গরুর তড়কা রোগের টিকা এবং তড়কা রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা
গরুর তড়কা রোগের টিকাদানই হচ্ছে পশুকে এই মারাত্মক রোগ থেকে নিরাপদে রাখার সর্বোত্তম পন্থা। কারণ আক্রান্ত হওয়ার পর পশুকে চিকিৎসা প্রদানের সময় ও সুযাগ খুবই সীমিত বিধায় তড়কা রোগের চিকিৎসায় তেমন সুফল পাওয়া যায় না।
প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। তাই চিকিৎসার পরিবর্তে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর গরুর তড়কা রোগের টিকাদানের মাধ্যমে জীবনঘাতি এই মারাত্মক রোগ প্রতিরোধ করাই পশুর জন্য শ্রেয়।
ভূমিকা
গবাদি পশুর জন্য অতিতীব্র প্রকৃতির মারাত্মক ব্যাকটেরিয়াল রোগ হলো তড়কা রোগ। এ রোগের তীব্রতা এতটাই প্রকট যে, খুব অল্প সময়ের মধ্যে এই রোগ সম্পূর্ণ খামার, এলাকা কিংবা পুরো অঞ্চল জুড়ে মহামারি আকার ধারণ করে ফেলে। এক সময় আমাদের দেশে ব্যাপক হারে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যেত। খামারীদের সচেতনা ও সঠিক সময়ে ভ্যাকসিনেশনের ফলে এই রোগ অনেকাংশেই কমে গেছে।
মূলত এই রোগ দ্বারা কোনো একটি পশু আক্রান্ত হলে খুব দ্রুত পুরো অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। তাই প্রত্যেক খামারীর উচিত নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর গরুর তড়কা রোগের টিকাদান নিশ্চিত করে নিজ খামারসহ সমগ্র অঞ্চলের পশুসম্পদকে সুরক্ষিত রাখা এবং একজনের অবহেলার কারণে যেন সব খামারীরা ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা।
তড়কা রোগের অপর নাম কি
গবাদি পশুর এই মারাত্মক রোগটি বাংলাদেশের খামারীদের নিকট তড়কা রোগ নামে পরিচিত যা পশু খামারীদের জন্য আতঙ্কস্বরূপ। বাংলাদেশ পশুসম্পদ মন্ত্রনালয় গবাদিপশুর এই রোগের তড়কা নাম দিলেও আন্তর্জাতিকভাবে এই রোগ অ্যানথ্রাক্স (Antrax) নামে স্বীকৃত।
তড়কা রোগের কারণ কি
তড়কা রোগ হচ্ছে গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়াসহ বিভিন্ন গবাদিপশুর জন্য ব্যাকটেরিয়া জনিত সংক্রামক রোগ। সাধারণত বর্ষাকালের শুরুর দিকে গবাদিপশুর মধ্যে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। সম্প্রতি শতভাগ নির্মূল না হলেও সঠিক সময়ে ভ্যাকসিনেশনের ফলে এই রোগে আক্রান্ত পশুর সংখ্যা অনেকটাই কমে এসেছে।
গরুর তড়কা রোগের কারণ হিসেবে Bacillus anthracis নামক এক প্রকার ব্যাকটেরিয়া দায়ী। এই জীবানু বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশে সুপ্ত অবস্থায় রেণু হিসেবে থাকে। উক্ত রেণু পশুর শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে, খাবারের সাথে মিশে কিংবা পশুর মধ্যে থাকা বড়-ছোট যেকোনো ক্ষতস্থানে সংক্রমিত হয়ে পশুদেহে প্রবেশ করে এবং দ্রুত বংশবিস্তার করতে থাকে।
গরুর এনথ্রাক্স রোগের লক্ষণ / তড়কা রোগের লক্ষণ
প্রাথমিক অবস্থায় অ্যানথ্রাক্স বা তড়কা রোগের কোনো লক্ষণ দৃষ্টিগোচর হয় না। রোগটি মূলত অতি তীব্র ও তীব্র আকার ধারণ করলে কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। নিচে তড়কা রোগের অতিতীব্র ও তীব্র প্রকৃতির লক্ষণসমূহ উপস্থাপন করা হলো:
তড়কা রোগের অতি তীব্র লক্ষণ সমূহ:
- কোনা উপসর্গ প্রকাশের পূর্বেই পশু মারা যায়।
- মাঝে মাঝে ১-২ ঘণ্টা স্থায়ী হয়।
- ১০৩ ডিগ্রী থেকে ১০৭ ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রা জ্বর পরিলক্ষিত হয়।
- পেশীর কম্পন, শ্বাসকষ্ট এবং মিউকোসায় রক্ত সঞ্চালন দেখা দেয়।
- খিচুনিজনিত সমস্যা দেখা দেয় এবং মৃত্যুর ঠিক পূর্বমূহুর্তে খিচুনির তীব্রতা অধিকহারে বেড়ে যায়।
- মৃতপশুর স্বাভাবিক ছিদ্র যেমন- মুখ, নাসারন্ধ্র, মলদ্বার, কান ইত্যাদি দিয়ে কালচে রক্ত বের হয়।
তড়কা রোগের তীব্র লক্ষণ সমূহ:
- তড়কা রোগের তীব্র লক্ষণে পশু ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত জীবিত থাকে।
- ১০৪ ডিগ্রী থেকে ১০৭ ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রা জ্বর পরিলক্ষিত হয়।
- জ্বরের পাশাপাশি পশুর ক্ষুধামন্দা নিস্তেজতা দেখা দেয়।
- অগভীর ও দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে দেখা যায়।
- আক্রান্ত পশুর হৃৎপিন্ডের গতি বৃদ্ধি পায়।
- উভয় পাটির দাঁতের ঘর্ষণের ফলে কট্ কট্ শব্দ অনুভূত হয়।
- শরীরের লোম খারা হয়ে যায়।
- পেট ফাঁপা, কাপুনি ও চোখের রক্তাভ পর্দা পরিলক্ষিত হয়।
- আক্রান্ত পশু বেশিরভাগ সময় মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে এবং প্রাণিকে কিছুটা উত্তেজিত দেখায়।
- রক্তমিশ্রিত পাতলা মলত্যাগ করে।
- গর্ভবতী পশুর গার্ভপাত হয়ে যায় এবং সেই সাথে নাক, মুখ, প্রস্রাব ও মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়।
- দুগ্ধবতী গাভী দুধ কমিয়ে দেয় এবং দুধ হলুদ ও রক্তমিশ্রিত দেখায়।
- এ সময় ডায়রিয়া ও ডিসেন্ট্রিও দেখা যায়।
- আক্রান্ত পশু ১ দিনের অধিক জীবিত থাকলে জিহ্বা, গলা, বুক, নাভি, যোনিদ্বার ইত্যাদি স্ফীত হয়ে যায়।
- প্রাণি নিস্তেজ হয়ে শুয়ে পড়ে এবং অবশেষে খিচুনি দিয়ে পশু মারা যায়।
- অনেক সময় পশু মৃত্যুর পর নাক, মুখ, মলদ্বার ও প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে আলকাতরার ন্যায় জমাট বিহীন রক্ত বের হতে দেখা যায়। এই লক্ষণটি অতিতীব্র এবং তীব্র উভয় ক্ষেত্রেই পরিলক্ষিত হয়।
গরুর তড়কা রোগ নির্ণয় পদ্ধতি
গরুর তড়কা রোগের চিকিৎসা তেমন একটা ফলপ্রসু না হওয়ায় আপাত দৃষ্টিতে পশুর এই রোগ নির্ণয় পদ্ধতি জানা অনেকের কাছে নিরর্থক মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা পুরোপুরিই ভিন্ন। কেননা এই রোগের জীবানু এতটাই ভয়ানক যে, আক্রান্ত কিংবা মৃত পশুর জীবানু খুব দ্রুত মহামারি আকারে অন্যান্য পশুর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি অসাবধানতার কারণে এই জীবাণু মানুষের মধ্যেও ছড়াতে পারে।
তাই পশু মারা গেলেও নিশ্চিত হতে হবে পশুটি তড়কা রোগে মারা গেলো কিনা এবং সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নিচে তড়কা রোগ নির্ণয় পদ্ধতি উপস্থাপন করা হলো:
- গবাদিপশু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে খুব দ্রুত মারা যাওয়ার ইতিহাস বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তড়কা রোগের কারণ হতে পারে।
- বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ক্লিনিক্যাল লক্ষণসমূহ, যেমন- পশুদেহের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়া, স্বাভাবিক ছিত্রপথ দিয়ে জমাট বিহীন মরা রক্ত বের হওয়া।
- মারা যাওয়ার পর পেট ফেঁটে যাওয়া।
- মৃত পশুর পোস্টমর্টেম মাধ্যমেও তড়কা রোগ নির্ণয় করা যায়। এক্ষেত্রে পোস্টমর্টেম রিপোর্টে Spleenomegaly পাওয়া যায়।
গরুর তড়কা রোগের টিকা
গবাদি পশুর তড়কা রোগ কিছুটা জুনোটিক প্রকৃতির এবং ছোঁয়াচে। এজন্য এ রোগ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে খুব দ্রুত মহামারি আকার ধারণ করে ফেলে। বিশ্বের সকল দেশে গরু, মহিষ, ঘোড়া, ছাগল, ভেড়া এমনকি মানুষসহ বিভিন্ন প্রজাতির গৃহপালিত পশু এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সন্ধ্যান মেলে। যদিও মানুষের জন্য তড়কা রোগের কোনো টিকা এখনও আবিস্কৃত হয়নি। কিন্তু গরুর তড়কা রোগের টিকাদান নিশ্চিত করে খুব সহজেই পশুকে এ রোগ থেকে নিরাপদে রাখার ব্যবস্থা করা যায়।
তড়কা রোগের টিকা বা অ্যানথ্রাক্স ভ্যাকসিন ১০০ মিলি বোতলে তরল অবস্থায় পাওয়া যায়। এ টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রয়োগের পূর্বে নিম্নলিখিত বিধিনিষেধগুলো অনুসরণ করা একান্ত জরুরী:
- যেকোনা টিকা প্রদানের পূর্বশর্তই হলো আক্রান্ত হওয়ার পূর্বেই টিকা দিতে হবে।
- সর্বোত্তম কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে পশুর ছয় মাস বয়সে প্রথম টিকা দিতে হয়।
- এর পর থেকে প্রতি ০১ বছর অন্তর অন্তর এ টিকা দিতে হয়। অন্যথায় পশু এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি পুনরায় বৃদ্ধি পায়।
- এর কার্যকারিতা এবং গুণগত মান অক্ষুন্ন রাখতে সবসময় ৪ ডিগ্রী থেকে ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় টিকা সংরক্ষণ করতে হয়।
- এমনকি টিকা উৎপাদন থেকে শুরু করে মজুদকরণ, বাজারজাতকরণ এবং পশু দেহে প্রয়োগের পূর্ব পর্যন্ত রেফ্রিজারেটরের মাধ্যমে টিকার জন্য উপরোক্ত তাপমাত্রা নিশ্চিত করতে হবে।
- প্রত্যেকবার প্রতিটি গরু, মহিষ ও ঘোড়ার জন্য ০১ মিলি এবং ছাগল ও ভেড়ার জন্য ০.৫০ মিলি প্রযোজ্য।
- কোনো স্ত্রী পশুর গর্ভকাল ০৬ মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেলে উক্ত পশুকে টিকা দেওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে অন্যথায় পশুর গার্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- তড়কা রোগের টিকা সাধারণত পশুর ঘাড়ের চামড়ার নিচে দিতে হয়। এক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে যেন মাংসপেশীতে টিকা না চলে যায়।
- একাধিক পশুর ক্ষেত্রে টিকাদানের সময় যেকোন একটি পশুকে টিকা দেওয়ার পর ১৫-২০ মিনিট পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যদি কোনো সমস্যা না দেখা দেয় তবেই অন্যান্য পশুর উপর বাকি টিকা প্রয়োগ করতে হবে।
- যখন টিকা দেওয়া হবে তখন খামারের সকল পশুর উপর একসাথে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
- ছায়াযুক্ত স্থানে পশুদের টিকাদান কার্য সম্পাদন করতে হবে।
- সকল পশুর উপর টিকা দেওয়ার পর অবশিষ্ট আংশিক বা সম্পূর্ণ টিকা যথাযথ প্রক্রিয়ায় নষ্ট করে খামার থেকে দূরে কোথাও ফেলতে হবে।
তড়কা রোগের চিকিৎসা
যদিও তড়কা রোগের চিকিৎসা তেমন একটা ফলপ্রসু হয় না তবুও কেউই চায় না বিনা চিকিৎসায় একটি জীবন চোখের সামনে ঝড়ে যাক। তাই তড়কা রোগের চিকিৎসাস্বরূপ নিম্নোক্ত ব্যবস্থাপত্রটি অনুসরণ করা যেতে পারে:
Rx
(০১) | Inj. প্রোনাপেন ভেট-৪০ (Renata) / Inj. কোম্বিনপেন ভেট-৪০ লাখ (ACME)/ Inj. পেনবেসিলিন-৪০ লাখ (ACI) / Inj. বাইপেন ভেট- ৪০ লাখ (Square) |
প্রয়োগবিধি: বড় প্রাণির জন্য একসাতে ২ ভায়াল অর্থাৎ ৮০ লাখ পরিশোধিত ২০ মি.লি. পানিতে মিশিয়ে মাংসপেশীতে দিতে হবে। একই নিয়মে ১২ ঘণ্টা পর পর ইনজেক্ট করলে ভালো সুফল পাওয়া যায়। ১২ ঘণ্টা পর পর ইনজেক্ট করতে একান্তই অসম্ভব হলে, প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ১ বার করে মোট ৩-৫ দিন দিতে হবে। |
|
অথবা, | Inj. স্ট্রেপটোপেন ২.৫ গ্রাম (Renata) / Inj. এসপি ভেট ২.৫ গ্রাম (ACME)/ Inj. স্টেপসিন জি ২.৫ গ্রাম (Opsonin) / Inj. পেনস্ট্রপ ২.৫ গ্রাম (Ethical) / Inj. স্ট্রেপটোসিলিন ২.৫ গ্রাম (Techno) |
প্রয়োগবিধি: উপরের যে কোন একটি ইনজেকশন ১৫০-২০০ কেজি ওজনের আক্রান্ত পশুকে প্রত্যহ একটি করে শিরায় অথবা মাংসপেশীতে পর পর ৪-৫ দিন দিতে হবে। |
গরুর তড়কা রোগের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
গরুর তড়কা রোগের চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাই অনেক সহজ ও খরচ কম। নিচে তড়কা রোগের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাসমূহ উপস্থাপন করা হলো:
- টিকাই তড়কা রোগের একমাত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
- পশুকে ০৬ মাস বয়স হতে নিয়মিত টিকা দিতে হবে।
- পশুকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়ার পর প্রতি ০১ বছর অন্তর অন্তর পুনরায় টিকা দিতে হবে।
- তড়কা রোগে আক্রান্ত মৃত প্রাণীকে ০৬ ফুট গর্ত করে মাটির নিচে পুঁতে ফেলতে হবে।
- মৃত প্রাণির গোয়ালঘর আয়োসান বা Povisep বা বায়োসিড বা বায়োডিন ইত্যাদি জীবাণুনাশক ওষুধ দিয়ে ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
- বর্ষার শুরুর দিকে জেগে উঠা মাঠের ঘাস না খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে।
তড়কা রোগের জীবাণু আক্রান্ত পশু থেকে মানুষের মধ্যেও সংক্রমিত হতে পারে। সেক্ষেত্রে তড়কা রোগ থেকে নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নিম্নোক্ত পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করতে হবে:
- রোগাক্রান্ত গবাদি পশু কোনোভাবই জবাই করা যাবে না।
- অনেকেই বিক্রির উদ্দেশ্যে মৃত প্রাণীর চামড়া ছাড়ানোর চেষ্টা করে। তড়কা রোগে আক্রান্ত গরুর ক্ষেত্রে এ কাজটি মোটেও করা যাবে না।
- তড়কা রোগে আক্রান্ত প্রাণীর মাংসের মাধ্যমেও মানবদেহে সংক্রমিত হতে পারে। তাই এ রোগে আক্রান্ত প্রাণীর মাংসও খাওয়া যাবে না।
- এই রোগে আক্রান্ত অসুস্থ বা মৃত গবাদিপশুকে স্পর্শ করার পূর্বে অবশ্যই মুখে মাস্ক এবং হাতে গ্লাভস বা পলিথিন ব্যবহার করতে হবে।
লেখকের মন্তব্য
গবাদিপশুর বিভিন্ন রোগের মধ্যে কিছু রোগ সংক্রামক বা ছোঁয়াচে। এর মধ্যে তড়কা রোগের ভয়াবহতা ব্যাপক। এক্ষেত্রে লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর পশুকে তড়কা রোগের চিকিৎসা দেওয়ার সময়টুকুও পাওয়া যায় না। তাই প্রত্যেক খামারীর উচিত নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর গরুর তড়কা রোগের টিকা দিয়ে পশুকে রোগমুক্ত করে খামারকে ভবিষ্যৎ ক্ষতির সম্ভাবনা থেকে ঝুঁকিমুক্ত রাখা।
এছাড়াও যেহেতু রোগটি ব্যাকটেরিয়াল তাই উপরোক্ত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলো অনুসরণ করেও এই রোগ থেকে পশুকে নিরাপদে রাখা সম্ভব। তড়কা রোগের কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিষয়ক এই আর্টিকেলের তথ্যগুলো বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য উৎস হতে সংগ্রহ করে খামারীদের উদ্দেশ্যে উপস্থাপন করা হয়েছে। তবুও বাস্তবে এর প্রয়োগের পূর্বে অবশ্যই পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কাজ করার অনুরোধ রইলো।
আর্টিকেলটিতে কোন প্রকার ত্রুটি-বিচ্যুতি কিংবা অসংগতি পরিলক্ষিত হলে সংশোধনের নিমিত্তে কমেন্টবক্সে আপনার সুচিন্তিত মতামত সাদরে গ্রহণযোগ্য। আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হলে আপনার পরিচিত অন্যান্য পশুপালক কিংবা খামারীদের নিকট শেয়ার করার অনুরোধ রইলো। গবাদিপশু পালন ও খামার ব্যবস্থাপনা বিষয়ক যে কোনো তথ্য প্রয়োজনের সময় সহজেই খুঁজে পেতে আমাদের ওয়েবসাইট লিংক আপনার ডিভাইসের ব্রাউজারে বুকমার্ক করে রাখতে পারেন।
তথ্যসূত্র: উকিপিডিয়া, agrilife24.com, agricare24.com, poultrydoctorsbd.com, এগ্রোবাংলা, ড. মাহবুব মোস্তফা রচিত আধুনিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ ও চিকিৎসা এবং দুগ্ধবতী গাভী পালন, ড. মো. জালাল উদ্দিন সরদার, অধ্যাপক, এনিমেল হাজবেন্ড্রী এণ্ড ভেটেরিনারি সায়েন্স বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী কর্তৃক রচিত এবং নূর পাবলিকেশন্স, বাংলাবাজার, ঢাকা কর্তৃক প্রকাশিত “লাভজনক পশু পালন ও খামার ব্যবস্থাপনা” ও “গৃহপালিত পশু-পাখির রোগব্যাধি ও আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি” বই । খামার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান অর্জন করতে বই তিনটি আপনার সংরক্ষণে রাখতে পারেন। |
আপনার সুচিন্তিত মতামত দিয়ে MrDorpon কে আরও সমৃদ্ধ করতে সহযোগিতা করুন। আপনার মতামতটি রিভিউর পর Published করা হবে।
comment url