আমলকি খেলে কি হয় ও কাদের আমলকি খাওয়া উচিত নয়

আমলকি খেলে কি হয় কিংবা কাদের আমলকি খাওয়া উচিত নয় জানার পাশাপাশি আজ জানবো আমলকির পুষ্টিগুণ এবং তার ব্যবহারবিধি। অন্যান্য ফল গাছের ন্যায় এই গাছটিকেও তার ফলের নামে নামকরণ করা হয়েছে। গাছটিকে ফলের নামে নামকরণ করা হলেও এই গাছের ফলসহ ছাল, মূল ও পাতাতেও প্রচুর ঔষধিগুণ বিদ্যমান।

আমলকি-খেলে-কি-হয়
আমলকি হলো উচ্চমাত্রার ভেষজ গুণসম্পন্ন অতি সুপরিচিত একটি পর্ণমোচী ফলজ বৃক্ষ যার ইংরেজি নাম Amla Tree (আমলা গাছ)। তবে বাংলাদেশসহ ভারতের কিছু রাজ্যেও এই ফলটিকে আমলা নামে নির্দেশিত করে। এর বৈজ্ঞানিক নাম Phyllanthus emblica.

ভূমিকা

আমলকি হলো ভেষজ গুণে ভরপুর ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ঔষধিগুণ সম্পন্ন একটি ফল। আয়ুর্বেদীয় চিকিৎসায় আমলকি আল্লাহ প্রদত্ত এক অপূর্ব নিয়ামত। তবে তথ্য প্রযুক্তির যুগে যেকোনো বিষয়ের উপকার, অপকার এবং ব্যবহার সম্পর্কে জানা খুবই সহজ হওয়ায় আমলকি আজকাল শুধুমাত্র আয়ুর্বেদীয় চিকিৎসায় সীমাবদ্ধ নেই।
ফলটি আমরা কাঁচা কিংবা শুকিয়ে পাউডার করে দুই ফর্মূলাতেই খেতে পারি। খালিপেটে খেলে এই ফলটির গুণাগুণ আরও বৃদ্ধি পায়। অনুরূপভাবে ফলটি অতিরিক্ত খেলে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং কখনও কখনও ফলটি খাওয়ার সময় কিছু বিধি নিষেধ মেনে খেতে হয়। সহজলভ্য এই ফলটি খাওয়ার পাশাপাশি রূপচর্চার কাজেও ব্যবহৃত হয়।

আমলকির পুষ্টি উপাদান কী কী

আমলিক ভিটামিন সি সমৃদ্ধ অনেক ঔষধিগুণ সম্পন্ন একটি ফল। ভিটামিন সি এর পাশাপাশি এতে রয়েছে-
  • আয়রন
  • ক্যালসিয়াম
  • ফসফরাস
  • ক্যারোটিন
  • ক্রোমিয়াম
  • খনিজ ও
  • ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের বেশ কিছু উপাদান।

কাঁচা আমলকি খেলে কি হয় এবং খাওয়ার নিয়ম

স্বাদের দিক থেকে আমলকি ফলটি সকলের নিকট প্রিয় না হলেও পুষ্টিগুণের কারণে এই ফলটি পছন্দ করেনা এমন মানুষ বিরল। অন্যান্য ফলের মত আমলকি ফলটিও ইচ্ছেমত খাওয়া যায়। তবে বেশিরভাগ মানুষ ফলটি কাঁচা চিবিয়ে, বেটে নির্যাস বের করে, শুকিয়ে পাউডার করে এবং আরও বিভিন্ন উপায়ে খেয়ে থাকেন। ফলটির ঔষধি গুণকে অধিক ফলপ্রসূ করতে যুগ যুগ ধরে প্রচলিত আমলকি খাওয়ার কিছু নিয়ম ও উপকারিতা নিচে উপস্থাপন করা হলো:

চুলের যত্নে আমলকি: চুলের যত্নে আমলকি প্রাচীনকাল থেকেই বহুল জনপ্রিয়। চুলকে সতেজ ও মজবুত রাখতে আমলকি খুবই উপকারী। এছাড়া লম্বা ও খুসকিমুক্ত চুল, চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি, অস্বভাবিক চুল পড়া রোধ এবং অল্প বয়সে চুল পাকা প্রতিরোধ করতে আমলকির জুড়ি নেই।

ত্বকের রুক্ষতা দূরীকরণে আমলকি: নিয়মিত আমলকি খাওয়ার অভ্যাস ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে সক্ষম। শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে আমরা সাধারণত তেল, লোশন, ক্রিম ও গ্লিসারিন ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে ত্বকের যত্নে শুধুমাত্র বহিঃতকে তেল, লোশন, ক্রিম ও গ্লিসারিন ব্যবহার করলেই হবে না। 
ত্বককে সতেজ করতে ভিতর থেকে ত্বকের যত্ন নিতে হবে। আর সেজন্য বিশেষজ্ঞরা ত্বকের যত্নে নিয়মিত আমলকি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে এবং অবাঞ্চিত দাগ দূর করতে আমলকির নির্যাসের সাথে মধু মিশিয়ে নিয়মিত খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে আমলকি: আমলকিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। চিকিৎসা বিজ্ঞানে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভূমিকা আমাদের সকলেরই জানা। তাই মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে আমলকির জুড়ি মেলা ভার। বিশেষজ্ঞদের মতে নিয়মিত আমলকি খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় কয়েকগুণ।

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে আমলকি: চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে আমলকি খুবই উপকারী। আমলকিতে রয়েছে ফাইটো-ক্যামিকেল নামক একধরনের পুষ্টি উপাদান যা চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করে। এছাড়া চোখ জালাপোড়া করা, চোখ দিয়ে পানি পড়া কিংবা চোখ চুলকানো সহ চোখের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে আমলকির নির্যাস খুবই কার্যকরী।

নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ রোধে আমলকি: খুবই হাস্যকর একটা বিজ্ঞাপন আছে “যার মুখে গন্ধ তার মুখ বন্ধ”। কিন্তু আমরা অনেকেই হয়তো জানি না যে, প্রতিদিন নিয়ম করে ২টি আমলকি খেতে পারলে যাদের নিঃশ্বাস থেকে গন্ধ আসে তা চিরতরে বন্ধ করা সম্ভব। এছাড়া দাঁতের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি ও দাঁতকে মজবুত করতেও আমলকি খুবই উপকারী। 

ওজন কমাতে আমলকি: আমলকিতে আছে প্রচুর ফাইবার যা দেহের অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি ঝরাতে কাজ করে। যারা ওজন কমাতে ডায়েট মেইনটেইন করেন তারা তাদের ডায়েট তালিকায় রাখতে পারেন ২টি করে আমলকি। প্রতিদিন সকালে ২টি করে আমলকি নিয়মিত খেলে ওজন কমার পাশাপাশি আরও অনেক উপকার পাবেন যা ইতিপূর্বে আলোচনা করেছি।

হজমশক্তি বৃদ্ধিতে আমলকি: কথায় আছে “পেট ঠিক যার সব ঠিক তার”। অর্থাৎ আমাদের অন্ত্রের পাচন প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করে আমাদের শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো পারফর্ম করে। আর এই পাচন প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করে হজমশক্তি বৃদ্ধিতে আমলকি খুবই ফলপ্রসূ। তাছাড়া পাচন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকলে বদহজম, কোষ্ঠ্যকাঠিন্য ও পাইলসের মত রোগ থেকে খুব সহজেই মুক্তি মেলে।

শরীরে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে আমলকি: আমলকি নিয়মিত খেলে শরীর চাঙ্গা থাকে এবং শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। 

সর্দি-কাশির মহৌষধ আমলিক: সর্দি-কাশি মূলত ব্যাক্টেরিয়াল সংক্রমণের জন্য হয়ে থাকে। শরীরে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে তাহলে সর্দি-কাশির মত সাধারণ সমস্যাগুলো সহজে হবে না। আর পূর্বেই বলেছি শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৃদ্ধিতে আমলকি টনিক এর মত কাজ করে। এছাড়া সর্দি-কাশিতে আমলকির নির্যাসের সাথে মধু মিশিয়ে নিয়মিত খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আমলকি: আমলকিতে ক্রোমিয়াম নাম এক প্রকার রাসায়নিক যৌগ আছে আমাদের দেহের ইনসুলিন উৎপাদনে কাজ করে তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আমলকি খুবই কার্যকরী। নিয়মিত আমলকি খাওয়ার অভ্যাস কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

শুকনো আমলকি খেলে কি হয় এবং খাওয়ার নিয়ম

শুকনো আমলকি খাওয়ার উপযোগী করতে প্রথমে পরিমাণমতো আমলকি কেটে ছোট ছোট টুকরো করে ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। তারপর সেগুলোকে ব্লেন্ড করে হাইজেনিক কোনো জারে বা বোতলে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করে রাখা যায়। তারপর নিম্নলিখিত উপায়ে খুব সহজেই সেবন করা যায়।

অ্যাসিডিটি থেকে দূরে থাকতে আমলকি: একগ্লাস পানির সাথে এক চামচ আমলকির চূর্ণ মিশিয়ে নিয়মিত পান করার অভ্যাস করতে পারলে অ্যাসিটিডির মত বিরক্তির সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব। তবে যারা যথারীতি অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভোগছেন তাদের আমলকি এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।

রুচিবর্ধনে আমলকির উপকারিতা: যাদের খাবারে অনীহা তারা যদি আমলকির গুড়ার সাথে মধু মিশিয়ে নিয়মিত খান তাহলে খাবারে রুচি বৃদ্ধি পাবে।

গর্ভাবস্থায় মায়েদের আমলকি খেলে কি হয়?

প্রচুর ভিটামিন সি, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ আমলকি ফলটি গর্ভবতী মায়েদের জন্য খুবই উপকারী। নিচে গর্ভবতী মায়েদের জন্য আমলকির উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
  • স্বাভাবিকভাবেই গর্ভাবস্থায় অনেক মায়েদের শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন কমে যায়। আমলকিতে থাকা অ্যান্টি-ডায়াবেটিস উপাদান গর্ভবতী মায়েদের ইনসুলিন উৎপাদন স্বাভাবিক রাখে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করে। আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গর্ভাবস্থায় অনেক মায়েদের রক্তচাপ ওঠানামা করে। তাই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত আমলকি খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখা যায়।
  • বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভবতী মা যদি নিয়মিত আমলকির জুস পান করেন তাহলে গর্ভস্থ শিশুর স্মৃতিশক্তি প্রখর হয়।প্রায়শই গর্ভাবস্থায় কিংবা প্রসবের পরে মায়েরা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন। নিয়মিত আমলকি খেলে এতে থাকা উচ্চমাত্রার ফাইবার মায়েদের কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে।
  • গর্ভাবস্থায় মায়েদের ক্লান্তি, অবসাদ, বমি বমি ভাব ও খিটখিটে মেজাজ দূর করতে আমলকির নির্যাস খুবই ফলপ্রসূ।
  • গর্ভাবস্থায় মায়েরা ইচ্ছে করলেই জ্বর-সর্দি-কাশির মত সাধারণ সমস্যার জন্য ওষুধ সেবন করতে পারেন না। আমলকিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রাকৃতিক উপায়ে রোগ প্রতি ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং জ্বর-সর্দি-কাশির মত সাধারণ সমস্যাগুলো প্রতিহত করতে পারে। এজন্য বিশেষজ্ঞরা গর্ভবতী মা’দেরকে নিয়মিত আমলকি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

খালি পেটে আমলকি খেলে কি হয় / খালি পেটে আমলকি খাওয়ার উপকারিতা

আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে খুবই কার্যকর। তবে আমলকির পুষ্টিগুণ সঠিকভাবে কাজে লাগে যদি সঠিক নিয়মে খাওয়া যায়। আমলকির সঠিক গুণাগুণ অক্ষুন্ন রাখতে নিম্নোক্ত উপায়ে খালি পেটে খেতে পারেন। 
খালি পেটে আমলকি খেতে নির্দিষ্ট পরিমাণ কাঁচা আমলকি কেটে ছোট ছোট টুকরো করে কুসুম গরম পাানিতে ঘণ্টাখানিক ভিজিয়ে রাখুন। তারপর সকালে খালি পেটে আমলকি ভিজানো পানি খেয়ে নিন সাথে আমলকির অবশিষ্ট অংশগুলোও খেয়ে নিতে পারেন। এভাবে নিয়মিত কিছুদিন খেলে নিম্নলিখিত রোগগুলো থেকে নিজেকে নিরাপধে রাখতে পারবেন।
  • ফ্রি র‌্যাডিকুলার প্রতিনিয়ত আমাদের দেহ কোষকে ধ্বংস করছে। আমলকিতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সেই ফ্রি র‌্যাডিকুলারকে প্রতিহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে আমলকির এই অ্যান্টি অক্সিডেন্ট খালি পেটে কয়েকগুণ বেশি কার্যকর।
  • আমলকিতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান শরীরের বিপাকীয় কাজকে ত্বরান্বিত করে।
  • শরীরে থাকা বিষাক্ত টক্সিনকে নির্মুল করতে খালিপেটে খাওয়া আমলকির নির্যাস খুবই কার্যকর।
  • শরীরের খারাপ চর্বি গলিয়ে অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করেব্রণ, ত্বকের ভাজ ও ছোপ ছোপ কালো দাগ ইত্যাদি সমস্যা সমাধানে আমলকি খুবই উপকারী।
  • উল্লেখিত উপায়ে নিয়মিত আমলকি খেলে চুল হবে ঘন, লম্বা, উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর।

প্রতিদিন কয়টা আমলকি খাওয়া উচিত

অধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই ঔষধি ফলটি খাওয়ার ক্ষেত্রেও কিছুটা নিয়ম মানা উচিত। কেননা এই ফলটি অতিরিক্ত খেলে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমলকির পুষ্টিগুণের সর্বোচ্চ ফল পেতে প্রতিদিন খালিপেটে ১-২টি আমলকি খাওয়া উত্তম, তবে ভরা পেটেও খাওয়া যায়। বেশি আমলকি খাওয়ার ফলে নানাবিধ সমস্যার সম্ভাবনাকে বিবেচনা করে বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন ২টির বেশি আমলকি না খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

কাদের আমলকি খাওয়া উচিত নয়

উপরে আমরা জেনেছি আমলকি খেলে কি হয় বা এর উপকারিতা সম্পর্কে তবে নিউটনের সূত্রানুযায়ী প্রত্যেক ক্রিয়ারই বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। ঠিক তেমনি হাজারও গুণে গুণান্বিত হওয়া সত্ত্বেও আমলকিরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। নিচে যাদের আমলকি খাওয়া উচিত নয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত উপস্থাপন করা হলো:
  • শরীর পানিশূন্যতায় ভোগলে এই ফলটি খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
  • বিশেষজ্ঞরা প্রস্রাবে জ্বালাপোড়ায় ভোগা রোগীদের আমলকি এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এই রোগীরা আমলকি খেলে জ্বালাপোড়া আরও বেড়ে যায় এবং প্রস্রাবে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়।
  • যদিও অপারেশনের পর বিশেষজ্ঞরা রোগীদের ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন তবে আমলকির ক্ষেত্রে একটু ভিন্ন। অপারেশনের পরপর রোগীকে অতিরিক্ত পরিমাণে এই ফলটি না খাওয়ার পরমর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ অতিরিক্ত আমলকি খেলে রক্তপাত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
  • আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে যার ফলে অতিরিক্ত পরিমাণে আমলকি খেলে এবং সেই তুলনায় পানি কম খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • আমলকি অ্যাসিডিটি থেকে সুরক্ষা দেয় ঠিকই কিন্তু ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় যারা যথারীতি অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভোগছেন তাদের উচিত অতিরিক্ত আমলকি খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখা। অন্যথায় অ্যাসিডিটির সমস্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • অতিরিক্ত আমলকি খেলে শরীরের সোডিয়ামের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। আর পরিমাণের বেশি সোডিয়াম কিডনিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
  • আমলকি এবং আদা মিশ্রিত নির্যাস লিভারকে প্রভাবিত করে। এজন্য বিশেষজ্ঞরা আমলকি ও আদা একসাথে না খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

লেখকের মন্তব্য

অতি উচ্চমাত্রার ভেষজগুণসম্পন্ন ভিটামিন সি সমৃদ এই ফলটি খুবই সহজলভ্য হওয়ায় আমরা এর নানাবিধ ব্যবহার দেখতে পাই। হাজারো উপকারের মাঝে আমলকির কিছু সীমাবদ্ধতা আছে । তাই চিকিৎসার জন্য এই ফলটি ব্যবহারের পূর্বে কোনো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করার পরামর্শ রইল। তথ্যটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তবে তা শেয়ার করে অন্যকে উপকৃত হওয়ার সুযোগ দিন। 

আমি মনে করি আপনিও দর্পণ পরিবারের একজন সদস্য তাই এই আর্টিকেলে কোনো প্রকার সংশোধন, সংযোজন ও পরিমার্জনের প্রয়োজন হলে আপনার সুচিন্তিত মতামত সাদরে গ্রহণযোগ্য। আপনার মতামত জানাতে কমেন্টবক্সে কমেন্ট করতে পারেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করেনি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনার সুচিন্তিত মতামত দিয়ে MrDorpon কে আরও সমৃদ্ধ করতে সহযোগিতা করুন। আপনার মতামতটি রিভিউর পর Published করা হবে।

comment url