গাভীর গরম হওয়ার লক্ষণ এবং দুগ্ধবতী গাভীর যত্ন
গাভীর গরম হওয়ার লক্ষণের সাথে গাভীর প্রজনন, গর্ভধারণ, বাচ্চা প্রসব এবং দুধ উৎপাদনসহ দুগ্ধজাত খামার ব্যবস্থাপনার প্রতিটি ধাপ ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। গাভী হিটে আসার পর তার প্রজনন ক্রিয়া থেকে শুরু করে গর্ভবতী সময়, প্রসবকালীন এবং প্রসব পরবর্তী দুগ্ধবতী গাভীর যত্ন নেওয়া দুগ্ধজাত খামার ব্যবস্থাপনার নিত্যদিনের আবশ্যিক কাজ।
দুগ্ধজাত খামার ব্যবস্থাপনায় গাভীর গরম হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে সম্মক ধারণা রাখা একজন খামারীর জন্য একান্ত অপরিহার্য। কেননা দুগ্ধজাত খামারের আয়ের মূল উৎসই হচ্ছে দুধ যা বাচ্চা প্রসবের পরই পাওয়া যায়। আর বাচ্চা প্রসবের পূর্বশর্তই হচ্ছে গাভী হিটে আসলে তাকে প্রজননের ব্যবস্থা করা।
ভূমিকা
বর্তমানে খামার ব্যবস্থাপনায় দুগ্ধজাত খামারই বেশ লাভজনক কিন্তু অধিক কষ্টদায়ক। পরিশ্রমী খামারী ছাড়া দুগ্ধজাত খামারে সফলতা অর্জন খুবই কঠিন। তবে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সময়ের কাজ সময়ে করলে খুব সহজেই দুগ্ধজাত খামারে লাভবান হওয়া যায়। এক্ষেত্রে খামারীকে প্রথম চালানে দুগ্ধজাত গাভী নির্বাচনে সতর্ক থাকতে হবে এবং পরবর্তীতে উক্ত গাভীকে প্রজননের সময় সঠিক পদ্ধতিতে উন্নতমানের বীজ প্রয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।
দুগ্ধজাত খামারে সফলতার জন্য উন্নত জাতের গাভীর পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ সুষম খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। কেননা গাভীর দুধ উৎপাদনশীলতা নির্ভর করে গাভীর খাদ্যাভ্যাস ও খাদ্যের পরিমাণের উপর। তাই দুগ্ধজাত খামারে আশানুরূপ ফল পেতে খামারীকে অবশ্যই গাভীর খাবারের দিকে সর্বোচ্চ খেয়াল রাখতে হবে।
গাভীর খামার ব্যবস্থাপনা
খামার ব্যবস্থাপনা হলো খামারের প্রাণ। পরিকল্পিত ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা খামারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সহজতর করে তোলে। খামার ব্যবস্থাপনা যত সুষ্ঠু ও নিয়মতান্ত্রিক হবে খামারর উদ্দেশ্য অর্জন তত সহজ ও সফল হবে। একটি খামারের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় নিম্নোক্ত বিষয়গুলো সর্বাধিক বিবেচ্য ও গ্রহণযোগ্য:
- সম্পদের মিতব্যয়িতা
- অল্প সময়ে অধিক উৎপাদন
- স্বল্প সময়ে অধিক লাভ
- শক্তি ও শ্রমের অপচয় রোধ
- উৎপাদনে গুণগত মান ও উৎকর্ষতা লাভ
- সর্বাধিক পরিতৃপ্তি
দুগ্ধজাত খামার ব্যবস্থাপনার কর্মপরিকল্পনা
- খামারের স্থান নির্বাচন: খামারের স্থান উঁচু ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে হতে হবে। খামারটি হতে হবে লোকালয় থেকে কিছুটা দূরে কিন্তু থাকতে হবে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা। খামারটি এমন জায়গায় গড়ে তুলতে হবে যেন খামারের পাশে ঘাস চাষের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা থাকে। সাধারণত জলাশয়ের পাশে খামার স্থাপন না করাই শ্রেয়।
- গোশালা নির্মাণ: গাভী বা গরুর সংখ্যার উপর নির্ভর করে গোশালা নির্মাণ করা হয়। তবে গোশালা নির্মাণের সময় এমনভাবে নির্মাণ করতে হবে যেন ভবিষ্যতে গরুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে গোশালা সম্প্রসারণ করা যায়। মনে রাখতে হবে, খামার ব্যবস্থাপনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে গোশালা নির্মাণ। তাই কাজ শুরুর পূর্বে গরুর খামার তৈরীর নকশা এঁকে এবং গরুর বাসস্থান তৈরির সকল নিয়ম সম্পর্কে জেনে গোশালা নির্মাণ কাজ শুরু করতে হবে। সাধারণত ১০টির কম গরুর জন্য এক সারি বিশিষ্ট গোশালাই যথেষ্ট কিন্তু ১০ বা তার অধিক গরুর জন্য দ্বি-সারি বিশিষ্ট গোশালা উত্তম।
- গাভী নির্বাচন: লাভজনক খামার ব্যবস্থাপনায় সফলতার পূর্ব শর্তই হচ্ছে উন্নত জাতের গাভী নির্বাচন। অধিক উৎপাদনশীল ভাল জাতের সুস্থ গাভী খামারে রাখতে হবে। আমাদের দেশের আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে শতভাগ উন্নত বিদেশী জাতের গাভী পালন অলাভজনক ও ঝুঁকিপূর্ণ।তাই খামারে উন্নত সংকর জাতের গাভী রাখতে হবে যার দুগ্ধদান ক্ষমতা দৈনিক কমপক্ষে ১০ লিটার হয়। খামার থেকে অলাভজনক গাভী ছাঁটাই করতে হবে।
- সুষম খাদ্য সরবরাহ: গাভীকে দৈনিক প্রয়োজন মত সুষম খাদ্য দিতে হবে। গাভীকে এমন খাদ্য দিতে হবে যাতে সুষম হয় এবং দামেও সস্তা হয়। গাভীকে প্রয়োজনের বেশি অতিরিক্ত খাদ্য প্রদান করা উচিত নয়। প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্য অপচয় ব্যতিত আর কিছুই নয়। গাভীকে এবং খামারের অন্যান্য পশুকে দৈনিক প্রচুর পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পান করাতে হবে।
- পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা: গোশালা সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। পশুর গোবর, মলমূত্র পরিস্কারের জন্য আধুনিক প্রযুক্তির পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা রাখতে হবে। আধুনিক প্রযুক্তির পয়ঃনিষ্কাশন পদ্ধতি একদিকে যেমন গোশালার শতভাগ শতভাগ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করে অন্যদিকে সময় ও শ্রমও অনেক কম লাগে।
- গাভীর মলমূত্রের সংরক্ষণ: জৈব সার হিসেবে গাভীর গোবর ও মূত্রের চাহিদা ব্যাপক। একটা নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর এই মলমূত্র থেকে একটা ভালো এমাউন্ট উপার্জন করা সম্ভব। তাই গাভীর মলমূত্র সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষনে যত্নশীল হতে হবে।
- উন্নত প্রজনন ব্যবস্থা: গাভীর প্রজনন ব্যবস্থা উন্নত রাখতে হবে যেন যথাসময়ে গাভী গার্ভধারণ করে এবং সুস্থ ও স্বাভাবিক বাচ্চা প্রসব করে। গাভী সময়মত গর্ভধারণ না করলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। অনুর্বর গাভী খামারে রাখা উচিত নয়।
- খামারে উৎপাদিত পণ্য সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ: খামারে উৎপাদিত দুধ ও দুগ্ধজাত যেকোনো পণ্য সংরক্ষণে আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করে বাজারজাতকরণে যথেষ্ট মনোযোগী হতে হবে। বাজারের চাহিদা ও বাজারজাতকরণের সুবিধা সৃষ্টি করতে হবে। এর জন্য প্রচার মাধ্যমের সুবিধা গ্রহণ করা যেতে পারে।
- সময়ের সদ্বব্যহার: খামার ব্যবস্থাপনার দৈনন্দিন কাজের সহজ পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করতে হবে। খামার লাভজনক রাখতে সময়ের কাজ সময়ে করতে হবে।
- প্রশিক্ষিত কর্মী নিয়োগ: খামারের মালিক, তত্ত্বাবধায়ক এবং খামারে নিয়োজিত প্রতিটি কর্মী নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন এবং শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। খামার তত্ত্বাবধান এবং ব্যবস্থাপনার ওপর কর্মীর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা প্রয়োজন। খামার ব্যবস্থাপনার প্রতিক্ষেত্রেই আধুনিক ধ্যান ধারণা ও পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।
- পশু চিকিৎসক নিয়োগ: যদিও আমাদের দেশের খামারে পশু চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়ে উঠে না তবুও একজন দক্ষ পশু চিকিৎসকের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। প্রয়োজনে খন্ডকালীন কোনো চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। সেসব চিকিৎসকের কাজ হবে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর খামার পরিদর্শন করা এবং জরুরী প্রয়োজনে পশুর সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা।
- রেকর্ড নথিভূক্তকরণ: খামারের সমূদয় রেকর্ড বা নথিপত্র সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা খামার ব্যবস্থাপনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
খামারে যেসব নথিপত্র সংরক্ষণ করতে হবে তা নিচে উপস্থাপন করা হলো:
- খামারের যাবতীয় সম্পত্তি, ঘর-বাড়ি, বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী, খামারে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, তৈজসপত্র ও তার মূল্যের তালিকা।
- শ্রমিক কর্মচারীর তালিকা, তাদের বেতনভাতা, দক্ষতা, দায়-দায়িত্ব ইত্যাদি রেকর্ড পত্র।
- খামারের আবর্তন খরচ ও আয়ের হিসাব, যেমন- দৈনন্দিন, মাসিক, বার্ষিক খাত অনুপাতে খরচ এবং উৎপাদিত পণ্যের বিক্রলব্ধ আয়ের হিসাব।
- খামারের বাৎসরিক প্রতিবেদন, বাৎসরিক খরচের বরাদ্দ, তুলনামূলক খরচের বরাদ্দ, বাৎসরিক পর্যালোচনা, প্রতিবেদন ইত্যাদির নথিপত্র সংরক্ষণ করা।
- গরুর জাত, জন্মের সময়সহ গরুর যাবতীয় ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে রাখা।
গাভীর গরম হওয়ার লক্ষণ
দুগ্ধ খামারের দৈনন্দিন কোন গাভীটি কখন গরম হয়ে উঠে তা সঠিকভাবে নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময়মত গাভীর গরম নির্ধারণ করতে না পারলে গাভীর নিয়মিত বাচ্চা ও দুধ প্রদানে বিঘ্ন ঘটে ফলে গাভীকে পুনরায় গরম হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এতে গাভী গর্ভধারণ পিছিয়ে যায়। দুগ্ধজাত খামার লাভজনক করতে হলে গাভীর প্রজনন ব্যবস্থা করতে হবে।
গাভী ডাক আসার পর গরম বা উত্তেজনার সময় মাত্র ৬-১৮ ঘণ্টা। গাভীকে সঠিক সময়ে প্রজনন করার জন্য ডাক আসার ১২-১৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রজনন করালে গর্ভধারণের হার সবচাইতে বেশী পাওয়া যায়। প্রজননের সঠিক সময় হলো যদি গাভী সকালে ডাক আসে তবে ঐ দিন বিকালে প্রজনন করাতে হবে অথবা গাভী বিকালে ডাক আসলে পরের দিন সকালে প্রজনন করালে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
প্রযুক্তির বদৌলতে গাভীর গরম হওয়ার লক্ষণ নির্ণয়ের একাধিক পদ্ধতি রয়েছে। নিচে গাভীর গরম হওয়া বা হিট আসা নির্ণয়ের বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো:
চাক্ষুস এবং ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ: চাক্ষুস এবং ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ গাভীর হিট নির্ণয়ের একটি উৎকৃষ্ট পদ্ধতি যার বিশ্বস্থতা প্রায় ৭০-৯০%। এই পদ্ধতিতে গাভীর গরম হওয়ার লক্ষণগুলো নিম্নরূপ:
- ইস্ট্রোজন হরমোন বৃদ্ধির ফলে জরায়ু মুখ থেকে শ্লেষ্মা নির্গত হয়। এই শ্লেষ্মা যোনীপথ দিয়ে বের হতে পারে এবং তা লেজে ও রানে লেগে থাকতে পারে।
- হিটে আসা গাভী অন্য গরুকে তার উপর লাফিয়ে ওঠার সুযোগ করে দেয় এবং অন্য গরু লাফিয়ে উঠলেও দ্রুত সরে যায় না।
- গাভী গরম হবার পূর্বে কিংবা গরম হওয়র শুরুর দিকে অন্য গরুর উপর লাফিয়ে উঠে। তবে গরম হওয়ার মাঝামাঝি সময় এই লক্ষণ থাকে না।
- অস্থিরতা, হাম্বা-হাম্বা ডাকা ও ছোটাছুটি করাও হিটে আসা গরুর লক্ষণ।
- গরম হওয়া গাভীর যোনীমুখ ফুলে যায় এবং ভিতরের দিকে লাল হয় ও ভেজা থাকে।
- অন্য গরুর পিঠের উপর থুতনি ঠেকিয়ে রাখা ও পাছায় মুখ ঘষা।
- অন্য গরুর যোনীর ঘ্রাণ নেওয়া ও মাথা উঠিয়ে জিহ্বা বের করা।
- গাভী গরম হলে হঠাৎ করে খাদ্য গ্রহণ ও দুধ উৎপাদন কমে যায়।
- পস্রাবের পরিমাণ কমে যায় এবং ঘনঘন পস্রাব করে।
- গরম হওয়া গাভী সাধারণত লেজ উঁচিয়ে রাখে।
- গরম হওয়ার ১-৩ দিন পরে কোন কোন গাভীর যোনীপথ দিয়ে রক্ত বের হয়।
হিট বা গরম প্রত্যাশা চার্ট পদ্ধতি: এই পদ্ধতি খুব সহজ ব্যবস্থাপনা এবং গুরুত্বপূর্ণ হিট নির্ণয় কৌশল। এই পদ্ধতিতে গাভীর হিট আসার দিনক্ষণ লিপিবদ্ধ করা হয় এবং পরবর্তী হিট কখন আসতে পারে তা অনুমান করে নথিভূক্ত করা হয়। সম্ভাব্য সেই সময়ে ভালোভাবে লক্ষ্য রাখলে সহজে হিট নির্ণয় করা যায়। এই পদ্ধতিটি ম্যানুয়ালী বা কম্পিউটার বেইজ সিস্টেম তৈরী করে লিপিবদ্ধ করা যায়।
ট্র্যান্সরেক্টাল আলট্রাসনোগ্রাফি পদ্ধতি: এই পদ্ধতিতে বিভিন্ন প্রাণীর আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে হিট নির্ণয় করা যায়। এই পদ্ধতিতে ট্রান্সরেক্টাল প্রুভ দিয়ে অভারিতে হিট পিরিয়ডে প্রাপ্ত বয়স্ক ফলিকুলের আকার দেখে পশু গরম হওয়া নির্ণয় করা যায়।
ভ্যাজাইনাল পিএইচ পদ্ধতি: ভ্যাজাইনাল পিএইচ পশুর গরম নির্ধারণের জন্য একটি সুন্দর নির্ণায়ক। পশু হিটে আসার একদিন পূর্বে পিএইচ কমে ৭.০০ থেকে নেমে ৬.৭২ হয় এবং অভুলেশন (ডিম্বস্ফোটন) হওয়ার কিছু সময় পূর্বে এই পিএইচ মান আরো কমে ৬.৪৫ হয়ে যায়।
ভ্যাজাইনাল স্মিয়ার পদ্ধতি: হিট পিরিয়ডে ভ্যাজাইনাল স্মিয়ার করে দেখলে কর্নিফাইড এসিডোফিল কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি দেখাবে।
টিজার বুল পদ্ধতি: বড় বড় খামারে টিজার বুল দ্বারা গরম নির্ণয় করা হয়। ভ্যাসেকটমি ও পিনাইল ডেভিয়েশন এই দুইভাবে টিজার বুল তৈরী করা যায়। টিজার বুল দ্বারা হিট নির্ণয় ১০০% নিশ্চিত হওয়া যায়।
ভ্যাজাইনাল প্রুভ পদ্ধতি: ভ্যাজাইনাল প্রুভের মাধ্যমে হিটে আসা গাভীর ভ্যাজাইনাল কোষের ইলেকট্রিক রেজিস্ট্যান্ট মাত্রা কমে যাওয়া এবং কনডাকটিভিটির মাত্রা বেড়ে যাওয়া দেখে হিট আসা নিশ্চিত করা যায়।
পিডোমিটার: গাভী যখন হিটে আসে তখন তার নড়াচড়া এবং হাঁটার পরিমাণ হিট না আসার গরুর তুলনায় ৪ গুণ বেড়ে যায়। এ জন্য একটি ভিডিও মিটার গাভীর ঘাড়ে অথবা পায়ে লাগানো হয় এবং তা কম্পিউটারে দেখা যায়। এএলটি (একটিভিটি, লাইং এবং টেম্পারেচার) পিডোমিটারের মাধ্যমে প্রকৃত সময় পর্যবেক্ষণ করে কতটুকু কার্যকারিতা বৃদ্ধি পেয়েছে তা দেখে পশুর হিট আসা নির্ণয় করা হয়। এ পদ্ধতিতে হিট নির্ণয়ের সত্যতা প্রায় ৮৫%।
সিসিটিভি ক্যামেরা: সিসিটিভি (ক্লোজ সারকিট টেলিভিশন ক্যামেরা) পদ্ধতির মাধ্যমে রেকর্ডিং করে খামারের তথ্য সংরক্ষণ করা যা আবদ্ধ অবস্থায় খামারে গরুর হিট নির্ণয় করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
গর্ভবতী গাভীর পরিচর্যা
- দুগ্ধজাত খামারের অর্থনীতি মূলত গাভীর দুধ উৎপাদন ও নবজাত বাছুরের অবস্থার উপর নির্ভরশীল। তাই পর্যাপ্ত দুধ ও সুস্থ সবল বাছুরের জন্য গর্ভাবস্থায় গাভীর বিশেষ যত্ন নেওয়া আবশ্যক। নিচে গর্ভবতী গাভীর পরিচর্যায় করণীয় সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো:
- গাভী সাধারণত ২৮০ দিন বাচ্চা গর্ভে ধারণের পর প্রসব করে। তবে ২৭০-২৯০ দিনের মধ্যে যে কোন দিন বাচ্চা প্রসব করতে পারে। তাই গাভীর প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়ার জন্য গাভীর প্রজননের সঠিক তারিখ জানা দরকার।
- গর্ভাবস্থায় শেষ পর্যায়ের তিনমাস ফিটাস অতি দ্রুত বাড়ে। এই সময়ে গাভীর স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ও গর্ভস্থ বাচ্চার স্বাভাবিক বৃদ্ধি অক্ষুন্ন রাখতে অতিরিক্ত খাদ্য ও পরিচর্যা একান্ত প্রয়োজন।
- দুধ উৎপাদনকারী গর্ভবতী গাভীর দুধ উৎপাদনের শেষ ভাগে দেহের সঞ্চিত ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, চর্বি ও অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদানসমূহ দুধের মধ্যে নিঃশেষ হয়ে যায়। তাই গর্ভাবস্থার শেষের ২-৩ মাস গাভীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে সুষম খাদ্য সরবরাহ করা প্রয়োজন।
- বাচ্চ প্রসবের দুই মাস পূর্ব থেকে গাভীকে পূর্ণ বিশ্রামের সাথে সাথে সুষম খাদ্য সরবরাহ করা উচিত। এ লক্ষ্যে কাঁচা ঘাসের সাথে ২-৩ কেজি দানাদার খাদ্য খাওয়ানো উত্তম।
- গর্ভাবস্থার শেষ পর্যায়ে গাভীর সঠিক যত্ন ও সুষম খাদ্যের অভাব হলে গাভী ও তার বাচ্চার স্বাস্থ্যহানি ঘটে এবং দুধ উৎপাদনও কমে যায়। এমনকি গাভী মারাত্মক দুগ্ধজ্বরে আক্রান্ত হবার আশঙ্কাও থাকে।
- গর্ভাবস্থার শেষ পর্যায়ে গাভীকে পাল থেকে সরিয়ে পৃথক পালনের ব্যবস্থা করতে হয়। কারণ একসাথে পালনে গাভী মেঝেতে পিছলে পড়ে যেতে পারে কিংবা ঠাসাঠাসি করে দরজা দিয়ে ঢুকা বা বের হওয়ার সময় গর্ভবতী গাভীর মারাত্মক ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে।
- বাচ্চা প্রসবের ২-৩ দিন পূর্বে গাভীর ওলান ও যোনিমুখ স্ফীত হয়। এসময় গাভীর যোনিপথ দিয়ে মিউকাস বের হয় যা লেজের গোড়ার চারপাশে লেগে থাকতে দেখা যায়। এ সময় গাভীকে বাচ্চ প্রসবের ঘরে নিয়ে রাখতে হয়।
- প্রসব ঘর পরিস্কার, পর্যাপ্ত আলো চলাচলের ব্যবস্থা খড়ের ভালো বিছানা ও ঘর জীবানুমুক্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়।
গাভীর প্রসবকালীন পরিচর্যা
প্রসবকালীন গাভীর পরিচর্যা সঠিকভাবে করতে হলে প্রসবের লক্ষণগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। গাভীর প্রসবের লক্ষণগুলো নিম্নরূপ:
- গাভীর ওলান বড় হয়ে যাবে এবং বাঁট দিয়ে দুধজাতীয় তরল পদার্থ বের হবে।
- যোনিমুখ বড় হবে এবং ফোলা ফোলা হয়ে ঝুলে যাবে।
- পেট ঝুলে পড়বে এবং লেজের গোড়ার দুই পাশে রগের স্থানে গর্তের মত হবে।
- যোনিমুখ দিয়ে আঠালো তরল পদার্থ বের হবে।
- গাভী ঘন ঘন প্রস্রাব করবে।
গাভীর মধ্যে উপরোক্ত লক্ষণগুলো পরিলক্ষিত হলে গাভীর প্রসবকালীন পরিচর্যার জন্য নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:
- গাভীর যখন বাচ্চা প্রসবের সময় হয় তখন তাকে একটি উম্মুক্ত নিরিবিলি স্থানে রাখতে হবে। স্থানটি এমন হবে যেন সহজে বাহিরের কোনো লোকের চোখে না পড়ে।
- প্রসবের সময় অন্য কোনো পশু, যেমন- কুকুর, বিড়াল, শিয়াল ইত্যাদি যেন না আসতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে।
- গাভীর প্রসবের স্থান পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং সে স্থানে পরিস্কার শুকনা খড়ের নরম বিছানা করে দিতে হবে।
- স্বাভাবিক অবস্থায় বাচ্চা প্রসবের ক্ষেত্রে প্রথমে বাচ্চার সামনের দু’পা এবং নাক ও মুখ বের হয়। সেক্ষেত্রে গাভীকে স্বাভাবিক প্রসবের জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়া প্রয়োজন। সুস্থ সবল গাভীর ক্ষেত্রে তেমন অতিরিক্ত সাহায্যের প্রয়োজন হয় না।
- বাচ্চা প্রসব না হওয়া পর্যন্ত সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন। প্রসবে অস্বাভাবিক অবস্থা বা জটিলতা দেখা দিলে তাৎক্ষণিক অভিজ্ঞ ভেটেরিনারি সার্জনের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।
- প্রসবকালীন সময়ে গাভী বারবার উঠা-বসা করবে। এ সময় অতি সাবধানে বাছুরকে ধরে আস্তে আস্তে টেনে ভুমিষ্ট করাতে হবে।
- স্বাভাবিক প্রসব হয়ে গেলে বাছুরকে গাভীর সামনে দিতে হবে যাতে গাভী বাছুরের শরীর চেটে পরিস্কার করে দেয়।
- গাভী বাচ্চা প্রসবের পর অল্প গরম পানিতে ০.০১% পাটশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট মিশিয়ে গাভীর যৌন অঙ্গ, দেহের পশ্চাৎ অংশ ও লেজ ভালোভাবে পরিস্কার করে দিতে হবে। এক্ষেত্রে নিমপাতা মিশ্রিত গরম পানি অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে।
- প্রসবের পরপরই একটি বালতিতে কুসুম গরম পানির সাথে দেড় কেজি গমের ভূসি, আধা কেজি চিটাগুর, ভাতের মাড়, ৫০ গ্রাম লবণ মিশিয়ে গাভীকে খেতে দিতে হবে। এরূপ খাদ্য খাওয়ালে গাভীর গর্ভফুল তাড়াতাড়ি পড়ে যেতে সহায়তা করবে। তাছাড়া কুসুম গরম পানিতে ঝোলাগুড় মিশিয়ে গাভীকে খাওয়ানো যেতে পারে।
- গাভীর গর্ভফুল পড়ার সাথে সাথে সেটা দূরে গর্ত করে পুতে ফেলতে হবে। গাভী গর্ভফুল খেয়ে ফেলতে পারে যার ফলে গাভীল বদহজমসহ দুধ উৎপাদন কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। স্বাভাবিকভাবে গর্ভফুল না পড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
- প্রসবের পর গাভীর যেন ঠান্ডা না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ঠান্ডার দিনে গাভী বাচ্চা প্রসব করলে আগুন জ্বালিয়ে গাভী ও বাছুরের শরীর গরম করার ব্যবস্থা করতে হবে।
- বাছুরকে ধরে গাভীর বাঁট চুষে দুধ খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এতে গাভী দেরিতে দুগ্ধহীনা হবে। বাছুর বাঁট চুষলে গাভীতে এক ধরনের উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়ে দুগ্ধদানের হরমোন নিঃসৃত হয়।
- বাচ্চা প্রসবের সময় বা পরে গাভীল ওলানে প্রচুর শাল দুধ বা কলস্ট্রাম জমা থাকে। বাছুরকে এ দুধ না খাওয়ালে বা দুধ দোহায়ে ফেলে না দিলে ওলান শক্ত হয়ে ওলান প্রদাহ ও দুগ্ধজ্বর হতে পারে।
- গাভী দোহনের আগে ও পরে ওলান, তলপেট, আশপাশ ইষৎ উষ্ণ পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। বাছুরকে দুধ খাওয়ানের আগেও অনুরূপভাবে ধুয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে। বাঁটের মাধ্যমে রোগজীবাণু সংক্রমিত হয়ে ওলান প্রদাহ হতে পারে।
- গাভীকে প্রসবের ২-৩ দিন পর্যন্ত রেচক জাতীয় খাদ্য ও কাঁচা ঘাস খাওয়াতে হবে। তারপর থেকে দানাদার জাতীয় খাদ্য খাওয়ানো শুরু করতে হবে। প্রসবের ২ সপ্তাহ পর থেকে গাভী স্বাভাবিক অবস্থার মত যেকোনো খাদ্য খেতে পারবে।
- গাভীর শাল দুধে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। শাল দুধের সাথে অধিক পরিমাণে ক্যালসিয়াম বের হয়ে যাওয়ার ফলে পশুর ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত রোগ দুধজ্বর হতে পারে। এজন্য গাভীকে প্রচুর কাঁচা সবুজ ঘাস এবং খনিজ মিশ্রিত দানাদার খাদ্য খাওয়াতে হবে।
দুগ্ধবতী গাভীর যত্ন
দুগ্ধবতী গাভীর উপযুক্ত যত্ন ও পরিচর্যা না হলে দুধ উৎপাদন কমে যায় এবং নানান রোগব্যাধির আক্রমণ ঘটতে পারে। তাই গুদ্ধবতী গাভীর সর্বোচ্চ দুধ উৎপাদন, উর্বরতা ও স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য নিম্নোক্ত যত্ন ও পরিচর্যার প্রয়োজন হয়।
- গাভীকে খাদ্য খাওয়ানো, শরীর পরিস্কার, দুধ দোহন, ব্যায়ম প্রভৃতি কাজ নিয়মিত যথাসময়ে করতে হয়।
- প্রত্যহ কমপক্ষে দুবার গোশালার মেঝে পরিস্কার করতে হয়। এছাড়া গোশালার দেয়াল, মেঝে, নালা নর্দমা ইত্যাদি ডেটল বা ফিনাইল মিশ্রিত পানি দিয়ে প্রত্যহ পরিস্কার করতে হবে।
- গাভীকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে গ্রীষ্মকালে প্রতিদিন এবং শীতকালে সপ্তাহে দু’বার গোসল করিয়ে কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হবে। এছাড়া ব্রাশ দিয়েও গাভীর শরীর সকাল-বিকাল পরিস্কার করা যায়।
- গাভীর দুধ উৎপাদনের পরিমাণ খাদ্য খাওয়ানোর উপর নির্ভর করে। গাভীর দৈহিক ওজন, উৎপন্ন দুধের পরিমাণ, দুধে চর্বির মাত্রা, গর্ভাবস্থা ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে পরিমাণমত খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করে খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। উপযুক্ত পরিমাণ সুষম খাদ্য ও পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি নিয়ম করে খাওয়াতে হবে।
- গাভীর আরামদায়ক শয়নের জন্য গোশালার মেঝেতে খড় বিছিয়ে দিতে হবে।
- গাভীকে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা গোশালায় রেখে পালন করলে গাভীর স্বাস্থ্যহানী ঘটে। তাই গাভীকে প্রতিদিন ২-৩ ঘণ্টার জন্য মাঠে ছেড়ে দেওয়া উত্তম। একেবারে ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ না থাকলে লম্বা দড়ি দিয়ে উম্মুক্ত জায়গায় বেধে দেওয়া যেতে পারে। এ ব্যবস্থায় গাভীর ব্যায়ামের কাজ হয়।
- নবজাত বাছুরকে শালদুধ খাওয়াতে হবে। এতে বাছুরের উপকারের পাশাপাশি গাভীর দুগ্ধদান ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে ওলানে শালদুধ থেকে গেলে গাভীর ওলান প্রদাহ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং গাভীর দুগ্ধদান ক্ষমতা হ্রাস পায়।
- দুধ দোহনের পূর্বে ওলান, বাঁট ও পেছনের অংশ অল্প গরম পানিতে ডেটল মিশিয়ে কাপড় চুবিয়ে ভালোভাবে মুছে দিলে বিশুদ্ধ ও পরিস্কার দুধ পাওয়া যাবে।
- দুধ দোহনকালে গাভীকে আঘাত বা বিরক্ত করা, লাল কাপড় দেখানো ইত্যাদি অনুচিত। আবার কোন আগন্তুক ব্যক্তি বা আশেপাশে যেন কুকুর-বিড়াল না থাকে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। এসবের কারণে দুধ উৎপাদন কমে যায়।
লেখকের মন্তব্য
‘গাভীর গরম হওয়ার লক্ষণ এবং দুগ্ধবতী গাভীর যত্ন’ শীর্ষক আর্টিকেলটিতে শিরোনামের পাশাপাশি একটি দুগ্ধজাত খামার ব্যবস্থাপনার পূর্ণাঙ্গ কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়েছে। আশাকরি আর্টিকেলটি নতুন এবং পুরাতন সকল খামারীর খামার ব্যবস্থাপনায় সহায়ক হবে। নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে তথ্যগুলো সংগ্রহ, সংকলন ও উপস্থাপন করা হয়েছে।
তারপরও সর্বোচ্চ সতর্কতা নিশ্চিত করতে খামার শুরু করার পূর্বে একজন অভিজ্ঞ খামারীর কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে খামার শুরু করার অনুরোধ রইলো। আর্টিকেলটিতে কোনো তথ্য সংশোধন, সংযোজন ও পরিমার্জনের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হলে কমেন্ট বক্সে আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত সাদরে গ্রহণযোগ্য। আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হলে অন্য খামারীদের সাথে শেয়ার করার অনুরোধ রইল।
তথ্যসূত্র: উকিপিডিয়া, এগ্রোবাংলা, ড. মাহবুব মোস্তফা রচিত আধুনিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ ও চিকিৎসা এবং দুগ্ধবতী গাভী পালন, ড. মো. জালাল উদ্দিন সরদার, অধ্যাপক, এনিমেল হাজবেন্ড্রী এণ্ড ভেটেরিনারি সায়েন্স বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী কর্তৃক রচিত এবং নূর পাবলিকেশন্স, বাংলাবাজার, ঢাকা কর্তৃক প্রকাশিত “লাভজনক পশু পালন ও খামার ব্যবস্থাপনা” বই থেকে নেওয়া। খামার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান অর্জন করতে বই দুটি আপনার সংরক্ষণে রাখতে পারেন। |
আপনার সুচিন্তিত মতামত দিয়ে MrDorpon কে আরও সমৃদ্ধ করতে সহযোগিতা করুন। আপনার মতামতটি রিভিউর পর Published করা হবে।
comment url