উলটকম্বল খেলে কি হয় এবং ভেষজ এই উদ্ভিদটি খাওয়ার নিয়ম
উলটকম্বল খেলে কি হয়, কিভাবে উলটকম্বল খেতে হয়, এর উপকারিতা কি কিংবা এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কিনা এ বিষয়ে প্রায়শই নানারকম আলোচনা বা সমালোচনা শুনা যায়। যেহেতু ভেষজ এই উদ্ভিদটির প্রায় প্রতিটি অংশই ব্যবহারযোগ্য সেহেতু ব্যবহার বা সেবনের পূর্বে উলটকম্বল খাওয়ার নিয়ম জেনে নেওয়া খুবই জরুরী।
ভেষজ এই উদ্ভিদের প্রায় প্রতিটি অংশ কোনো না কোনো রোগের জন্য নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে সর্বপ্রথম প্রাকৃতিক উপায়কে যারা প্রাধান্য দিয়ে থাকেন তাদের কাছে উলটকম্বল গাছের প্রতিটি অংশ সমহারে সমাদৃত।
ভূমিকা
উলটকম্বল মখমলের মত নরম শাখা-প্রশাখযুক্ত গুল্ম বৃক্ষ জাতীয় ভেষজ উদ্ভিদ। প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন রোগের জন্য আয়ুর্বেদীয় চিকিৎসায় ভেষজ এই উদ্ভিদটির ব্যবহার বহুল প্রচলিত। বর্তমান তরুন প্রজন্ম গাছটির ঔষধিগুণ সম্পর্কে এখনও পুরাপুরি জ্ঞাত নয়। তারা জানে না উলটকম্বল খেলে কি হয়, এর উপকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
তরুণ প্রজন্মের একটা বিশাল অংশ উলটকম্বল খাওয়ার নিয়ম, গাছটির কোন অংশ কিভাবে খেতে হয় এবং কোন সমস্যার জন্য গাছটির কোন অংশ খেতে হয় ইত্যাদি বিষয়েও তারা সম্পূর্ণরূপে অজ্ঞ। এরই প্রেক্ষিতে, স্বাস্থ্যসচেতন অথচ বহু ঔষুধিগুণে ভরপুর উলটকম্বল সম্পর্কে যারা জানে না তাদের জন্যই এই আর্টিকেলটি রচিত।
উলটকম্বল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম
উলটকম্বল গাছের ইংরেজি নাম ডেভিল’স কটন (Devil’s Cotton)। আমাদের দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে একে ভূতুম গাছ হিসেবেও চিনে। এটি Sterculiaceae গোত্রের মালভেসি পরিবারের গুল্ম জাতীয় একটি উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Abroma augustam তবে কোথাও কোথাও এর বৈজ্ঞনিক নাম হিসেবে Abroma augusta নামটিও ব্যবহৃত হতে দেখা যায়।
উলটকম্বল গাছ চেনার উপায়
প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠা ২-৩ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট এই ভেষজ গাছটি গুল্ম জাতীয় চিরহরিৎ উদ্ভিদ। নিচে উলটকম্বল গাছ চেনার উপায় কিংবা উদ্ভিদটির বিভিন্ন অংশের আকার ও আকৃতি নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো:
- গাছের উচ্চতা: গাছটির উচ্চতা সাধারণত ২-৩ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ক্ষেত্রেবিশেষে বয়স ও পরিপক্কতার উপর নির্ভর করে এর পরিমাণ কমবেশিও হতে পারে।
- পাতা দেখে চেনার উপায়: উলটকম্বলের উপরের কচি পাতা মসৃণ চামড়াযুক্ত ক্ষুদ্র, সরু ও অখন্ড অবস্থায় থাকে। গাছটির মাঝের অংশের পাতা সাধারণত ডিম্বাকৃতির হয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অখন্ড থাকে। তবে নিচের দিকের পাতার অগ্রভাগ একাধিক খন্ডে বিভক্ত হয়ে যায়। নিচের পাতাগুলো সাধারণত টমেন্টোজ প্রকৃতির হয় অর্থাৎ পাতাগুলো ছোট ছোট লোম দ্বারা আচ্ছাদৃত থাকে।
- ডগা দেখে চেনার উপায়: উলটকম্বল গাছের ডগা সাধারণত ১-১.৫ ফিট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট হয়ে থাকে। প্রতিটি ডগার অগ্রভাগে একটি মাত্র পাতা থাকে। উলটকম্বলের কচি ডগা কিছুটা টমেন্টোজ প্রকৃতির হয়।
- ফুল দেখে চেনার উপায়: ফুল গাঢ় লাল বা কালচে লাল রঙের হয়ে থাকে। ফুলের বৃতি বল্লমাকার, গোড়ার দিকে মুক্ত এবং স্থায়ী।
- ফল দেখে চেনার উপায়: কাঁচা অবস্থায় উলটকম্বল ফল সবুজ দেখালেও অর্ধপাকা অবস্থায় কিছুটা বাদামী এবং পুরোপুরি পাকা ফল কালচে রং ধারণ করে। পাকা ফলের বীজ তুলার মত পশম দ্বারা আবৃত থাকে।
উলটকম্বল গাছের ছবি
ভেষজ এই উদ্ভিদটি যত্রতত্র জন্মে বলে কমবেশি সবাই এই গাছটি দেখেছে বলে আমার বিশ্বাস কিন্তু গাছটি যে উলটকম্বল সেটা হয়তো অনেকেরই অজানা। তাই গাছটি চেনার সুবিধার্থে নিচে কয়েকটি উলটকম্বল গাছের ছবি সংযোজন করা হলো:
উলটকম্বল গাছ, ফুল ও ফল |
উলটকম্বল খেলে কি হয়
উলটকম্বল বেশ কিছু রোগ প্রতিরোধে প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করলেও এর কিছু সীমাব্ধতার কারণে বহু ঔষুধিগুণে সমৃদ্ধ থাকা সত্ত্বেও অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, উলটকম্বল খেলে কি হয়? এমন প্রশ্নের জবাব খুঁজতে এবং এর কার্যকারিতা কিংবা উপকারিতা বা অপকারিতা জানতে অবশ্যই গাছটির কোন অংশে কোন রাসায়নিক উপাদান বিদ্যমান সে সম্পর্কে জানা আবশ্যক।
উলটকম্বলের পাতায় রয়েছে টারাজেরল এবং বিটা-সিটোস্টেরল। এর কান্ডের বাকলে থাকে ফ্রিয়েডেলিন এবং বিটা-সিটোস্টেরল। মূল ও মূলের বাকলে রয়েছে গাম, অ-উদ্বায়ী তেল, রজন, উপক্ষার, অ্যাব্রোমিন, কোলাইন ও বিটেইন, বিটা-সিটোস্টেরল, স্টিগমাস্টেরল, ডিজিটোনাইড এবং হাইড্রোঅক্সি অ্যাসিডের ম্যাগনেসিয়াম লবণ।এছাড়াও এর বীজে আছে ৭১.৫% লাইনোলেয়িক অ্যাসিডসহ এক প্রকার অ-উদ্বায়ী তেল।
উলটকম্বল খেলে কি হয় এমন প্রশ্নের জবাব গাছটির উপকারিতা এবং অপকারিতা কিংবা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে নিহিত। নিচে উলটককম্বল গাছের উপকারিতা বা উলটকম্বল গাছের ডাটার উপকারিতা এবং অপকারিতা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া উপস্থাপন করা হলো:
উলটকম্বল গাছের ডাটার উপকারিতা / উলটকম্বল গাছের উপকারিতা
বহু ঔষুধিগুণে ভরপুর উলটকম্বল গাছের উপকারিতার কোনো অন্ত নেই। তবে স্ত্রীরোগ নিরাময়ে এর অনন্য অবদানের জন্য অনেকে গাছটিকে প্রাকৃতিক গাইনী ডাক্তার হিসেবে আখ্যায়িত করেন। নিচে গাছটির উপকারিতা সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো:
- গাছটির পাতা, ডাল ও মূলের বাকল প্রক্রিয়াজাত করে বিভিন্ন অ্যালোপ্যাথিক ঔষধের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- উলটকম্বলের পাতা ও কাণ্ড কোমলকারক।
- উলটকম্বল মূল ও মূলের বাকল মেয়েদের ঋতুস্রাব উন্নতিকারী, গর্ভাশয় উদ্দীপক এবং ঋতুস্রাবকালীন বেদনানাশক হিসেবে কাজ করে।
- উলটকম্বল গাছের ডাল ও মূলের নির্যাস দীর্ঘমেয়াদি আমাশয় নিরাময়ে বেশ ফলপ্রসূ।
- পাতা ও ডাটার নির্যায়স ঋতুস্রাব নিয়মিত করে এবং ঋতুস্রাবের ব্যথা নিরাময়ে চমৎকার কাজ করে।
- যৌন সংক্রমিত রোগ গনোরিয়া নিরাময়ে উলটকম্বলের পাতা ও ডাটার ব্যবহার খুবই প্রচলিত ও জনপ্রিয়।
- কোষ্ঠকাঠিন্যসহ অন্ত্রের নানা গোলযোগে উলটকম্বলের ডাটার নির্যাস খুবই উপকারী।
- উলটকম্বল গাছের পাতার নির্যাস বিভিন্ন চর্মরোগের জন্য বহুকাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এছাড়াও গাছটির পাতার নির্যাস দেহের ক্ষত শুকাতে খুবই কার্যকরী।
- এক গ্লাস দুধের সাথে একচামচ উলটকম্বল বীজের পাউডার ও মধু মিশিয়ে নিয়মিত খেলে ছেলেদের টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
- উলটকম্বলের ডাটা, বাকল ও মূলের নির্যাস ছেলেদের শুক্রানু বৃদ্ধিতি খুবই উপকারী।
- গাছটির বাকল থেকে নিঃসৃত নির্যাস দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বিশেষ করে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়াল রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে উক্ত নির্যায় খুবই কার্যকরী।
- উক্ত গাছের মুলের বাকল থেকে নিঃসৃত নির্যাস মেয়েদের ঋতুস্রাব বন্ধজনিত সমস্যা, ঋতুস্রাবকালীন ব্যাথা এবং ঋতুস্রাবজনিত নানা সমস্যা সমাধানে এর ব্যবহার খুবই চমকপ্রদ ও পরীক্ষিত।
- পস্রাবের জ্বালাপোড়াসহ মূত্রনালীতে নানাবিদ রোগ নিরাময়ে উলটকম্বল গাছের ডগার নির্যাস খুবই উপকারী।
- এছাড়াও শরীরের জীর্ণতার অবসান, মানসিক অবসাদ দূরীকরণ, ক্লান্তি দূরীকরণ এবং তাৎক্ষণিক শক্তি বর্ধকসহ নানা ঔষধিগুণে ভরপুর প্রকৃতি প্রদত্ত এই গাছ।
- গবাদিপশুর পাতলা পায়খানা নিরাময়, জরায়ুর রক্তক্ষরণ এবং পশুর প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ হাঁস-মুরগির বিভিন্ন চিকিৎসাতেও চমকপ্রদ এই উদ্ভিদটির ব্যবহার বহুল প্রচলিত।
উলটকম্বলের ডাটার অপকারিতা / উলটকম্বল গাছের অপকারিতা
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে গৃহীত প্রতিটি খাবারেই কোনো না কোনা পার্শ্বপ্রকিত্রিয়া রয়েছে। প্রচুর ঔষধিগুণে ভরপুর ভেষজ এই উদ্ভিদটির উপকারিতার তুলনায় অপকারিতা খুবই নগণ্য। প্রকৃতপক্ষে এর কোনো অপকারিতা নাই বললেই চলে। অপকারিতার মোড়কে এর মাঝে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিদ্যমান যা অনেকেরে নিকট অপকারিতা হিসেবে বিবেচিত। হাজারো উপকারিতার ভীড়ে অপকারিতা বলতে শুধুমাত্র উলটকম্বল খাওয়ার পর অনেকের মধ্যে এলার্জিজনিত সমস্যা বৃদ্ধির তথ্য পাওয়া গেছে।
যারা রীতিমতে এলার্জির সমস্যা ভুগছেন তাদের মধ্যে উলটকম্বল খাওয়ার পর যদি এলার্জির সমস্যা বৃদ্ধি পায় তাহলে উল্লেখিত ভেষজটি আপনার জন্য উপযোগী নয়। এছাড়াও গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে উলটকম্বলসহ যেকোনো অজানা ভেষজ ঔষধ সেবনের পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এর বাহিরে উলটকম্বলের অপকারিতা কিংবা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিষয়ক কোনো তথ্য কোথাও পাওয়া যায়নি।
উলটকম্বল খাওয়ার নিয়ম
উলটকম্বল গাছের প্রায় প্রতিটি অংশেই ঔষধিগুণ বিদ্যমান এবং এর বিভিন্ন অংশ খাওয়ার নিয়ম ভিন্ন ভিন্ন। নিচে উলটকম্বল খাওয়ার নিয়ম সংক্ষেপে উপস্থাপন করা হলো:
- উলটকম্বল গাছের ডাটা খাওয়ার নিয়ম: উলটকম্বল গাছের ডগা বা ডাটাই সবচেয়ে বেশি এবং খুব সহজে ব্যবহারযোগ্য। উলটকম্বলের ১-১.৫ ফিট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট একটি ডগা বা ডাটা প্রতিদিন রাতে ছোট ছোট টুকরা করে কেঁটে এক গ্লাস পরিমাণ পানিতে ভিজেয়ে রেখে সকালে খালিপেটে খেতে হয়। মেয়েদের স্বল্পস্রাব উপশমে উক্ত ডগার নির্যাস প্রত্যহ খালিপেটে খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।
- উলটকম্বল গাছের বাকল খাওয়ার নিয়ম: উলটকম্বল গাছ বা কান্ডের বাকল গাছে থেকে ছাড়িয়ে ছোট ছোট টুকরা করে পানিতে ভিজেয়ে রাখার পর বেশকিছুক্ষণ পর বাকলগুলো ছেঁকে ফেলে দিয়ে পানিটুকু খাওয়ার উপযোগী হয়। এছাড়াও উক্ত বাকল রোদে শুকিয়ে চূর্ণ করে হাইজেনিক জ্বারে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। সংরক্ষিত উলটকম্বলচূর্ণ প্রতিদিন সকালে খালিপেটে এক গ্লাস পানির সাথে এক চামচ পাউডার মিশিয়ে খেতে হয়। সহবাসের ব্যথা উপশমে উক্ত গাছের বাকল বেটে ১০ গ্রাম পানির সাথে মিশিয়ে দিনে ২বার খেলে ব্যাথা নিরাময় হয়।
- উলটকম্বল গাছের মূল খাওয়ার নিয়ম: উলটকম্বল গাছের মূল ভালোভাবে পরিস্কার করে পাটায় কিংবা অন্য কোনো উপকরণের সাহায্যে পিসে এর মধ্যে নিহিত নির্যাস বের করে তা খাওয়ার উপযোগী হয়। উক্ত নির্যাস খাওয়ার আগে অবশ্যই ছেঁকে নেওয়া উত্তম। এছাড়াও উক্ত মূলের বাকল চূর্ণ করে পাউডার ফর্মূলায় খাওয়া যায়। অনিয়মিত ঋতুস্রাব উপসমে ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার ৪-৫ দিন পূর্ব থেকে প্রত্যহ একবার করে ১-৩ গ্রাম উলটকম্বলমূলের চূর্নের সাথে ২০০-৩০০ মিলিগ্রাম গুঁড়া গোলমরিচ মিশিয়ে সেবন করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
- অনুরূপভাবে ঋতুস্রাবের ব্যাথা নিরাময়ের জন্যও উক্ত মিশ্রণটি খুবই উপকারী। ব্যাথা নিরাময়ের ক্ষেত্রে যেদিন ব্যাথা থাকবে শুধুমাত্র সেদিনই ০১ বার খেতে হবে। উক্ত চূর্ণ শ্বেতস্রাব নিরাময়ে খুবই কার্যকরী। এক্ষেত্রে প্রতিদিন ২ বার (সকাল ও সন্ধ্যা) খালিপেটে ৩ গ্রাম চূর্ণ পানির সাথে মিশিয়ে খেতে হবে।
- উলটকম্বল গাছের পাতার ব্যবহার: সামান্য পানির সাথে উলটকম্বলের পাতা কচলানোর ফলে নিঃসৃত নির্যাস ব্যবহার উপযোগী হয়। অধিক ঋতুস্রাব নিরাময়ের জন্য উক্ত নির্যাস প্রত্যহ ৫ মিলি করে দিনে ২ বার পান করতে হবে।
- উলটকম্বল ফলের বীজের ব্যবহার: উলটকম্বল ফলের বীজ চূর্ণ করে পাউডার রূপে খাওয়ার উপযোগী করা হয়। অনেকের মতে, উক্ত ফলের বীজ ট্যাবলেটের ন্যায় পানি দিয়ে আস্ত গিলেও খাওয়া যায়।
- অনেকে উলটকম্বলের নির্যাসের সাথে চিনি মিশিয়ে পান করেন যা এর ঔষধি গুণকে ক্ষুন্ন করে। এজন্য উক্ত ভেষজটির সঠিক গুণাগুণ নিশ্চিত করতে এর সাথে অতিরিক্ত কোনো প্রকার চিনি বা মিষ্টিজাতীয় দ্রব্য না মেশনোই উত্তম। তবে এক্ষেত্রে প্রাকৃতিক খাঁটি মধু ব্যবহার করা যেতে পারে।
উলটকম্বল গাছ কোথায় পাওয়া যায়
উলটকম্বল গাছ বসতবাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তার পাশে কিংবা পরিত্যক্ত জায়গায় বিশেষ করে পাহাড়ি অঞ্চলে বেশি জন্মে। একটা সময় এই উদ্ভিদটি শুধুমাত্র প্রাকৃতিকভাবে জন্মালেও বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অন্যান্য ঔষধি গাছের ন্যায় উলটকম্বলের চাষ প্রতিনিয়ত উর্ধ্বমুখী। ভেষজ উদ্ভিদ চাষের জন্য বিখ্যাত নাটোরে ব্যাপক হারে উলটকম্বলের চাষ হচ্ছে।
এছাড়াও এর ঔষুধিগুণ ও চাহিদার কথা বিবেচনা করে আমাদের আশেপাশে অবস্থিত প্রায় প্রতিটি নার্সারিতেই এখন উলটকম্বলের চারা পাওয়া যায়। সাধারণত সবরকমের উর্বর মাটিতেই এই উদ্ভিদটি জন্মায়। তবে দোঁ-অশা মাটিতে এবং ছায়াযুক্ত স্থানে এর ফলন বেশি পরিলক্ষিত হয়।
লেখকের মন্তব্য
প্রাকৃতিকভাবেই জন্মানো এবং কোনো প্রকার পরিচর্যা ছাড়াই বেড়ে উঠা এই ঔষধি গাছটির অনন্য উপকারিতা ভোগ করতে আপনি চাইলে গাছটিকে আপনার ছাদবাগানের সদস্য করতে পারেন। গাছটির দৃষ্টিনন্দন ফুল এবং ফল যেমন আপনার ছাদবাগানের শোভা বর্ধন করবে তেমনি উপরে আলোচিত বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে গাছটি আপনার নিত্যদিনের সঙ্গী হবে। প্রয়োজনের সময় এদিক-সেদিক না খুঁজে খুব সহজেই গাছটির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারবেন।
“উলটকম্বল খেলে কি হয় এবং ভেষজ এই উদ্ভিদটি খাওয়ার নিয়ম” শীর্ষক এই আর্টিকেলটিতে শিরোনামের পাশাপাশি উক্ত ভেষজ উদ্ভিদটির বিভিন্ন গুণাগুণ এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসহ এর ব্যবহারবিধি নিয়ে আলোচিত হয়েছে। বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র থেকে সংকলিত এই আর্টিকেলে কোনো প্রকার ভুল-ত্রুটি কিংবা কোনো তথ্য সংযোজন বা বিয়োজনের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হলে কমেন্টবক্সে আপনার সুচিন্তিত মতামত পেশ করতে পারেন।
আর্টিকেলটি পড়ে এবং বাস্তবে প্রয়োগ করে যদি এর উপকারিত আপনার নিকট গ্রহণযোগ্য মনে হয় তাহলে আর্টিকেলটি আপনার প্রিয়জন, পরিজন ও সর্বোপরি উপরোক্ত রোগে ভুক্তভোগীদের নিকট শেয়ার করার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করছি। সেই সাথে আমাদের আর্টিকেলগুলো খুব সহজেই খুঁজে পেতে আপনার ডিভাইসের ব্রাউজারে আমাদের ওয়েবসাইট বুকমার্ক করে রাখতে পারেন।
তথ্যসূত্র: গ্রন্থসমূহ: প্রফেসর ড. নিশীথ কুমার পাল রচিত ভেষজ উদ্ভিদের কথা, আধুনিক আয়ুর্বেদীয় চিকিৎসা ও ভেষজ উদ্ভিদ, ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ রচিত গাছগাছড়ায় রোগ মুক্তি।ওয়েবসাইটসমূহ: উকিপিডিয়া, uncommonseedbd.com। |
আপনার সুচিন্তিত মতামত দিয়ে MrDorpon কে আরও সমৃদ্ধ করতে সহযোগিতা করুন। আপনার মতামতটি রিভিউর পর Published করা হবে।
comment url