হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও স্বাধীন বাংলার স্থপতি মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২০০৪ সালে বিবিসি বাংলার এক জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি নির্বাচিত হন। এই মহান নেতার গুণকীর্তন করেছেন অসংখ্য কবি-সাহিত্যিক, লিখেছেন নান্দনিক ছন্দে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা ও উক্তি।
বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে বাংলার কিংবদন্তি বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান অনস্বীকার্য।
ভূমিকা
বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। স্বাধীন বাংলার শিক্ষাক্ষেত্রে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে তাঁকে নিয়ে আলোচনার কোনো অন্ত নেই। প্রতিনিয়ত তাঁকে নতুন করে জানতে হয়, শিখতে হয় নতুন ক্যিছু।যেকোনো চাকুরি কিংবা ভর্তি পরীক্ষায় এই মহান নেতা সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সর্বসাধারণের নিকট সহজেবোধ্য ও সহজে আত্মস্থ করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত প্রতিটি আটিকেল শর্টনোট আকারে উপস্থাপনের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি
বিশ্বব্যাপী অবস্থানরত বাঙালিদের ভোটদানের ভিত্তিতে বিবিসি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানকে হাজার বছরের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে ঘোষণা করেন। সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি নির্বাচনে ভোটদানের পদ্ধতিতে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারী অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পাঁচজনকে মনোনয়ন করার সুযোগ পান। মনোনীত ব্যক্তিদের ১মজন পাঁচ পয়েন্ট, ২য় জন চার পয়েন্ট, ৩য় জন তিন পয়েন্ট, ৪র্থ জন দুই পয়েন্ট এবং ৫ম জন এক পয়েন্ট করে পান।
এই পদ্ধতিতে দ্বিতীয় স্থান অধিকারী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চেয়ে প্রায় দ্বিগুন বেশি পয়েন্ট পেয়ে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি নির্বাচিত হন বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। নিচে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি রূপে শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে খুঁটিনাটি কিছু তথ্য শর্টনোট আকারে উপস্থান করা হলো:
- ২০০৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত “সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি” শিরোনামে বিবিসি বাংলা এ জরিপ পরিচালনা করেন।
- বিবিসি বাংলার এই জরিপে বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি নির্বাচিত হন।
- বাংলাদেশ, ভারত (পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম রাজ্য) সহ বিশ্বব্যাপী অবস্থানরত বাঙালিরা এই জরিপে অংশগ্রহণ করেন।
- জরিপের মনোনয়নে মোট ১৪০ জনের নাম উত্থাপিত হয়।
- ২৬ মার্চ ২০০৪ থেকে প্রতিদিন ১জন করে ধারাবাহিকভাবে শীর্ষ ২০ জনের নাম ঘোষণা শুরু করেন।
- বিবিসি বাংলার প্রতিষ্ঠাতা ১৪ এপ্রিল, ২০০৪ বাংলা নববর্ষের দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে ঘোষণা করেন।
- সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির শীর্ষ ২০ জনের তালিকা একমাত্র নারী ছিলেন বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি তালিকা
ক্রম | নাম | উপাধি |
০১. | শেখ মুজিবুর রহমান | বঙ্গবন্ধু |
| শর্টনোট: - হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি।
- তাঁর জন্ম ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ।
- তিনি তৎকালীন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার পাটগাতি ইউনিয়নের বাইগার নদী তীরবর্তী টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন।
- তাঁর পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান এবং মাতার নাম সায়েরা খাতুন।
- বঙ্গবন্ধুর সহধর্মীনীর নাম বেগম ফজিলাতুননেছা।
- তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট রোজ শুক্রবার ভোরে মাত্র ৫৫ বছর বয়সে বিপথগামী কিছু সেনাসদস্যের সশস্ত্র হামলায় স্বপরিবারে পরলোক গমণ করেন।
- ১৯৬৯ সমালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ডাকসুর ভিপি তোফায়ের আহমেদ শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করেন।
|
০২. | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | বিশ্বকবি |
| শর্টনোট: - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ৭ মে (২৫ বৈশাখ, ১২৬৮ বঙ্গাব্দ) রোজ সোমবার কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়িতে এক ধনাঢ্য ব্রাহ্মন পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন।
- তাঁর পিতার নাম দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মাতার নাম সারদা সুন্দরী দেবী।
- তাঁর ছদ্মনাম ভানুসিংহ ঠাকুর।
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূর্বপুরুসের বাসভূমি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার ঘাটভোগ ইউনিয়নের পিঠাভোগ গ্রামে।
- মাত্র আট বছর বয়স থেকেই তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন এবং ১৮৭৪ সালে কলকাতার ‘তত্ত্ববোধিনী’ পত্রিকায় প্রকাশিত ‘অভিলাষ’ শিরোনামের কবিতাটি তার প্রথম প্রকাশিত রচনা।
- তিনি ১৮৮৩ সালের ৯ ডিসেম্বর ২২ বছর বয়সে ৯ বছর বয়সী মৃণালিনী দেবী রায় চৌধুরীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
- তাঁর অমর কৃর্তী ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯১৩ সালে প্রথম অ-ইউরোপীয়, প্রথম এশীয় এবং প্রথম বাঙালি হিসেবে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
- দীর্ঘদিন রোগের ভোগার পর ১৯৪১ সালের ০৭ আগস্ট (২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) তাঁর পৈতৃক নিবাস কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
|
০৩. | কাজী নজরুল ইসলাম | বিদ্রোহী কবি / জাতীয় কবি |
| শর্টনোট: - বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ২৪ মে (১১ই জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দ) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়াগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
- তাঁর পিতার নাম কাজী ফকির আহমদ এবং মাতার নাম জাহেদা খাতুন।
- কাজী নজরুল ইসলামের ডাকনাম দুখু মিয়া।
- ১৯২২ সালের অক্টোবর মাসে ‘ধূমকেতু’ পত্রিকার প্রথম সংখ্যায় প্রকাশিত ‘বিদ্রাহী’ কবিতাটি আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং কবিতাটি পড়ে মুগ্ধ হয়ে প্রমথ চৌধুরীর তাঁকে ‘বিদ্রোহী কবি’ উপাধিতে ভূষিত করেন।
- নজরুলের প্রথম প্রকাশিত কবিতা ‘মুক্তি’ এবং প্রথম গদ্য রচনা ‘বাউণ্ডুলের আত্মকাহিনী’।
- ১৯৪২ সালে জুলাই মাসে তিনি স্নায়ুবিক রোগে আক্রান্ত নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েন এবং একই বছরের শেষের দিকে তিনি মানসিকভারসাম্যও হারিয়ে ফেলেন।
- দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালের ২৪ মে শেখ মুজিবুর রহমানের তত্ত্বাবধানে এবং ভারত সরকারের অনুমতিক্রমে কাজী নজরুল ইসলামকে স্বপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়।
- ১৯৭৪ সালের এক বিশেষ সংবর্ধনায় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশের জাতীয় কবির মর্যাদা প্রদান করা হয়।
- ১৯৭৬ সালে জানুয়ারী মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়।
- ১৯৭৬ সালের ২৯ আগষ্ট (১২ ভাদ্র ১৯৮৩ বঙ্গাব্দ) ঢাকার পিজি হাসপাতালে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ) মৃত্যুবরণ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়।
- মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল ৭৭ বছর।
|
০৪. | এ কে ফজলুল হক | শের-ই বাংলা (বাংলার বাঘ) |
| শর্টনোট: - শের-ই বাংলা এ. কে ফজলুল হক ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দের ২৬ অক্টোবর তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বাকেরগঞ্জ জেলা বর্তমান বরিশাল বিভাগের ঝালোকাঠি জেলাধীন রাজাপুর উপজেলার অন্তর্গত সাতুরিয়া ইউনিয়নের সাতুরিয়া মিঞাবাড়ির এক সভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
- তাঁর পূর্ণ নাম আবুল কাশেম ফজলুল হক।
- তাঁর পিতার নাম কাজী মুহম্মদ ওয়াজেদ এবং মাতার নাম বেগম সৈয়দুন্নেছা।
- তিনি ১৯৩৫ সালে কলকাতার মেয়র, ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৩ মেয়াদে অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী, ১৯৫৪ সালে পূর্ববঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৮ মেয়াদে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
- ১৯৩৭ সালের ১৫ অক্টোবর ভারতের উত্তর প্রদেশের লখনৌ শহরে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের সম্মেলনে উর্দু ভাষায় চমকপ্রদ এক বক্তব্যের মাধ্যমে লখনৌবাসীর হৃদয় জয় করেন এবং সেখানেই লখনৌবাসী তাঁকে শের-ই বাংলা উপাধিতে ভূষিত করেন।
- এই মহান নেতা ১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল রোজ শুক্রবার ঢাকাস্থ টিকাটুলির ২৭, কে. এম. দাস লেনের নিজ বাসায় ইন্তিকাল করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও খাজা নাজিমুদ্দিনের কবরের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
|
০৫. | সুভাষচন্দ্র বসু | নেতাজি |
| শর্টনোট: - সুভাষচন্দ্র বসু ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জানুয়ারী ব্রিটিশ ভারতের বাংলা প্রদেশের উড়িষ্যা বিভাগের কটক শহরের এক স্বনামধন্য কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
- তাঁর পিতার নাম জানকীনাথ বসু ও মাতার নাম প্রভাবতী দত্ত।
- ভারত সরকারে স্বীকৃতি অনুযায়ী ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ১৮ আগষ্ট মাত্র ৪৮ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তবে তাঁর মৃত্যু সংবাদ এখনও বিতর্কিত ও অমীমাংসিত।
- সুভাষচন্দ্র বসু’র বিখ্যাত উক্তি “তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো।”
|
০৬. | বেগম রোকেয়া | মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত |
| শর্টনোট: - বেগম রোকেয়া ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দের ০৯ ডিসেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, বর্তমান রংপুর জেলাধীন মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামের এক জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
- তাঁর পিতার নাম জহীরুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের এবং মাতার নাম রাহাতুন্নেসা সাবেরা চৌধুরানী।
- বেগম রোকেয়া ১৮৯৮ সালে বিহারের ভাগলপুর নিবাসী সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।।
- ১৯০২ সালে তিনি সাহিত্যাঙ্গনে পদার্পন করেন এবং কলকাতার ‘নভপ্রভা’ পত্রিকায় প্রকাশিত ‘পিপাসা’ তার প্রথম রচনা।
- ১৯৩২ সালের ০৯ ডিসেম্বর কলকাতার সোদপুরে মাত্র ৫২ বছর বয়সে এই মহিয়সী নারী মৃত্যু বরণ করেন।
|
০৭. | জগদীশ চন্দ্র বসু | আচার্য |
| শর্টনোট: - জগদীশ চন্দ্র বসু ১৮৫৮ সালের ৩০ নভেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি’র বিক্রমপুরে (বর্তমান মুন্সীগঞ্জ) জন্মগ্রহণ করেন।
- তাঁর পিতার নাম ভগবান চন্দ্র বসু এবং মাতার নাম বামা সুন্দরী।
- তিনি ১৮৮৭ সালে বিখ্যাত ব্রাহ্ম সমাজের সংস্কারক দুর্গামোহন দাশের কন্যা অবলার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
- বিশ্ববরেণ্য এই বিজ্ঞানী ১৯৩৭ সালের ২৩ নভেম্বর ৭৮ বছর বয়েসে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি বর্তমান ভারতের ঝারখন্ডের গিরিডিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
|
০৮. | ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর | বিদ্যাসাগর |
| শর্টনোট:
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আসল নাম ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়।
- তিনি ব্রিটিশ ভারতের বাংলা প্রেসিডেন্সি অধিনস্থ হুগলি জেলার বীরসিং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
- তাঁর পিতার নাম ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ও মাতার নাম ভগবতী দেবী।
- ১৮৩৯ সালের ২২ এপ্রিল ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় হিন্দু ল কমিটির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হলে তার অগাদ পাণ্ডিত্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটে এবং একই বছরের ১৬ মে সংস্কৃত কলেজের ল কমিটি কর্তৃক প্রদত্ত প্রশংসাপত্রে প্রথম তাঁর নামের পাশে ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধিটি ব্যবহৃত হয়।
- ১৮৩৪ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি দীনময়ী দেবী’র সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
- ১৮৯১ সালের ২৯ জুলাই কলকাতার বাদুড়বাগানস্থ বাসভবনে বাংলার নবজাগরনের অগ্রদূত ও জ্ঞানের সাগর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর পরলোক গমন করেন।
|
০৯. | আবদুল হামিদ খান ভাসানী | মজলুম জননেতা |
| শর্টনোট: - মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দের ১২ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের সিরাজগঞ্জ জেলার ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
- তাঁর পিতার নাম হাজ্বী শরাফত আলী খান এবং মাতার নাম মোসাম্মৎ মজিরন বিবি।
- তিনি ১৯৭৬ সালের ১৬ মে ৯৫ বছর বয়সেও ফারাক্কা বাঁধ নির্মানের প্রতিবাদে ঐতিহাসিক লং মার্চে নেতৃত্ব দেন।
- দেশ বরেণ্য এই মজলুম জননেতা ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর তৎকালীন ঢাকা পিজি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
- মাওলানা ভাসানী দরিদ্র ও নিপীড়িতদের পক্ষে তাঁর আজীবন সংগ্রামের জন্য তাঁকে ‘মজলুম জননেতা’র সম্মানসূচক উপাধি প্রদান করা হয়।
- বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীচুক্তির বিরোধিতা করে এই দেশ বরেণ্য নেতা বলেছিলেন, “আসাম আমার, পশ্চিমবঙ্গ আমার ত্রিপুরাও আমার। এগুলো ভারতের কবল থেকে ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মানচিত্র পূর্ণতা পাবে না।”
|
১০. | রাজা রামমোহন রায় | রাজা |
| শর্টনোট: - রাজা রামমোহন রায় ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দের ২২ মে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি অধিনস্থ হুগলি জেলার রাধানগর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
- তাঁর পিতার নাম রাধাকান্ত এবং মাতার নাম ফুলঠাকুরানী দেবী।
- দিল্লীর বাদশাহ্ মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় আকবর ১৮৩০ সালে তাকে রাজা উপাধি দেন।
- রাজা রামমোহন রায়ের প্রচেষ্টায় তৎকালীন বাংলার গভর্নর লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক সতীদাহ প্রথাকে নিষিদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে আইন প্রণয়ন করেন।
- ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দের ২৭ সেপ্টেম্বর ইংলেন্ডের ব্রিস্টলে প্রায় ৮ দিন জ্বরে ভোগার পর মহান এই সমাজ সংস্কারকের ইহজীবনের সমাপ্তি ঘটে।
|
১১. | সৈয়দ মীর নিসার আলী | তিতুমির |
| শর্টনোট: - সৈয়দ মীর নিসার আলী ১৭৮২ খ্রিস্টাব্দের ২৭ জানুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমা অন্তর্গত বাদুরিয়া থানার হায়দারপুর গ্রামের একটি সুন্নি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
- তার পিতার নাম সৈয়দ মীর হাসান আলী এবং মাতার নাম আবিদা রুকাইয়া খাতুন।
- ১৮৩১ সালের ২৩ অক্টোবর বাদুরিয়া থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে নারিকেলবাড়িয়া গ্রামে ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সমর প্রস্তুতি ও সেনা প্রশিক্ষণের নিমিত্তে বাঁশ ও কাদার মিশ্রণে দ্বি-স্তরবিশিষ্ট ঐতিহাসিক বাশেরকেল্লা নির্মাণ করেন।
- ১৯৩১ সালের ১৯ নভেম্বর ব্রিটিশ সৈন্যদের আধুনিক অস্ত্র প্রতিহত করতে ব্যর্থ হলে তিতুমীর সহ তাঁর ৪০ জন অনুসারী শাহাদৎবরণ করেন।
|
১২. | লালন শাহ্ | বাউল সম্রাট |
| শর্টনোট: - অবিভক্ত বাংলার সমাজ সংস্কারক ও দার্শনিক ফকির লালন শাহ্ ১৭৭৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন।
- লালন শাহ্ সম্পর্কে লিখিত কোন দলিল কোথাও পাওয়া যায়নি। তার একমাত্র অবিকৃত তথ্যসূত্র হলো তার অমর কীর্তি ২৮৮ টি গান।
- এই মহান সাধকের জন্মসাল ও জন্মস্থান নিয়েও আছে অনেক বিতর্ক।
- তিনি ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দের ১৭ অক্টোবর কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালির ছেউড়িয়াতে তাঁর নিজ আখড়ায় ১১৬ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন।
|
১৩. | সত্যজিৎ রায় |
|
| শর্টনোট: - সত্যজিৎ রায়ের জন্ম ১৯২১ সালের ২ মে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি অধিনস্থ কলকাতায়।
- তাঁর পূর্বপুরুষের বাসভূমি ছিল তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জে মহকুমার কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রামে।
- তাঁর পিতা বাঙালি শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায় এবং মাতা সুপ্রভা রায়।
- সত্যজিৎ রায় ১৯৪৯ সালে তাঁর দূরসম্পর্কের বোন ও ঘনিষ্ঠ বান্ধবী বিজয়া দাসের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
- তিনি ১৯৯২ সালের ২৩ এপ্রিল ভারতের পশ্চিম বঙ্গের কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
|
১৪. | অমর্ত্য সেন | ভারতরত্ন |
| শর্টনোট: - অমর্ত্য সেনের জন্ম ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের ৩ নভেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি অধিনস্থ শান্তিনিকেতনে।
- তিনি কৃষি-রসায়নবিদ, মৃত্তিকাবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ ‘আশুতোষ সেন’ এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্নেহধন্য আশ্রমকণ্যা ‘অমিতা সেন’ দম্পতির সন্তান।
- তিনি ১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
- ১৯৯৯ সালে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘ভারতরত্ন’ লাভ করেন।
|
১৫. | ভাষা আন্দোলনে শহীদ | ভাষা শহীদ |
| শর্টনোট: - তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বর্তমান স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে নিহত সকল শহীদের ভাষা শহীদ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং ২০০৪ সালের বিবিসি বাংলার জরিপে তাঁরা সকলে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির তালিকায় ১৫তম স্থান দখল করেন।
|
১৬. | ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ | ভাষাবিজ্ঞানী |
| শর্টনোট: - ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দের ১০ জুলাই ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল রেসিডেন্সি অধিনস্থ ২৪ পরগনা জেলার পেয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
- তাঁর পিতার নাম ডা. শেখ ওয়ালীউল্লাহ এবং মাতার নাম শিরিয়া বেগম।
- তিনি ১৯০৮ সালে যশোর জেলা স্কুলের শিক্ষক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন।
- পরবর্তীতে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনা করে সর্বশেষ ১৯৫৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কর্মজীবনের অবসান ঘটনা।
- তিনি ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ জুলাই ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
|
১৭. | স্বামী বিবেকানন্দ | স্বামী |
| শর্টনোট: - স্বামী বিবেকানন্দের জন্মনাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত।
- তিনি ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দের ১২ জানুয়ারী মকর সংক্রান্তি উৎসবের দিন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল রেসিডেন্সি অধিনস্থ কলকাতার বিখ্যাত কায়স্থ দত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
- তাঁর পিতার নাম বিশ্বনাথ দত্ত এবং মাতার নাম ভুবনেশ্বরী দেবী
- ১৯০২ খ্রিস্টাব্দের ০৪ জুলাই রাত ৯.১০ মিনিটে ধ্যানরত অবস্থায় ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল রেসিডেন্সি অধিনস্থ হাওড়া জেলাধীন বেলুর মঠস্থ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন।
|
১৮. | অতীশ দীপঙ্কর | পণ্ডিত |
| শর্টনোট: - অতীশ দীপঙ্কর ছিলেন একজন বাঙালি পন্ডিত ও বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারক ।
- তিনি ৯৮২ খ্রিস্টাব্দে বিক্রপুর পরগনার (স্বাধীন বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ জেলা) বজ্রযোগিনী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
- তাঁর পিতার নাম কল্যাণশ্রী ও মাতার নাম প্রভাবতী দেবী।
- জানা যায় শৈশবে তিনি আদিনাথ চন্দ্রগর্ভ নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন।
- তিনি পায়ে হেঁটে ও ঘোড়ায় চড়ে বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার ও সংস্কারে কাজ করতেন।
- ১০৫৪ খ্রিস্টাব্দে ৭৩ বছর বয়সে তাঁর মহাপ্রয়াণ ঘটে।
|
১৯. | জিয়াউর রহমান | বাংলার রাখাল রাজা |
| শর্টনোট: - বাংলার রাখাল রাজা খ্যাত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন স্বাধীন বাংলার ৮ম রাষ্ট্রপতি, সাবেক সেনাপ্রধান এবং মহান মযুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের নায়ক।
- তিনি ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দের ১৯ জানুয়ারী ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল রেসিডেন্সি অধিনস্থ বগুড়া জেলার নসিপুর ইউনিয়নের বাগবাড়ী গ্রামের মন্ডল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
- তাঁর পিতার নাম মনসুর রহমান এবং মাতার নামা জাহানারা খাতুন।
- জিয়াউর রহমানের ডাক নাম ছিল কমল।
- তিনি ১৯৬০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্গত দিনাজপুর শহরের মেয়ে খালেদা খানমের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
- তিনি ১৯৭৮ সালের ১লা সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল’ (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন।
- ১৯৮১ সালের ৩০ শে মে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে বিপথগামী কিছু সেনাসদস্যের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে জিয়াউর রহমান পরলোক গমন করেন।
- প্রায় ২০ লক্ষ লোকের উপস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জানাজা অনুষ্ঠিত হয় যা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ জনসমাগম।
- তিনি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আন্তর্জাতিক সংস্থা সার্ক এর রূপরেখা রচনা করেন এবং তাঁর রূপরেখা অনুযায়ী ১৯৮৫ সালে সার্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।
|
২০. | হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী | গণতন্ত্রের মানসপুত্র |
| শর্টনোট: - হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী ছিলেন তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান বাঙালি রানীতিবিদ ও আইনজীবী।
- তিনি ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল রেসিডেন্সি অধিনস্থ মেদিনীপুরের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
- হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের খ্যাতনামা বিচারক জাহিদ সোহ্রাওয়ার্দী ও নামকরা উর্দু সাহিত্যিক খুজাস্তা আখতার বানু দম্পতির কনিষ্ঠ সন্তান।
- তিনি ১৯২৪ সালে মাত্র ২৪ বছর বয়সে কলকাতার ডেপুটি মেয়র নির্বাচিত হন।
- তিনি সেপ্টেম্বর ১২, ১৯৫৬ থেকে অক্টোবর ১১, ১৯৫৭ পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
- ১৯৬৩ সালের ৫ ডিসেম্বর লেবাননের রাজধানী বৈরুতে অবস্থানকালীন তিনি মৃত্যুবরণ করেন এবং ৮ ডিসেম্বর রেসকোর্স ময়দানে জানাজা শেষে তাঁর ইহজীবনের সমাপ্তি ঘটে।
|
বঙ্গবন্ধুর নামে যত কিছু
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের মহানায়ক। তাই স্বাধীনতার সূচনালগ্ন থেকে শুরু করে অদ্যবদি মহান এই ব্যক্তির স্মরণে গড়ে উঠেছে অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, রাস্তাঘাট, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। নিচে বঙ্গবন্ধুর স্মরণার্থে তাঁর নামে গড়ে উঠা উল্লেখযোগ্য বিষবস্তুসমূহ উল্লেখ করা হলো:
ক্র. নং
|
নামকরণকৃত বিষয়বস্তু
|
প্রদত্ত নাম
|
০১.
|
উল্লেখযোগ্য সড়ক
|
- বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, ঢাকা (পূর্ববতী জিন্নাহ এভিনিউ)
- মুজিব সড়ক, ফরিদপুর
- বঙ্গবন্ধু সড়ক, সাভার
- শেখ মুজিব সড়ক, আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম
- শেখ মুজিব রোড, সিরাজগঞ্জ
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সড়ক, বান্দরবান
- বঙ্গবন্ধু সড়ক, নারায়নগঞ্জ
- মুজিব সড়ক, যশোর, শেখ মুজিব ওয়ে, শিকাগো
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সরণি, কলকাতা, ভারত
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সড়ক, নতুন দিল্লী, ভারত
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বুলবার্ড, আঙ্কারা, তুরস্ক
|
০২.
|
গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা
|
- বঙ্গবন্ধু অ্যারোনটিক্যাল সেন্টার, কুর্মিটোলা, ঢাকা, বাংলাদেশ
- বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি, গাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ
|
০৩.
|
সামরিক সংস্থা |
- বঙ্গবন্ধু সেনানিবাস, টাঙ্গাইল, বাংলাদেশ
- বানৌজা বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সর্বাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ফ্রিগেট
- বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঘাঁটি বঙ্গবন্ধু, ঢাকা।
|
০৪.
|
ভূ-উপগ্রহ
|
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ - বাংলাদেশের প্রথম ভূস্থির যোগাযোগ ও সম্প্রচার উপগ্রহ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে পৃথিবীর ৫৭ তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০১৮ সালের ১১ মে (বাংলাদেশ সময় ১২ মে) এই কৃত্রিম উপগ্রহটি উৎক্ষেপন করে।
|
০৫.
|
চেয়ার
|
বঙ্গবন্ধু চেয়ার - ১৯৯৯ সালের ১৫ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে বঙ্গবরন্ধু চেয়ার স্থাপন করা হয়। উক্ত চেয়ারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান নিয়োগ পেয়েছিলেন।
|
০৬.
|
সেতু
|
বঙ্গবন্ধু সেতু, যমুনা নদী, সিরাজগঞ্জ-টাঙ্গাইল - সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী যমুনা নদীর উপরে নির্মিত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সড়ক ও রেল সেতু হলো বঙ্গবন্ধু সেতু।
- সেতুটি সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করলেও সমগ্র উত্তরবঙ্গের জন্য এটি আশীর্বাদস্বরূপ।
- সেতুটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৪.৮ কিলোমিটার।
- ১৯৯৪ সালের ১৫ অক্টোবর সেতুটির ভিস্তিপ্রস্তর উত্থাপন করে ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন এর নির্মাণ কাজ শেষ করে সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করা হয়।
|
০৭.
|
স্টেডিয়াম
|
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, ঢাকা - এটি ১৯৫৪ সালে নির্মিত বাংলাদেশের জাতীয় স্টেডিয়াম।
- পূর্বে এর নাম ঢাকা স্টেডিয়াম থাকলেও বঙ্গবন্ধুর স্মরণার্থে পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম রাখা হয়।
- স্টেডিয়ামটির ধারণক্ষমতা প্রায় ৩৬,০০০।
|
০৮.
|
উল্লেখযোগ্য ভবন
|
- বঙ্গবন্ধু ভবন, ঢাকা
- বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র (পূর্ববতী চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র), আগারগাঁও, শেরে বাংলা নগর, ঢাকা
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার (পূর্ববতী নাম মাওলানা ভাসানী নভোথিয়েটার), ঢাকা
- বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল জাদুঘর, ধানমন্ডি, ঢাকা
- বঙ্গবন্ধু চত্ত্বর স্মৃতিস্তম্ভ, ঢাকা
- বঙ্গবন্ধু টাওয়ার ঢাকা
- বঙ্গবন্ধু স্কয়্যার, ফরিদপুর
|
০৯.
|
হাসপাতাল
|
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ, ঢাকা (পূর্ববতী পিজি হাসপাতাল)
- বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম
|
১০.
|
বিশ্ববিদ্যালয়
|
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি, ঢাকা
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ
|
১১.
|
উল্লেখযোগ্য কলেজ
|
- বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, টাঙ্গাইল
- জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ, ঢাকা
- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কলেজ, গাজীপুর
- ফরিদগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সরকারি কলেজ, চাঁদপুর
- বঙ্গবন্ধু কলেজ, কুমিল্লা
- বঙ্গবন্ধু কলেজ, খুলনা
- বঙ্গবন্ধু ল কলেজ, মাদারীপুর
- বঙ্গবন্ধু কলেজ, ঢাকা
- বঙ্গবন্ধু মহিলা কলেজ, কলারোয়া, সাতক্ষীরা
- বঙ্গবন্ধু ডিগ্রী কলেজ, রাজশাহী
- শিমুলবাড়ী বঙ্গবন্ধু ডিগ্রী কলেজ, নীলফামারী
- সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ, গোপালগঞ্জ
- সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ, জামালপুর
|
১২.
|
উল্লেখযোগ্য বিদ্যালয়
|
- আম্বরি বঙ্গবন্ধু বিদ্যালয়, নীলফামারী
- সৈয়দপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়, নারায়নগঞ্জ
- কৈবল্যধাম হাউজিং এস্টেট বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম
- বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক বিদ্যালয়, লন্ডন
|
১৩.
|
বিশ্ববিদ্যাল হল
|
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, সিলেক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
- বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল হল, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হল, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
- বঙ্গবন্ধু হল, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- বঙ্গবন্ধু হল, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- বঙ্গবন্ধু হল, শাহজালাল প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
|
১৪.
|
ক্রীড়া টুর্নামেন্ট
|
- বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট
|
১৫.
|
পার্ক / উদ্যান
|
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, গাজীপুর
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, কক্সবাজার
- মুজিব উদ্যান, ফরিদপুর
|
১৬.
|
দ্বীপ
|
বঙ্গবন্ধু দ্বীপ - সুন্দরবনের হিরণ পয়েন্ট থেকে ১৫ কিলোমিটার ও দুবলাচর থেকে ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রায় ৭.৮৪ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২ মিটার উঁচুতে বঙ্গোপসাগরের বুকে দ্বীপটির অবস্থান।
- ১৯৭৬ সাল থেকেই স্যাটেলাইট ইমেজে দ্বীপটির অস্তিত্ব মেলে।
- ১৯৯২ সালে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে প্রথম নতুন জেগে উঠা এ চরটির দেখা পান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একনিষ্ঠ ভক্ত মালেজ ফরাজী নামের এক মৎসজীবী।
- এ সময় তিনি জনমানবহীন এ দ্বীপের নাম দেন বঙ্গবন্ধু দ্বীপ এবং সেখানে তিনি একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন।
|
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা ও উক্তি
আবুল মাল আবদুল মুহিত, আ স ম আরেফিন সিদ্দিক ও মোঃ জাহিদ হোসেন সম্পাদিত প্রবন্ধ, বক্তৃতা, বাণী, নির্দেশ ও সাক্ষাৎকার সম্বলিত শেখ মুজিবুর রহমানের এই দেশ এই মাটি এবং ড. এমরান হোসেন রচিত বঙ্গবন্ধু, বঙ্গভাষা ও বঙ্গমুক্তি গ্রন্থের তথ্যসূত্র হতে শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে লেখা উল্লেখযোগ্য কিছু কবিতা ও উক্তি নিচে উপস্থাপন করা হলো:
- ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কবি অন্নদাশঙ্কর রায় বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে লিখেছেন-
“যতকাল রবে পদ্মা যমুনা
গৌরী মেঘনা বহমান
ততকাল রবে কীর্তি তোমার
শেখ মুজিবুর রহমান।
দিকে দিকে আজ অশ্রুগঙ্গা
রক্তগঙ্গা বহমান
তবু নাই ভয় হবে হবে জয়
জয় মুজিবুর রহমান।”
- বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর ভালোবাসা থেকে কবি তানজীর লিটন লিখেছেন-
“মুজিব ছাড়া বাংলা বলো
কেমন করে মানতে পারি?
একটা জাতির একটা মুজিব
কোত্থেকে আর আনতে পারি?”
- কবি আবদুল গাফফার চৌধুরী বঙ্গবন্ধুকে পুনরায় গর্জে উঠার আহ্বান করে লিখেছেন-
“বঙ্গবন্ধু! তোমার বন্ধু আজ বাংলার জনগণ
টুঙ্গিপাড়ার কবরে শুয়ে কি শোন না তাদের ক্রন্দন?
তুমি ডাক দিলে আবার দাঁড়াবে শিরখাড়া করে জনতা
জয়বাংলা বজ্রধ্বনিতে প্রাণ পাবে মরা স্বাধীনতা।”
- শেখ মুজিবের গুণকীর্তন করে কবি আহমাদ মাযহার লিখেছেন-
“মুজিব মানে তো বিশ্বের বুকে
মুজিব মানে তো সোনার বাংলা
- শেখ মুজিবের গুণকীর্তন করে কবি আহমাদ মাযহার লিখেছেন-
- শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মানিত করতে কবি দক্ষিণারঞ্জন বসু লিখেছেন-
শোষণক্লিষ্ট বাঙালিরে দিতে স্বাধিকার সম্মান
তোমার জন্ম তোমার জীবন কর্মসাধনা সব
তুমি এনে দিলে জাতিরে তাহার প্রাপ্য যে গৌরব।”
- কবি প্রত্যয় জসীম বঙ্গবন্ধুর নিকট নালিশের সুরে লিখেছেন-
- বাদল ঘোষ ‘পঁচাত্তরের যীশু’ কবিতায় তিনি বলেছেন-
“টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নিলো মায়ের কোলে শিশু
স্বাধীনতার স্রষ্টা তিনি পঁচাত্তরের যীশু।”
- বাদল ঘোষ ‘পঁচাত্তরের যীশু’ কবিতায় তিনি আরও বলেছেন-
“যীশুর মতোই ভালোবেসে বিলিয়ে গেলেন প্রাণ
মহাকালে বিশ্বমানব গাইবে যে তাঁর গান।”
- বিভূতি ভট্টাচার্য তার ‘বঙ্গবন্ধু মুজিবুর’ কবিতায় লিখেছেন-
“গুলি ও বোমায়, সঙীন খোঁচায় কত প্রাণ কোরবানী
মুজিবুর, ওরা পারেনি করতে স্তব্ধ তোমার বাণী।”
- মুস্তফা মাসুদ রচিত ‘বঙ্গবন্ধু’ কবিতায় তিনি লিখেছেন-
“তিনিই দিলেন মুক্ত পাখির ডানা
দৈন্য-দানো আর দেবে না হানা।
বন্ধ দুয়ার দিলেন খুলে যিনি
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু তিনি।”
- ‘বাপের বেটা’ ছড়ায় সুকুমার বড়ুয়া লিখেছেন-
“বাপের বেটা বলে কাকে চিন্তা করে দেখ্
- সুফিয়া কামাল রচিত ‘ডাকিছে তোমারে’ কবিতায় তিনি লিখেছেন-
“এই বাংলার আকাশ বাতাস, সাগর গিরি ও নদী
ডাকিছে তোমারে বঙ্গবন্ধু? ফিরিয়া আসতে যদি
হেরিতে এখনও মানব হৃদয়ে তোমার আসন পাতা
এখনও মানুষ স্মরিছে তোমারে, মাতা পিতা বোন ভ্রাতা।”
- ‘আমার পরিচয়’ কবিতায় সৈয়দ শামসুল হক লিখেছেন-
“এই ইতিহাস ভুলে যাবো আজ, আমি কি তেমন সন্তান?
যখন আমার জনকের নাম শেখ মুজিবুরি রহমান;
তাঁরই ইতিহাস প্রেরণায় আমি বাংলায় পথ চলি-
চোখে নীলাকাশ, বুকে বিশ্বাস, পায়ে উর্বর পলি।”
- বঙ্গবন্ধুর প্রশংসায় কবি জসীম উদ্দীন লিখেছেন-
ওই নাম যেন বিসুভিয়াসের অগ্নি-উগারি বাণ।”
- বঙ্গবন্ধুর প্রতি কবি সুফিয়া কামালের এই উক্তিতে ফুটে উঠেছে বঙ্গবন্ধুর জন্য বাংলার প্রকৃতির আর্তনাদ-
“তোমার শোণিতে রাঙানো এ মাটি কাঁদিতেছে নিরবধি
তাইতো তোমায় ডাকে বাংলার কানন গিরি ও নদী।”
- কবি শামসুর রহমান বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লিখেছেন-
- বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে কবি মহাদেব সাহা লিখেছেন-
“আমি আমার বুক পকেট থেকে ভাঁজ করা একখানি
দশ টাকার নোট বের করে শেখ মুজিবের ছবি দেখেছিলাম
বলেছিলাম, দেখো এই বাংলাদেশ।”
ইসলামে বঙ্গবন্ধুর অবদান
বঙ্গবন্ধুর পূর্বপুরুষ হলেন বাগদাদের খ্যাতনামা অলি বায়েজিদ বোস্তামীর শিষ্য দরবেশ শেখ আউয়াল। সেই সুবাদে কিছুটা হলেও অনুমেয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামী চিন্তাধারায় তাঁর পূর্বপুরুষের অনুসারী। এছাড়াও ইসলাম ধর্মের প্রতি তাঁর নিম্নোক্ত অবদান ও অনুরাগ ইসলামের প্রতি ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ। নিচে ইসলাম ধর্মের প্রতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উল্লেখযোগ্য অবদান সংক্ষেপে লিপিবদ্ধ করা হলো:
- তিনি ১৯৭৫ সালের ২২ মার্চ ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন।
- তাবলিগ জামায়াতের একটি বিশেষ দল একবার বঙ্গবন্ধুর সাথে সাক্ষাত করতে গেলে তিনি তাদেরকে ইসলামের কুটনীতিক হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
- তাবলিগ জামায়াতের মারকাজ কাকরাইল মসজিদের অবকাঠামো সম্প্রসারণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মসজিদটি সম্প্রসারণকালে রমনা পার্কের কিছু জায়গা দরকার হলে বঙ্গবন্ধুর নিজ তত্ত্বাবধানে মসজিদটির জন্য জায়গার ব্যবস্থা করেন।
- টঙ্গীতে তাবলিগ জামায়াতের বিশ্ব ইজতেমার জন্য ১৯৭২ সালে সরকারি জমির প্রাথমিক বরাদ্দ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
- তিনি ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা জনগণের সামনে তুলে ধরার লক্ষ্যে হক্কানি আলেমদের নিয়ে ঢাকায় সিরাত মজলিস প্রতিষ্ঠা করেন।
- সিরাত মজলিস প্রতিষ্ঠার পর ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালে রবিউল আওয়াল মাসে ব্যাপক আকারে ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করেন।
- তিনি বায়তুল মোকররম চত্ত্বরে মাহফিল উদ্বোধন করেছিলেন।
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে বাংলাদেশে ঈদে মিলাদুন্নবী, শবে কদর ও শবে বরাত উপলক্ষে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন।
- তিনি ইসলাম ধর্মের পবিত্রতা বজায় রাখার নিমিত্তে ঈদে মিলাদুন্নবী, শবে কদর ও শবে বরাত উপলক্ষে সরকারি ছুটির দিবসগুলোতে দেশের সকল প্রেক্ষাগৃহে ছবি প্রদর্শন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
- ইসলাম ধর্মে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা বন্ধ করে রেসকোর্স (ঘোড়দৌড়) ময়দানের নাম পরিবর্তন করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নামকরণ করেন।
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম দেশে হজ যাত্রীদের জন্য সরকারি তহবিল থেকে অনুদানের ব্যবস্থা করেন।
- ১৯৭১ সালে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী ও কর্মমুখী করার উদ্যোগ গৃহীত হয়।
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম বেতার ও টিভিতে কুরআন তেলাওয়াত ও তাফসির প্রচার শুরু হয়।
- ১৯৭৩ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধাবস্থায় আরবদেশগুলোর সৈনিকদের জন্য বঙ্গবন্ধু ১লাখ পাউন্ড চা ও ২৮ সদস্যের মেডিকেল টিম পাঠিয়েছিলেন।
লেখকের মন্তব্য
বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর স্বীয় কর্মের ফলস্বরূপ অর্জন করেছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির খেতাব। বিশ্ববরেন্য ব্যক্তিবর্গের নিকট থেকে পেয়েছে অসংখ্য সম্মাননা। তাঁর কর্মফলই তাঁকে আজ গবেষণা বিষয়বস্তুতে পরিণত করেছে। এরই ফলশ্রুতিতে মহান এই ব্যক্তির প্রতি ভালোবাসা থেকে তাঁকে নিয়ে লেখার অনুপ্রেরণা জাগে।
আশা করি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত আমাদের প্রতিটি আর্টিকেল আপনার জ্ঞান ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করবে। আর্টিকেলটি পড়ে কোন তথ্য সংযোজন, বিয়োজন ও পরিমার্জনের প্রয়োজন হলে কমেন্ট বক্সে আপনার সুচিন্তিত মতামত পেশ করুন।
তথ্যসূত্র: বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারগারের রোজনামচা’, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রচিত ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’, ড. মোহা. এমরান হোসেন রচিত ‘বঙ্গবন্ধু, বঙ্গভাষা ও বঙ্গমুক্তি’ এবং আবুল মাল আবদুল মুহিত, আ স ম আরেফিন সিদ্দিক ও মোঃ জাহিদ হোসেন সম্পাদিত প্রবন্ধ, বক্তৃতা, বাণী, নির্দেশ ও সাক্ষাৎকার সম্বলিত শেখ মুজিবুর রহমানের ‘এই দেশ এই মাটি ’ গ্রন্থসহ বঙ্গবন্ধু বিষয়ক অসংখ্য গ্রন্থ।
|
আপনার সুচিন্তিত মতামত দিয়ে MrDorpon কে আরও সমৃদ্ধ করতে সহযোগিতা করুন। আপনার মতামতটি রিভিউর পর Published করা হবে।
comment url