টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায় এবং বয়সভেদে এর স্বাভাবিক মাত্রা
টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করে কোনো প্রকার কৃত্রিম ওষুধ বা ইনজেকশন ছাড়াই দুর্বল যৌন জীবনকে পুনরুজ্জিবিত করে পুনরায় মধুময় দাম্পত্য জীবন উপভোগ করা সম্ভব। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের ফলে হারানো যৌবন ফিরে পেতে সর্বপ্রথম প্রয়োজন টেস্টোস্টেরনের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখা।
টেস্টোস্টেরন হরমোনই হলো ছেলেদের পুরুষত্বের প্রধান পরিচায়ক। উক্ত হরমোনের ফলে সৃষ্ট শারীরিক ও আচরণগত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে ছেলে ও মেয়ের বাহ্যিক তফাৎ পরিলক্ষিত হয়।
ভূমিকা
যৌন জীবনকে প্রাণবন্ত রাখতে ছেলে কিংবা মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রেই টেস্টোস্টেরনের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখা একান্ত জরুরী। যৌন শক্তির এই বিশেষ হরমোনটির ভারসাম্যহীনতা মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের মধ্যেই বেশি পরিলক্ষিত হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে যৌন জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করে কোনো প্রকার ওষধু ছাড়াই এই সমস্যা থেকে আরোগ্য পাওয়া সম্ভব।
যৌন বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যমতে, দ্রুত যৌন শক্তি বৃদ্ধির জন্য তথাকথিত ফার্মাসিস্ট কিংবা হাতুড়ে ডাক্তারের পরামর্শে গৃহীত নানারকম ওষুধ সাময়িকভাবে অনেক কার্যকরী মনে হলেও অদূর ভবিষ্যতে এর কুফল অনেক। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ব্যতীত যৌনবর্ধক ওষুধ সেবনের ফলে পুরোপুরিভাবে যৌনক্রিয়া এসব ওষধের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। এমনকি দীর্ঘদিন এসব ওষুধের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখলে একটা সময় যৌন জীবন সম্পূর্ণরূপে নিস্ক্রিয় হয়ে যায়।
তাই বিশেষজ্ঞরা যৌন শক্তি বৃদ্ধির জন্য প্রথমে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায়কেই অধিক গুরুত্বের সাথে সাজেস্ট করে থাকেন। তাই প্রত্যেক স্বাস্থ্যসচেতন পুরুষের টেস্টোস্টেরন হরমোনের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখতে জানা উচিত যৌন শক্তি কমে যাওয়ার কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও প্রতিকার সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা রাখা। অন্যথায় নিস্ক্রিয় যৌন জীবনের কারণে দাম্পত্য কলহের পাশাপাশি সৃষ্টি হতে পারে বন্ধ্যাত্ব।
টেস্টোস্টেরনের স্বাভাবিক মাত্রা কত
টেস্টোস্টেরন হরমোন ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের মধ্যেই বিদ্যমান। তবে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের মধ্যে এই হরমোনের উপস্থিতি খুবই কম। বয়সভেদেও এই হরমোনের পরিমাণ কম বেশি হয়ে থাকে। মানবদেহে টেস্টোস্টেরন হরমোন দুই ভাবে থাকে। বেশিরভাগ টেস্টোস্টেরন হরমোন রক্তের মধ্যে প্রোটিনের সাথ আবদ্ধ অবস্থায় থাকে। সামান্য পরিমাণ টেস্টোস্টেরণ মুক্ত অবস্থায় থাকে।
এ কারণেই টেস্টোস্টেরন টেস্ট দুই ভাবে হয়ে থাকে। একটি হলো টোটাল টেস্টোস্টেরন টেস্ট এবং অন্যটি হলো ফ্রি টেস্টোস্টেরন টেস্ট। টোটাল টেস্টোস্টেরন টেস্ট প্রোটিনের সাথে আবদ্ধ এবং মুক্ত অবস্থায় বিদ্যমান সর্বমোট টেস্টোস্টেরন হরমোনকে নির্দেশিত করে। অন্যদিকে ফ্রি টেস্টোস্টেরন টেস্টের মাধ্যমে শুধুমাত্র মুক্ত অবস্থায় থাকা টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা নির্দেশ করে।
মানবদেহে মুক্ত অবস্থায় বিদ্যমান টেস্টোস্টেরন হরমোনই সবচেয়ে বেশি কার্যকর। আর এ কারণেই বিশেষজ্ঞরা সাধারণত ফ্রি টেস্টোস্টেরন টেস্টটিই বেশি করিয়ে থাকেন। নিতান্তই প্রয়োজন না হলে টোটাল টেস্টোস্টেরন হরমোন টেস্ট ডাক্তাররা সাধারণত দিয়ে থাকেন না। তাছাড়া ছেলেদের যৌন ক্রিয়ার বেশিরভাগ কার্য সম্পাদনে মুক্ত টেস্টোস্টেরন হরমোনই বেশি ভূমিকা পালন করে।
নিচের ছকে বিভিন্ন বয়সের ছেলে ও মেয়েদের সর্বমোট টেস্টোস্টেরনের স্বাভাবিক মাত্রা উল্লেখ করা হলো:
ছেলে | মেয়ে | ||
বয়স | স্বাভাবিক মাত্রা | বয়স | স্বাভাবিক মাত্রা |
০০-০৫ মাস | 75-400 ng/dl | ০০-০৫ মাস | 20-80 ng/dl |
০৬ মাস-০৯ বছর | <07-20 ng/dl | ০৬ মাস-০৯ বছর | <07-20 ng/dl |
১০-১১ বছর | <07-130 ng/dl | ১০-১১ বছর | <07-44 ng/dl |
১২-১৩ বছর | <07-800 ng/dl | ১২-১৬ বছর | <07-75 ng/dl |
১৪ বছর বয়সে | <07-1200 ng/dl | ১৭-১৮ বছর | 20-75 ng/dl |
১৫-১৬ বছর | 100-1200 ng/dl | ১৯+ বছর | 08-60 ng/dl |
১৭-১৮ বছর | 300-1200 ng/dl |
|
|
১৯+ বছর | 240-950 ng/dl |
|
|
নিচের ছকে বিভিন্ন বয়সের ছেলে ও মেয়েদের মুক্ত অবস্থায় বিদ্যমান টেস্টোস্টেরনের স্বাভাবিক মাত্রা উল্লেখ করা হলো:
ছেলে | মেয়ে | ||
বয়স | স্বাভাবিক মাত্রা | বয়স | স্বাভাবিক মাত্রা |
০১ দিন-১৫ দিন | 0.20-3.10 ng/dL | ০১ দিন-১৫ দিন | 0.06-0.25 ng/dL |
নবজাতক শিশুর জন্ম থেকে ০৮ বছর পর্যন্ত এই মাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকে এবং পুনরায় বাড়তে থাকে। | নবজাতক শিশুর জন্ম থেকে ০৪ বছর পর্যন্ত এই মাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকে এবং পুনরায় বাড়তে থাকে। | ||
০১ বছর-০৮ বছর | 0.04-0.11 ng/dL | ০১ বছর-০৪ বছর | 0.04 ng/dL |
০৯ বছর | 0.04-0.45 ng/dL | ০৫ বছর | 0.04-0.07 ng/dL |
১০ বছর | 0.04-1.26 ng/dL | ০৬ বছর | 0.04-0.14 ng/dL |
১১ বছর | 0.04-5.52 ng/dL | ০৭ বছর | 0.04-0.23 ng/dL |
১২ বছর | 0.04-9.28 ng/dL | ০৮ বছর | 0.04-0.34 ng/dL |
১৩ বছর | 0.04-12.6 ng/dL | ০৯ বছর | 0.04-0.46 ng/dL |
১৪ বছর | 0.48-15.3 ng/dL | ১০ বছর | 0.04-0.59 ng/dL |
১৫ বছর | 1.62-17.7 ng/dL | ১১ বছর | 0.04-0.72 ng/dL |
১৬ বছর | 2.93-19.5 ng/dL | ১২ বছর | 0.04-0.84 ng/dL |
১৭ বছর | 4.28-20.9 ng/dL | ১৩ বছর | 0.04-0.96 ng/dL |
১৮ বছর | 5.40-21.8 ng/dL | ১৪ বছর | 0.04-1.06 ng/dL |
১৯ বছর | 5.36-21.2 ng/dL | ১৫-১৮ বছর | 0.04-1.09 ng/dL |
২০-২৫ বছর | 5.25-20.7 ng/dL | ১৯ বছর | 0.06-1.08 ng/dL |
২৫-৩০ বছর | 5.05-19.8 ng/dL | ২০-২৫ বছর | 0.06-1.08 ng/dL |
৩০-৩৫ বছর | 4.85-19.0 ng/dL | ২৫-৩০ বছর | 0.06-1.06 ng/dL |
৩৫-৪০ বছর | 4.65-18.1 ng/dL | ৩০-৩৫ বছর | 0.06-1.03 ng/dL |
৪০-৪৫ বছর | 4.46-17.1 ng/dL | ৩৫-৪০ বছর | 0.06-1.00 ng/dL |
৪৫-৫০ বছর | 4.26-16.4 ng/dL | ৪০-৪৫ বছর | 0.06-0.98 ng/dL |
৫০-৫৫ বছর | 4.06-15.6 ng/dL | ৪৫-৫০ বছর | 0.06-0.95 ng/dL |
৫৫-৬০ বছর | 3.87-14.7 ng/dL | ৫০-৫৫ বছর | 0.06-0.92 ng/dL |
৬০-৬৫ বছর | 3.67-13.9 ng/dL | ৫৫-৬০ বছর | 0.06-0.90 ng/dL |
৬৫-৭০ বছর | 3.47-13.0 ng/dL | ৬০-৬৫ বছর | 0.06-0.87 ng/dL |
৭০-৭৫ বছর | 3.28-12.2 ng/dL | ৬৫-৭০ বছর | 0.06-0.84 ng/dL |
৭৫-৮০ বছর | 3.08-11.3 ng/dL | ৭০-৭৫ বছর | 0.06-0.82 ng/dL |
৮০-৮৫ বছর | 2.88-10.5 ng/dL | ৭৫-৮০ বছর | 0.06-0.79 ng/dL |
৮৫-৯০ বছর | 2.69-9.61 ng/dL | ৮০-৮৫ বছর | 0.06-0.76 ng/dL |
৯০-৯৫ বছর | 2.49-8.76 ng/dL | ৮৫-৯০ বছর | 0.06-0.73 ng/dL |
৯৫-১০০+ বছর | 2.29-7.91 ng/dL | ৯০-৯৫ বছর | 0.06-0.71 ng/dL |
- |
- |
৯৫-১০০+ বছর | 0.06-0.68 ng/dL |
যৌন শক্তি কমে যাওয়ার কারণ
অস্বাভাবিক হারে টেস্টোস্টোরন হরমোনের ঘাটতিই হলো যৌন শক্তির কমে যাওয়ার প্রধান কারণ। আর যৌন চাহিদার এই গুরুত্বপূর্ণ হরমোনটির ঘাটতি দেখা দিতে পারে নানা কারণে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণ হলো অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। নিচে যৌন শক্তি কমে যাওয়ার কারণগুলো উল্লেখ করা হলো:
- মানসিক চাপ: অত্যধিক মানসিক চাপের ফলে শরীরের চৌন চাহিদার অন্যতম উপাদান টেস্টোস্টেরন হরমোন কমতে থাকে। যার ফলে যৌন শক্তি কমে যাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম অভাব: সঠিক মাত্রার ঘুম সকল প্রাণীর জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সারাদিনের ক্লান্তি শেষে একটি সতেজ ঘুম শরীরে বিদ্যমান বিভিন্ন হরমোন নিঃসরণ করে দেহকে সক্রিয় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর মধ্যে টেস্টোস্টেরণ হরমোণ বৃদ্ধিতে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তিকে প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো মানে এই নয় যে, ২৪ ঘণ্টার যেকোনো সময় ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমালেই হবে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ঘুমালে দেহের বিদ্যমান বিভিন্ন হরমোনের সক্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।
- অস্বাস্থ্যকর খাদ্যভ্যাস: ছয়টি পুষ্টি উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত সুষম খাবারের অভাব এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে দেহের টেস্টোস্টেরণ হরমোন কমতে থাকে এবং দেখা দেয় যৌন অনীহা।
- ডিভাইস আসক্তি: আধুনিক যুগে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের প্রতি মানুষ এতোটাই নির্ভরশীল হয়ে গেছে যে, ডিভাইস ছাড়া এক মুহুর্তও চলা সম্ভব হয়ে উঠে না। বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যারা মাত্রাতিরিক্ত ডিভাইসে আসক্ত তাদের মধ্যে যৌনশক্তি কমে যাওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি। মাত্রাতিরিক্ত ইলেকট্রনিক ডিভাইস আসক্তির ফলে আমাদের দেহে টেস্টোস্টেরন হরমোনের স্বাভাবিক উৎপাদন ব্যঘাত ঘটায়।
- স্বাভাবিক কারণ: সাধারণত ৩০ বছরের পর থেকে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমতে থাকে এবং যৌন চাহিদা কিছুটা কমেত পারে। এটা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু এই মাত্রা যদি অস্বাভাবিক হারে কমতে থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হবে।
- প্লাস্টিক বোতলজাত খাদ্য: পলিকার্বনের মিশ্রণে তৈরি প্লাস্টিক বোতল এক ধরনের এন্টিএন্ড্রোজেনিক। এসব প্লাস্টিক বোতলে এক ধরনের রাসায়নিক যৌগ বিসফেনল এ (বিপিএ) থাকে যা মানবদেহের টেস্টোস্টেরন হরমোন উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটায়। মাত্রাতিরিক্ত প্লাস্টিক পণ্য কিংবা বোতল ব্যবহার করে খাদ্য গ্রহণের ফলে বর্তমানে টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যাওয়ার রোগীর সংখ্যা অকল্পনীয় হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
- ওজন বৃদ্ধি পাওয়া: শরীরে থাকা অতিরিক্ত চর্বিতে এক প্রকার এরোম্যাটেস এনজাইম থাকে যা টেস্টোস্টেরন হরমোনকে ইস্ট্রোজেন হরমোনে রূপান্তর করে। যার ফলে মাত্রাতিরিক্ত ওজন শরীরের টেস্টোস্টেরন মাত্রা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে।
- রিলাক্স কিংবা ঘুমের ওষুধ: মাত্রাতিরিক্ত দুঃশ্চিন্তা থেকে দূরীকরণের জন্য চিকিৎসকরা অনেক সময় রিলাক্স কিংবা ঘুমের ওষুধ দিয়ে থাকে যা পরবর্তীতে অভ্যাসে পরিণত হয়। আর এসকল ওষুধ একটানা দীর্ঘদিন সেবনের ফলে দেহে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং যৌন ক্রিয়ার প্রতি অনীহা সৃষ্টি করে।
কিছু কিছু খাবার যৌন শক্তি বৃদ্ধির প্রধান হরমোন টেস্টোস্টেরনের মাত্রাকে উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে দেয়। তাই যৌন শক্তিকে পুনরুজ্জিবিত করতে কিংবা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে নিম্নলিখিত খাবারগুলো পরিহার করা একান্ত প্রয়োজন:
- বিকৃত কার্বোহাইড্রেট চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার পুরোপুরি পরিহার করতে হবে।
- কোল্ড ড্রিংক বা সফট ড্রিংকস জাতীয় সকল প্রকার কোমল পানীয় সম্পূর্ণরূপে বর্জন করতে হবে।
- সকল প্রকার ফাস্ট ফুড যেমন- পিৎজা, বার্গারসহ তেলে ভাঁজা সকল প্রকার অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করতে হবে।
- অ্যালকোহলের প্রভাবে শরীরে টেস্টোস্টেরণের মাত্রা অস্বাভাবিক হারে কমিয়ে আনে। তাই অ্যালকোহল পানের অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করতে হবে।
- তামাক বা তামাক জাতীয় দ্রব্যের সেবনও যৌন শক্তি কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ।
- ধুমপানও টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির অন্তরায়। বিশেষজ্ঞদের মতে দীর্ঘদিন ধুমপানের ফলে যৌন ক্রিয়ায় অনীহার সৃষ্টি করে।
যৌন হরমোন কমে যাওয়ার লক্ষণ
যৌন হরমোন বা টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যাওয়ার প্রধান প্রধান লক্ষণগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো:
- মাত্রাতিরিক্ত শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেওয়া।
- শারীরিক অবসাদ লাগা কিংবা শরীর ঝিমঝিম ভাব অনুভূত হওয়া।
- সবসময় মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকা কিংবা তুচ্ছ বিষয় নিয়ে উত্তেজিত হয়ে যাওয়া।
- পুরুষের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের বিপরীতে সামান্য পরিমাণে ইস্ট্রোজেন হরমোনও থাকে। টেস্টোস্টেরন হরমোন কমতে শুরু করলে আনুপাতিক হারে ইস্ট্রোজেন হরমোন বাড়তে থাকে যার ফলে ছেলেদের স্তন কিছুটা বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়।
- বীর্য উৎপাদন কমে যাওয়া কিংবা বীর্য পানির মত পাতলা হওয়াও যৌন হরমোন কমে যাওয়ার লক্ষণ।
- ছেলেদের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে গেলে অন্ডকোষের আকৃতি অস্বাভাবিকভাবে ছোট হয়ে যাবে।
- দীর্ঘদিন দেহে টেস্টোস্টেরন হরমোনের ঘাটতি থাকলে ছেলেদের কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হয়ে কিছুটা মেয়েলি কণ্ঠ মনে হবে।
- কখনও কখনও চুল পড়াও টেস্টোস্টেরন হরমোন কমে যাওয়ার একটি লক্ষণ হতে পারে। তবে চুল পড়ে গেলেই যে টেস্টোস্টেরণ হরমোন কমে যাচ্ছে শুধুমাত্র এমনটি ভাবার সুযোগ নেই। কারণ আরও নানাবিদ কারণেও চুল পড়তে পারে।
টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায়
টেস্টোস্টেরন হরমোনের বৃদ্ধের ঘরোয়া উপায়ের অন্যতম নিয়ামক হচ্ছে শারীরিক যত্ন ও মানসিক প্রশান্তি। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে অবশ্যই নিম্নোক্ত নিয়ামকগুলোর সঠিক অনুসরণ ও অনুশীলন একান্ত প্রয়োজন।
- প্রকৃতি নির্ভর স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করা।
- প্রকৃতি প্রদত্ত বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদ টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায়ের অন্যতম হাতিয়ার।
- সঠিক পন্থায় নিয়মিত এবং সুনির্দিষ্ট ব্যায়াম টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধিতে অন্যতম সহায়ক।
- সুশৃঙ্খখল ও নিয়মত্রান্তিক জীবনযাপনও হতে পারে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায়।
- প্রত্যহ নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ সতেজ ঘুম নিশ্চিত করা।
এছাড়াও নিম্নোবর্ণিত যৌন শক্তি বৃদ্ধির খাবার ও যৌন শক্তি বৃদ্ধির ভেষজ উদ্ভিদ-এর সঠিক ব্যবহারই হচ্ছে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায়।
যৌন শক্তি বৃদ্ধির খাবার কি কি
টেস্টোস্টেরন উৎপাদন বা যৌন শক্তি বৃদ্ধির জন্য খাদ্যে বিদ্যমান পুষ্টিগুণের তিনটি উপাদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেগুলো হলো:
- জিংক সমৃদ্ধ খাবার: প্রথম শ্রেণীর প্রোটিন যেমন- সামুদ্রিক মাছ, মাংস, রঙিন শাক-সবজি, ডাল, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য, ডিম, শিম, মাশরুম এবং কলা হচ্ছে জিংকের অন্যতম উৎস। এছাড়াও রসুন, আদা, লবঙ্গ, দারুচিনি, বিভিন্ন প্রকার বাদাম কিংবা বিচি জাতীয় খাদ্য থেকে জিংক পাওয়া যায়।
- ভিটামিন ডি: টেস্টোস্টেরন উৎপাদনে ভিটামিন ডি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন ডি এর অন্যতম উৎস হচ্ছে সূর্যের আলো। তাই প্রতিদিন ১৫-২০ মিনিট সূর্যের আলো গায়ে লাগালে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ হবে এবং টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।
- ফ্যাট: বিভিন্ন ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার যেমন- মাছ ও মাছের তেল, মাংস, ঘি, পনির, বিভিন্ন ধরনের বাদাম, নারকেল, বিভিন্ন ধরনের তৈলবীজ যেমন- তিল, সরষে, জলপাই ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে উপকারী ফ্যাট বিদ্যমান যা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বৃদ্ধিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এছাড়াও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পুরুষের টেস্টোস্টেরন হরমোন মাত্রা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিম্নোলিখিত খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান যা যৌন শক্তি বৃদ্ধির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- মধু: মধুকে বলা হয় সকল রোগের নিয়ামক। প্রতিদিন সকালে এক চামচ মধু যৌন শক্তি বৃদ্ধির জন্য খুবই সহায়ক। এছাড়াও মধুর সাথে সামান্য পরিমাণে আধা কুচি ও কালোজিরার তেল মিশিয়ে খেলে টেস্টোস্টেরন হরমোন খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাবে এবং যৌন শক্তি পুনরুজ্জিবিত হবে।
- বাধাকপি: বাধাকপিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল থাকে যা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
- কলা: পুষ্টিবিদরা কলাকে সুপারফুড হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কলাতে থাকা প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ভিটামিন বি কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপদান শরীরে যৌনরস উৎপাদন এবং টেস্টোস্টেরন মাত্রা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- খেজুর: খেজুর হচ্ছে দ্রুত বলবর্ধক একটি শুষ্ক ফল। খেজুরে থাকা প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধিতে খুবই সহায়ক। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা ২-১ টি খেজুর রাখা খুবই জরুরী।
- ডিম: প্রোটিনের অন্যতম উৎস ডিম। প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ কিংবা নারী প্রত্যেকের উচিত প্রতিদিন কমপক্ষে ১টি করে ডিম খাওয়া। ডিমে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বৃদ্ধিতে চমকপ্রদ টনিক হিসেবে কাজ করে।
- কাঁচা রসুন: প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মাঝারি সাইজের ২-৩ কোয়া রসুন খেলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে। আর রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পেলে স্বাভাবিকভাবেই টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রাও বৃদ্ধি পাবে। কাঁচা রসুনের সাথে সামান্য পরিমাণে মধু মিশিয়ে নিলে এর কার্যকারিতা বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও হৃদরোগসহ নানা রোগের জন্য কাঁচা রসুন খুবই উপকারী।
- দই: যারা দুধ খেলে গ্যাস হওয়া কিংবা পেট ফেপেঁ ওঠা ইত্যাদি সমস্যায় ভুগেন তারা দুধের বিকল্প হিসেবে দই গ্রহণ করতে পারেন। কারণ দইয়ে বিদ্যমান বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যৌন শক্তির অন্যতম উপাদান টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
- সাইট্রাস (টকজাতীয়) ফল: টকজাতীয় ফলে বিদ্যমান ভিটামিন সি এবং ম্যাগনেশিয়াম দেহের স্ট্রেস কমিয়ে আনে। আর স্ট্রেস যত কমতে থাকবে আনুপাতিক হারে টেস্টোস্টেরন হরমোন ততটাই বৃদ্ধি পাবে।
- সামুদ্রিক মাছ: সুস্থ যৌন জীবনের জন্য সামুদ্রিক মাছ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামুদ্রিক মাছে বিদ্যমান ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড দেহের ডুপামিন হরমোন বৃদ্ধি করে যা যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে খুবই সহায়ক।
- লাইকোপেন সমৃদ্ধ ফল: বিভিন্ন ধরনের রঙিন ফল যেমন- তরমুজ, আনার, টমেটো ইত্যাদি ফল হলো লাইকোপেন সমৃদ্ধ ফল যা টেস্টোস্টেরণ হরমোন বৃদ্ধিতে খুবই সহায়ক।
- রঙিন শাক-সবজি: বিভিন্ন ধরনের রঙিন সবজি যেমন- লালশাক, গাজর, ক্যাপসিকাম, বিটরুটসহ নানারকম রঙিন শাক-সবজি নিয়মিত গ্রহণ করলে টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধি পাবে।
- বিচি জাতীয় খাবার: সকল প্রকার বিচি জাতীয় খাবার যেমন- বিভিন্ন বাদাম, কুমড়োর বিচি, শিমের বিচি, সূর্যমুখীর বিচি, চিয়াসিড ইত্যাদি।
যৌবন শক্তি বৃদ্ধির গাছ / যৌন শক্তি বৃদ্ধির ভেষজ উদ্ভিদ
- অশ্বগন্ধা: অশ্বগন্ধা হাজার বছর ধরে ব্যবহৃত একটি ভেষজ উদ্ভিদ। এটি খাওয়ার উত্তম পদ্ধতি হলো উক্ত গাছের ডাল শুকিয়ে পাউডার করে খাওয়া। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস দুধের সাথে এক চামচ অশ্বগন্ধা পাউডার মিশিয়ে নিয়মিত পান করলে শরীরের টেস্টোস্টেরন মাত্রা যেমন স্বাভাবিক রাখবে তেমনি শুক্রানুর উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে। এর সঠিক ফলাফল উপলব্ধি করতে কমপক্ষে ছয় সপ্তাহ টানা সেবন করতে হবে।
- শিমুল গাছ: শিমুল গাছের মূলই ভেষজ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। শুধুমাত্র মূলের চাহিদার দিকে বিবেচনা করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিমুল চাষ করা হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়, শুক্রানুর ঘনত্ববৃদ্ধি, যৌন হরমোন বৃদ্ধিসহ নানা ঔষধি গুণে ভরপুর এই শিমুল মূল।
- শতমূলী: শতমূলী উদ্ভিদের মূল চূর্ণ করে পাউডার ফর্মূলায় খেতে হয়। প্রতিদিন সকালে কুসুম গরম পানির সাথে এক চামচ শতমূলী পাউডার সেবন করলে যৌন দূর্বলতা দূর হবে এবং বৃদ্ধিপাবে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা।
- গোক্ষুর কাঁটা: গোক্ষুর কাঁটা এক ধরনের বর্ষজীবী উদ্ভিদ। এই গাছের কাঁটাই মূলত ভেষজ হিসেবে কাজ করে যা যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে খুবই সহায়ক। গোক্ষুর কাঁটা দুই ভাবে খাওয়া যায়। ১/২টি কাঁটা রাতে পানিতে ভিজিয়ে সকালে খালি পেটে ভিজানো পানি খেতে হবে। অথবা এই গাছের কাঁটাগুলো চূর্ণ করে পাউডার ফর্মূলায় ২/৩ গ্রাম পরিমাণে প্রতিদিন ২ বার সেবন করতে হবে।
- হাতিশুর গাছ: হাতিশুঁর এক প্রকার বর্ষজীবী ভেষজ উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Heliotropium indicum।হাতিশুঁর গাছের মূল প্রাকৃতিক উপায়ে দ্রুত যৌনশক্তি বৃদ্ধিতে খুবই কার্যকরী। এই গাছের প্রধান মূল এক ইঞ্চি পরিমাণে নিয়ে ভালোভাবে পরিস্কার করে কাঁচা পানের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে সাথে সাথে উপকার পাওয়া যায়। যেহেতু এর কার্যকারিতা খুবই প্রখর তাই সপ্তাহে দু’বারের বেশি এই ভেষজটি খাওয়া উচিত হবে না।
- শিলাজিৎ: শিলাজিৎ হলো এক প্রকার খনিজ পদার্থ যা ভারতীয় উপমহাদেশের হিমালয় এবং হিন্দুকুশ পর্বতমালায় পাওয়া যায়। এটি ঠান্ডা অবস্থায় অনেক শক্ত থাকে। এটি খাওয়ার নিয়ম হলো একটি মটরদানা সমান শিলাজিৎ নিয়ে কুসুম গরম পানি কিংবা দুধে মিশিয়ে প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে খেতে হবে। এতে থাকা এন্টিভাইরাস এবং এন্টি ইনফ্লামেটরী যা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করে।
লেখকের মন্তব্য
টেস্টোস্টেরন হরমোন বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায় হিসেবে উল্লেখিত উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো অসংখ্য বিশেষজ্ঞ কর্তৃক স্বীকৃত এবং নিঃসন্দেহে বিজ্ঞানসম্মত ও প্রাকৃতিক। টেস্টোস্টেরনের স্বাভাবিক মাত্রায় তারতম্য ঘটলে টানা এক মাস উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো নিয়মিত অনুসরন করলে আপনি নিজেই এর সুফল উপলব্ধি করতে পারবেন। তবুও সমস্যার তীব্রতার উপর ভিত্তি করে যেকোনো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া উত্তম।
আমার বিশ্বাস বিশেষজ্ঞরাও বিভিন্ন ওষুধের পাশাপাশি তাদের চিকিৎসাপত্রে উপরোক্ত আলোচনাগুলোকে উপদেশ হিসেবে সাজেস্ট করবেন। উপরোক্ত আলোচনায় উল্লেখিত তথ্যগুলো নির্ভরযোগ্য তথ্য হতে সংগ্রহ ও সংকলন করে পাঠকদের নিকট উপস্থাপন করা হয়েছে। তবুও এতে কোনো প্রকার সংশোধন, সংযোজন ও পরিমার্জনের প্রয়োজনীয়তা সাপেক্ষে কমেন্টবক্সে আপনার সুচিন্তিত মতামত সাদরে গ্রহণযোগ্য।
আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হলে আপনার প্রিয়জন, পরিজন এবং ভুক্তভোগী বন্ধুমহলে শেয়ার করার জন্য অনুরোধ রইলো। সেই সাথে যেকোনা সময় আর্টিকেলটি পুনরায় খুঁজে পাওয়ার সুবিধার্থে আপনার ডিভাইসের ব্রাউজারে আমাদের ওয়েবসাইটের লিংক কিংবা আর্টিকেলটির লিংক বুকমার্ক করে রাখতে পারেন।
আপনার সুচিন্তিত মতামত দিয়ে MrDorpon কে আরও সমৃদ্ধ করতে সহযোগিতা করুন। আপনার মতামতটি রিভিউর পর Published করা হবে।
comment url