রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক মাত্রা এবং ডায়াবেটিস কমানোর প্রাকৃতিক উপায়
রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক মাত্রার ভারসাম্যহীন অবস্থাই হচ্ছে ডায়াবেটিস। রক্তে এর পরিমাণ বেড়ে গেলে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষজ্ঞের নির্দেশিত চিকিৎসাপত্র ও নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপনের পাশাপাশি ডায়াবেটিস কমানোর প্রাকৃতিক উপায় অনুসরণের মাধ্যমেও রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখা সম্ভব।
অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসৃত ইনসুলিন রক্তে অবস্থিত শর্করাকে ভেঙ্গে গ্লুকোজে পরিণত করে এবং তা বিভিন্ন বিপাকীয় কার্যের মাধ্যমে শক্তিতে রূপান্তর করে কোষে সরবরাহ করে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটে আর তখনই ডায়াবেটিসের মত আমৃত্যু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
ভূমিকা
রক্তে বিদ্যমান বিভিন্ন জৈব রাসায়নিক পদার্থের একটি উপাদান হলো শর্করা। রক্তে অবস্থিত শর্করা বিপাকীয় কার্যের মাধ্যমে গ্লুকোজে পরিণত হয় যা মানবদেহে শক্তি সরবরাহে কাজ করে। কিন্তু রক্তের এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি তার নির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করলে তা ডায়াবেটিসে পরিণত হয়। কিছু সাধারণ উপসর্গ জানান দেয় কারো শরীরে ডায়াবেটিস আছে কিনা।
ডায়াবেটিস রোগীর উপসর্গগুলোর মধ্যে অনত্যম হচ্ছে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, তৃষ্ণার প্রবণতা বেড়ে যাওয়া এবং ছোটখাটো ক্ষত শুকাতে অনেক সময় নেওয়া ইত্যাদি। চিকিৎসাবিজ্ঞানের বদৌলতে এবং গবেষকদের গবেষণার ফলে ইচ্ছে করলেই এখন রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখা সম্ভব। তাই ডায়াবেটিসের কারণ, উপসর্গ, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর পথ্য তালিকাসহ প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম উপায়ে এর প্রতিকার নিয়ে এই আর্টিকেলটি রচিত।
ডায়াবেটিস কি কারণে হয়
মানবদেহ যে খাবার গ্রহণ করে তা অগ্ন্যাশয়ে বিপাকীয় কার্যসম্পাদন শেষে ইনসুলিনে পরিণত হয়। ইনসুলিন হলো এক প্রকার হরমোন যা রক্তের গ্লুকোজকে নিয়ন্ত্রণ করে। শরীরে যখন ইনসুলিন উৎপাদন কমে যায় কিংবা উৎপাদিত ইনসুলিন সঠিকভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হয় তখনই শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়।
রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক মাত্রার অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলেই ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। সাধারণত নিম্নলিখিত কারণে ডায়াবেটিস হয়ে থাকে তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও থাকতে পারে।
- যেহেতু ডায়বেটিস একটি জিনগত সমস্যা তাই সরাসরি রক্তের সম্পর্ক থাকা কোনো নিকটাত্মীয়ের ডায়াবেটিস থাকলে আপনারও ডায়াবেটিস হতে পারে।
- রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে কম বা বেশি হলে
- কায়িক পরিশ্রম কম হলে কিংবা শারীরিক ব্যায়াম না করলে
- শরীরের ওজন অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেলে
- গর্ভবতী মায়ের ডায়বেটিস থাকলে শিশুরও ডায়াবেটিস হতে পারে
- অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন
- অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস
- ধুমপানসহ যেকোনো তামাকজাত দ্রব্য সেবন করলে
- অতিরিক্ত চিনি বা চিনি জাতীয় খাবার খেলে
- শরীরকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার না দিলে
- অতিরিক্ত মানসিক চাপও ডায়াবেটিসের কারণ হতে পারে।
ডায়াবেটিস হওয়ার লক্ষণ
চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের গবেষণায় বেশ কয়েক ধরনের ডায়াবেটিস আবিস্কৃত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে কমন দুই ধরনের ডায়াবেটিস হলো টাইপ-১ ডায়াবেটিস ও টাইপ-২ ডায়াবেটিস। নিচে এই দুই ধরনের ডায়াবেটিস এর লক্ষণগুলো নিচে উপস্থাপন করা হলো।
টাইপ ১ ডায়াবেটিস এর লক্ষণ
বংশগত বা জেনেটিক কারণে টাইপ ১ ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। যখন মানবদেহের অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলো অকেজো থাকে, কিংবা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় তখন সেই রোগীর দেহে ইনসুলিন উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: দীর্ঘ যৌবন ধরে রাখতে কি খাওয়া উচিত?
আর রক্তে যদি ইনসুলিন উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা সেই অবস্থাকে টাইপ-১ ডায়াবেটিস নামে আখ্যায়িত করেছেন। টাইপ ১ ডায়াবেটিস হলো কৃত্রিম ইনসুলিন নির্ভর। নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখে বুঝতে পারবেন আপনি টাইপ-১ ডায়াবেটিস-এ আক্রান্ত কিনা-
- ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ হওয়া
- কোনো কারণ ছাড়া অতি দ্রুত ওজন হ্রাস পাওয়া
- দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসা কিংবা ঝাপসা দেখা
- ঘন ঘন পিপাসা পাওয়া
- সময়ে অসময়ে ক্ষুধার প্রবণতা
- বমি বমি ভাব হওয়া
- পেট ব্যথা ও মাথা ব্যথা
- অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করা
- মেজাজ খিটখিটে ও বিরক্তিভাব প্রকাশ পাওয়া
- অকারণে সবকিছুতে অপ্রীতিকর গন্ধের অনুভূতি
- ঘন ঘন প্রস্রাবের তাগিদসহ কখনও কখনও ছোট শিশুদের রাতে প্রস্রাব করে বিছানা ভিজানোর মত ঘটনাগুলোও টাইপ-১ ডায়াবেটিস এর লক্ষণ হতে পারে।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস এর লক্ষণ
টাইপ ২ ডায়াবেটিস কৃত্রিম ইনসুলিন নির্ভর না হলেও শরীরে যে ইনসুলিন উৎপাদিত হয় তা পর্যাপ্ত নয়। এক্ষেত্রে শরীর উৎপাদিত ইনসুলিন যখন রক্তের শর্করাকে কোষে পরিবহন করতে ব্যর্থ হয় তখন সেই অবস্থাকে টাইপ ২ ডায়াবেটিস বলে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টাইপ ২ ও টাইপ ১ ডায়াবেটিসের উপসর্গগুলো একই। তফাত শুধু, টাইপ ১ ডায়াবেটিসের উপসর্গগুলো খুব দ্রুত চোখে পড়ে কিন্তু টাইপ ২ ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো ধীর গতিতে পরিলক্ষিত হয়। নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখে বুঝতে পারবেন আপনি টাইপ ২ ডায়াবেটিস-এ আক্রান্ত কিনা-
- ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ হওয়া
- ঘন ঘন মুখ ও জিহ্বা শুকিয়ে আসা এবং পানি পিপাসা পাওয়া
- ত্বক শুষ্ক ও খসখসে কখনও কখনও ত্বকে চুলকানির সৃষ্টি হওয়া
- মিষ্টি ও মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়া
- শরীরের কোনো কাটা বা ক্ষত না শুকাতে চাওয়া কিংবা শুকাতে সময় বেশি লাগা
- খাবারে সামান্য অনিয়ম হলে রক্তের গ্লুকোজ কমে যাওয়া
- ক্ষুধার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া
- হাত-পা ঝিন ঝিন ও অদ্ভূত শিহরণ অনুভূত হওয়া
- অকারণে সবকিছুতে অপ্রীতিকর গন্ধের অনুভূতি হতে পারে
- সবকিছুতে বিরক্তিভাব প্রকাশ করা
- ক্লান্তি ও অবসাদ অনুভব করা এবং সময়ে অসময়ে ঘুম ঘুম ভাব লাগা
- কোনো কারণ ছাড়াই শরীরের ওজন কমতে থাকা
- স্নায়ুতন্ত্র তার কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে অর্থাৎ স্পর্শ ও ব্যাথা অনুভূতি হ্রাস পেয়ে যায়
ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয়
কথায় আছে ডায়াবেটিস কোন রোগ নয় তবে ডায়াবেটিস হলো অন্য সকল রোগের জননী। ইতিমধ্যে টাইপ ১ ও টাইপ ২ তে ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ডায়াবেটিস অন্য যেসকল রোগকে প্রভাবিত করে কিংবা সমস্যার সৃষ্টি করে তা নিয়ে আলোচনা করা হলো:
- ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী হৃদরোগের ঝুঁকিতে ভোগে
- রক্তে উচ্চ মাত্রার গ্লুকোজের কারণে কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে
- দৃষ্টিশক্তিকে প্রভাবিত করে কখনও কখনও দৃষ্টিশক্তি লোপ পেতে পারে
- দাঁতকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে
- মস্তিস্কের কোষকে প্রভাবিত করে
- সেক্সুয়ার ডিজঅর্ডার হতে পারে
- রক্তচাপকে প্রভাবিত করে বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে
- ছোট-খাটো ক্ষত থেকে বড় ক্ষতের সৃষ্টি করে এমনকি এক পর্যায়ে উক্ত ক্ষতস্থানসহ তার আশেপাশের অংশ কেটে ফেলে দেওয়ার মত ভয়ংকর ঘটনাও ঘটতে পারে।
- সর্বোপরি অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের ফলে মৃত্যুও ঘটতে পারে।
ডায়াবেটিস কত হলে বিপদ
ডায়াবেটিস এর সঠিক মাত্রা জানতে খাওয়ার কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা পূর্বে এবং ২ ঘণ্টা পরে ক্লিনিক্যালি ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা উচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে কোনো ব্যক্তির রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ খালিপেটে ৫.৫ পর্যন্ত স্বাভাবিক তবে যদি খালিপেটে এই মাত্রা ৬.৫ কে অতিক্রম করে এবং তা দীর্ঘদিন স্থায়ী হয় তবে ঐ ব্যক্তি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী হিসেবে বিবেচিত। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী খালিপেটে এই মাত্রা ৭ পর্যন্ত নিরাপধ। ডায়াবেটিসের এই মাত্রা যত বৃদ্ধি পাবে রোগীর জন্য ততই তা বিপদজনক।
ডায়াবেটিস কত হলে ইনসুলিন নিতে হয়
ইনসুলিন হলো অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসৃত এক ধরনের হরমোন। কিন্তু মানবদেহ এই হরমোন উৎপাদনে ব্যর্থ হলে কখনও কখনও কৃত্রিম উপায়ে রক্তে ইনসুলিন সরবরাহ করতে হয়। টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদেরকে অবশ্যই কৃত্রিম ইনসুলিন নিতে হয়। অন্যদিকে টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে যদিও খালিপেটে গ্লুকোজের মাত্রা ৬.৫ এর বেশি হলেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বলে বিবেচিত তবুও এই এই মাত্রার জন্য কৃত্রিম ইনসুলিন গ্রহণের প্রয়োজন হয় না।
কৃত্রিমি ইনসুলিন তখনই নিতে হবে যখন এই মাত্রা খালিপেটে ১৬.৭ কিংবা তার বেশি হয়। তবে এক্ষেত্রে কৃত্রিম ইনসুলিন নেওয়া কিংবা অন্য যেকোনো চিকিৎসা নেওয়ার পূর্বে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ডায়াবেটিস কত হলে ঔষধ খেতে হবে
ভরাপেটে রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক মাত্রা কিছুটা বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে গ্লুকোজের পরিমাণ ৭.৮ পর্যন্ত স্বাভাবিক। তবে এই মাত্রা যদি ১১.১ এর বেশি হয় তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী বিভিন্ন ওষুধ সেবন করতে হবে কিংবা চিকিৎসা নিতে হবে।
রক্তে গ্লুকোজ এর স্বাভাবিক মাত্রা কত?
বিশেষজ্ঞদের মতে খালিপেটে রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক মাত্রা ৩.৫-৫.৫ পর্যন্ত স্বাভাবিক। এই মাত্রা যদি ৫.৫-৬.৯ হয় তবে তা প্রি-ডায়াবেটিস হিসেবে বিবেচিত। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী ডায়াবেটিসের স্বাভাবিক মাত্রা খালিপেটে ৭ পয়েন্ট পর্যন্ত বিবেচিত। যেহেতু ভরাপেটে রক্তে গ্লুকোজ কিছুটা বেড়ে যায় তাই সেক্ষেত্রে এই মাত্রা ৭.৮ পর্যন্ত স্বাভাবিক হিসেবে গণ্য।
রক্তে গ্লুকোজ বেড়ে গেলে করণীয়
- নিয়মিত ব্যায়াম করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের উত্তম ব্যায়াম হচ্ছে নিয়মিত হাটা। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন। এতে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসবে।
- অতিরিক্ত ওজন ডায়াবেটিসকে আরও বেশি প্রভাবিত করে তাই অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে
- অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন বিশেষ করে অনিয়মিত খাওয়া-দাওয়া ডায়াবেটিসকে বেশি প্রভাবিত করে। তাই ডায়াবেটিস মোকাবেলায় সময়মতো খাবার খাওয়া খুবই জরুরী।
- ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখার পূর্বশর্ত হলো পরিমাণমতো খাবার খাওয়া। প্রয়োজনের তুলনায় একটু কম খাওয়া। প্রয়োজনে অল্প অল্প করে কিছুক্ষণ পর পর খাওয়া।
- চর্বি জাতীয় খাবার, ফাস্টফুড ও বাহিরের ভাজা-পোড়া তৈলাক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।
- অতিরিক্ত লবণ পরিহার করা।
- দীর্ঘ সময় ধরে একটানা বসে কাজ না করে কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে কাজ করা।
- ধুমপান ও তামাকজাতীয় দ্রব্য সেবন পরিহার করা
- ডায়াবেটিস থেকে সুরক্ষা নিতে অতিরিক্ত শর্করা বা কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার কম গ্রহণ করতে হবে।
- ডায়াবেটিস থেকে সুরক্ষিত রাখতে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে হবে।
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ ডায়াবেটিসের অন্যতম কারণ তাই অতিরিক্ত দুঃশ্চিন্তা পরিহার করতে হবে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে এবং কোমল পানীয় পরিহার করতে হবে।
- রক্তের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যেমন- গ্লুকোজ, ব্লাড প্রেসার, লিপিড ইত্যাদি নিয়মিত পরীক্ষা করে নির্দিষ্ট মাত্রায় রাখতে হবে। এর তারতম্য ঘটলে প্রাথমিক চিকিৎসার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
- এককথায় Triple D (DDD) অর্থাৎ Discipline, Diet এবং সর্বোপরি Drug হচ্ছে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মোক্ষম হাতিয়ার।
ডায়াবেটিস কমানোর প্রাকৃতিক উপায়
প্রকৃতি প্রদত্ত কিছু খাবারের মাধ্যমে ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। নিচে এমন কিছু খাবার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের প্রাকৃতিক উপায় হিসেবে বিবেচিত:
- তেতো করলা: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে তেতো করলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি রক্ত গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় করলা রাখতে পারেন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে করলার জুস খুবই উপকারী।
- মেথি: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মেথি হতে পারে আদর্শ একটি উপকরণ। নিয়মিত প্রতি রাতে ২চা চামচ পরিমাণ মেথি পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেকে নিয়ে সেই পানি পান করলে উপকার পাবেন।মেথি হজমে সাহায্য করে। এটি দ্রবণীয় ফাইবার সমৃদ্ধ একটি খাবার।
- মিষ্টি কুমড়া: মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মিষ্টি কুমড়া খুবই ফলপ্রসূ একটি খাবার।
- ঢেঁড়স: ঢেঁড়স উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ একটি খাবার। প্রতি রাতে এক গ্লাস পানিতে একটি ঢেড়শ কেটে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে গ্লাস থেকে ঢেঁড়স তুলে নিয়ে ঢেড়স ভিজিয়ে রাখা সেই পানি পান করুন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এটা খুবই ফলপ্রসু।
আরও পড়ুন: কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের প্রাকৃতিক উপায়
- নয়নতারা ফুল: ডায়াবেটিস ও ক্যানসারের মত জটিল রোগের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয় নয়নতারা। নয়নতারা গাছের পাতায় একটি বিশেষ উপাদান থাকে যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। প্রাচীনকাল থেকেই ঘরোয়া চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে এই গাছের ফুল আর পাতা। নয়নতারা গাছের ফুল ও মূল রাতে পানিতে ভিজেয় রেখে সকালে সেই পানি সেকে গরম করে প্রতিদিন দুই বেলা খেলে ডায়াবেটিস অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
- পেয়াজ: পেয়াজের নির্যাস রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখার সবচেয়ে সহজলভ্য উপায়।
- আদা: রক্তে শর্করার স্বাভাবিক মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আদা খুবই কার্যকরী উপাদান। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে একটু আদা চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে কিংবা কুসুম গরম পানির সাথে সামান্য পরিমাণ আদা ভিজিয়ে খেতে পারলে রক্তে শর্করার স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখা সম্ভব। আর রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে স্বাভাবিকভাবেই ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- জিনসেং: এটি একটি ভেষজ উদ্ভিদ যা সাধারণত চীন, উত্তর কোরিয়া ও সাইবেরিয়াতে জন্মে। চীনের আয়ুর্বেদীয় চিকিৎসায় জিনসেং এর ব্যবহার হাজার বছর ধরে প্রচলিত। জিনসেং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খুবই উপকারী। প্রতিদিন জিনসেং মিশ্রিত চা খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
- পনিরফুল: অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন উৎপাদনকারী নিস্ক্রিয় বিটাকোষকে সক্রিয় করতে পনির ফুল খুবই উপাদেয় ভেষজ উপাদান। প্রতিরাতে এক গ্লাস পানিতে কয়েকটি পনিরফুল ভিজিয়ে রেখে সকালে খালিপেটে উক্ত পানি খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
- দারুচিনি: দারুচিনিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। দারুচিনি কাঁচা চিবিয়ে কিংবা যেকোনো উপায়ে খেতে পারেন। তবে নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস ধরে রাখতে পরিমাণমত দারুচিনি ব্লেন্ড করে কোনো হাইজেনিক জারে সংরক্ষণ করে প্রতিদিন চা কিংবা কুসুম গরম পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
- এলোভেরা: অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন উৎপাদনকারী নিস্ক্রিয় বিটাকোষকে সক্রিয় করতে এলোভেরায় বিদ্যমান লেকটিন, ম্যাননান্স ও অ্যানথ্রাকুইনো যৌগ কাজ করে। তাই প্রাকৃতিক উপায়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত এলোভেরার জেল খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
- আমপাতা: আমপাতার রস রক্তের শর্করার স্বাভাবিক মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে খুবই কার্যকরী উপাদান।
- ডুমুর: ডুমুরে থাকা হাইপোগ্লাইসেমিক যৌগ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। কাঁচা কিংবা শুকনা বিভিন্ন ফর্মূলায় ডুমুর সংরক্ষণ ও খাওয়া যায়। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘরে ডুমুরচূর্ণ সংরক্ষণে রেখে নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করা যেতে পারে।
- সজনে পাতার পাউডার: সজনে পাতায় বিদ্যমান এন্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। সজনে পাতা শুকিয়ে গুড়ো করে সংরক্ষণে রেখে প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণ পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভভ।
ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকা
ডায়াবেটিস হলেই যে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিতে এমন ধারণা রাখা মোটেও ঠিক নয়। বরং নিয়ম মেনে পরিমিত পরিমাণ সব খাবারই খাওয়া উচিত। তবে সরাসরি চিনি কিংবা চিনি মিশ্রিত খাবারগুলো পরিহার করাই শ্রেয়। নিচে ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
ফলমূল: ডায়াবেটিসের রোগীরা পরিমিত পরিমাণে ফাইবারসমৃদ্ধ যেকোনো ফল খেতে পারেন। নিচে ডায়াবেটিসি বান্ধব ফলগুলো উল্লেখ করা হলো:
- আপেল: পুষ্টিগুণে ভরপুর সহজলভ্য এই ফলটি ডায়াবেটিস বান্ধব। ডায়াবেটিস রোগীরা ইচ্ছে করলে পরিমিত পরিমাণে এই ফলটি খেতে পারেন।
- নাসপাতি: কিছুটা আপেলের মত দেখতে এই ফলটিতে ভিটামিন এ, সি, ক্যালসিয়াম ও পটাসিয়ামের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান যা রক্তের শর্করার স্বাভাবিক মাত্রা নিয়ন্ত্রণে খুবেই সহায়ক।
- সাইট্রাস জাতীয় ফল: সাধারণত লেবু জাতীয় ফলগুলোই সাইট্রাস গোত্রের ফল। সাইট্রাস জাতীয় ফলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- লেবু, কমলা লেবু, বাতাবি লেবু (জাম্বুরা)। এতে থাকা ভিটামিন সি এবং দ্রবণীয় ফাইবার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
- বেরি জাতীয় ফল: বেরি জাতীয় ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুবই উপকারী। বেরি জাতীয় ফলের মধ্যে রয়েছে- স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি, ব্লুবেরি, রাসবেরি ইত্যাদি।
- চেরি: সামান্য পরিমাণ GI (গ্লাইসেমিক সূচক) ফলটিতে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান। ফলটি মিষ্টি হলেও ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুবই উপকারী।
- কিউই ফল: সীমিত গ্লাইসেমিক সূচক এবং অল্প কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ ফলটিতে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার ও ভিটামিন সি আছে। ফলটি রক্তের শর্কারর মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে খুবই উপকারী।
- তরমুজ: ভিটামিন এ, সি, ফাইবার ও পটাসিয়ামে ভরপুর একটি মৌসুমী ফল। মিষ্টি হলেও ডায়াবেটিস রোগীরা এই ফলটি পরিমিত পরিমাণে খেতে পারেন।
- আঙুর: ভিটামিন সি এবং ফাইবার সমৃদ্ধ এই ফলটিতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি বিদ্যমান যা রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। তাই বিশেষজ্ঞরা ডায়াবেটিস রোগীকে পরিমিত পরিমাণে আঙুর খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
- বরই: ডায়াবেটিস বান্ধব এই মৌসুমী ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার বিদ্যমান।
শাকসবজি: বিশেষজ্ঞদের মতে কম শ্বেতসারযুক্ত যেকোনো শাক বা সবজি খেতে পারেন। সেইমতে, ডায়াবেটিস রোগীরা নিম্নোক্ত শাকসবজিগুলো পরিমিত পরিমাণে খেতে পারবেন-
- শাক: লাল শাক, পুঁইশাক, পালং শাক, কচু শাক, ডাটা শাক, সজনে শাকসহ যেকোনো শাক খেতে পারেন।
- সবজি: কাঁচাকলা, ব্রকলি, ফুলকপি, বাধাকপি, মটরশুটি, বরবটি, করলা, ঢেঁড়শ, টমেটো, শসা, ক্যাপসিকাম সহ কম শ্বেতসারযুক্ত যেকোনো সবজি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যায়। তবে বিশেষজ্ঞরা মাটির নিচে উৎপাদিত সবজি যেমন- আলু, কচু, ওল, গাজর কিংবা শালগম জাতীয় সবজিগুলোকে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ডায়াবেটিস রোগীরা পরিমিত পরিমাণে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার, মাছ, মাংস, ডিম ইত্যাদি খেতে পারেন তবে নিয়মিত না খাওয়াই উত্তম।
ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা
- চিনি: আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে প্রথমেই চিনি কিংবা চিনি দিয়ে তৈরী যেকোনো খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। অন্যথায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রেণের বাহিরে চলে যেতে পারে এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
- লবন: ডায়াবেটিস হলে চিনি কিংবা মিষ্টিজাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে এ বিষয়ে কমবেশি সবারই জানা কিন্তু অনেকেরই হয়তো জানা নেই যে, চিনির পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনে চিনির চেয়ে বেশি ব্যবহৃত লবনকেও খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দেওয়া উচিত। লবন অল্পপরিমাণে রান্নায় ব্যবহার করা হলেও ডায়াবেটিস রোগীর জন্য কাচা লবন খাওয়া কোনোভাবেই উচিত নয়।
- অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার: ডায়াবেটিস রোগীদের অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করা উচিত। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবারের তালিকায় রয়েছে- পরিশোধিত শস্য থেকে উৎপাদিত সাদা চাল, সাদা আটা, ময়দা, সুজি, লাল মাংস, প্রক্রিয়াজাত যেকোনো মাংস, ভাজাপোড়া, সব ধরনের ফাস্টফুড ইত্যাদি।
- অতিরিক্ত আমিষজাতীয় খাবার: প্রোটিন জাতীয় খাবারগুলোই আমিষ জাতীয় খাবার। প্রাণীজ আমিষের মধ্যে রয়েছে মাছ, মাংস, ডিম ও দুধ এবং উদ্ভিজ্জ আমিষের মধ্যে রয়েছে ডাল, বাদাম, শিমের বিচি, সয়াবিন ইত্যাদি। ডায়াবেটিস রোগীদের এই খাবারগুলো খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- চা এবং কফি: ডায়াবেটিস রোগীদের চা ও কফি খাওয়ার অভ্যাসি পরিত্যাগ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। বিশেষ করে চিনি মিশ্রিত দুধ চা এবং দুধ কফি ডায়াবেটিস রোগীর জন্য খুবই ক্ষতিকর।
- অ্যালকোহল: অ্যালকোহল কোনোভাবেই শরীরের জন্য মঙ্গলজনক নয়। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অ্যালকোহল এক প্রকার বিষ।
লেখকের মন্তব্য
ডায়াবেটিস নিজে কোনো রোগ নয় কিন্তু সকল রোগের জননী। এজন্য ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী নানান রোগে ভোগেন। এমনকি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে আমৃত্যু এই রোগের সাথে যুদ্ধ করে যেতে হয়। একমাত্র নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনই পারে রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখতে। পরিশেষে তথ্যগুলো অনুসরণ করে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার পরিচিতজনকে শেয়ার করে তিনাকেও উপকৃত হওয়ার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
যদিও তথ্যগুলো নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে সংগৃহিত তবুও উপরোল্লিখত তথ্যগুলো অনুসরণের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ কোনো ডাক্তারের মতামত নেওয়ার পরামর্শ রইল। সেই সাথে এই আর্টিকেলে কোনো প্রকার সংশোধন, সংযোজন ও পরিমার্জনের প্রয়োজন হলে আপনার সুচিন্তিত মতামত সাদরে গ্রহণযোগ্য। আপনার মতামত জানাতে কমেন্টবক্সে কমেন্ট করতে পারেন। ধন্যবাদ।
আপনার সুচিন্তিত মতামত দিয়ে MrDorpon কে আরও সমৃদ্ধ করতে সহযোগিতা করুন। আপনার মতামতটি রিভিউর পর Published করা হবে।
comment url