেকটা সহজ হয়ে যায়। এছাড়াও সার্বক্ষণিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শক্রমে খামার পরিচালনা করলে গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্পে সফলতা অনেকটাই নিশ্চিত।

গরু মোটাতাজাকরণ বিষয়ক এই আর্টিকেলটি খামারীকে প্রাথমিক ধারণা দিতে রচতি। তাই কার্যক্ষেত্রে নির্দেশনাগুলো প্রয়োগের সময় অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে কাজ করলে আরও বেশি ফলপ্রসূ হবে। আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হলে আপনার শুভাকাঙ্খীদের শেয়ার করার অনুরোধ রইলো। সেই সাথে এখানো কোনোপ্রকার সংশোধন, সংযোজন ও পরিমার্জনের প্রয়োজন হলে কমেন্টবক্সে সুচিন্তিত মতামত প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ রইলো।


তথ্যসূত্র: ড. মো. জালাল উদ্দিন সরদার, অধ্যাপক, এনিমেল হাজবেন্ড্রী এণ্ড ভেটেরিনারি সায়েন্স বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী কর্তৃক রচিত এবং নূর পাবলিকেশন্স, বাংলাবাজার, ঢাকা কর্তৃক প্রকাশিত “লাভজনক পশু পালন ও খামার ব্যবস্থাপনা” বই থেকে নেওয়া। খামার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান অর্জন করতে বইটি আপনার সংরক্ষণে রাখতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করেনি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনার সুচিন্তিত মতামত দিয়ে MrDorpon কে আরও সমৃদ্ধ করতে সহযোগিতা করুন। আপনার মতামতটি রিভিউর পর Published করা হবে।

comment url